পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহৰ্ষির আদ্যকৃত্য উপলক্ষ্যে প্রার্থনা } } আছে! বাহিরের বিপদের অপেক্ষা নিজের অপরিণত চারিত্ৰবল ও অসংযত প্ৰবৃত্তি তাহদের পক্ষে গুরুতর শত্রু। এই সময়ে এই অবস্থায় যে ধনপতির পুত্র নিজের চিরাভ্যাসকে খর্ব করিয়া, ধনিসমাজের প্রভূত প্রতিপত্তিকে তুচ্ছ করিয়া শান্তসংযত শৌর্য্যের সহিত এই সুবৃহৎ পরিবারকে স্কন্ধে লইয়া দুঃসহ দুঃসময়ের বিরুদ্ধে যাত্ৰা করিয়াছেন ও জয়ী হইয়াছেন, তাহার সেই অসামান্য বীৰ্য্য, সেই সংযম, সেই দৃঢ়চিত্ততা, সেই প্ৰতিমুহূৰ্ত্তের ত্যাগাস্বীকার আমরা মনের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধিই বা করিব কী করিয়া এবং তদনুরূপ কৃতজ্ঞতাই বা কেমন করিয়া অনুভব করিব ! আমাদের অদ্যকার সমস্ত অন্ন-বস্ত্ৰ-আশ্রয়ের পশ্চাতে র্তাহার সেই বিপত্তিতে আকম্পিত বলিষ্ঠ দক্ষিণহস্ত ও সেই হস্তের মঙ্গল আশিসস্পর্শ আমরা যেন নিয়ত নম্রভাবে অনুভব করি। আমাদের সর্বপ্রকার অভাবমোচনের পক্ষে প্রচুর এই যে সম্পত্তি তিনি সম্পূর্ণ নিজের বলে রক্ষা করিয়াছেন, ইহা যদি অধৰ্ম্মের সহায়তায় ঘটিত, তবে অদ্য অন্তৰ্যামীর সম্মুখে সেই পিতার নিকটে শ্রদ্ধানিবেদন করিতে আমাদিগকে কুষ্ঠিত হইতে হইত। সর্বাগ্রে তিনি ধৰ্ম্মকে রক্ষা করিয়া পরে তিনি ধনরক্ষা করিয়াছেন—অদ্য আমরা যাহা লাভ করিয়াছি, তাহার সহিত তিনি অসত্যের গ্লানি মিশ্রিত করিয়া দেন নাই— আজ আমরা যাহ। ভোগ করিতেছি, তাহাকে দেবতার প্রসাদস্বরূপ নিৰ্ম্মলচিত্তে নিঃসঙ্কোচে গ্ৰহণ করিবার অধিকারী হইয়াছি। সেই বিপদের দিনে তাহার বিষয়ী বন্ধুর অভাব ছিল না-তিনি ইচ্ছা করিলে হয় তো কৌশলপূর্বক তাহার পূর্বসম্পত্তির বহুতর অংশ এমন করিয়া উদ্ধার করিতে পারিতেন যে, ধনগৌরবে বঙ্গীয় ধনীদের ঈৰ্ধাভাজন হইয়া থাকিতেন। তাহা করেন নাই বলিয়া আজ যেন আমরা তঁহার নিকটে দ্বিগুণতর কৃতজ্ঞ হইতে পারি। ঘোর সঙ্কটের সময় একদিন তাহার সম্মুখে একইকালে শ্ৰেয়ের পথ