বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

{ শাস্তিনিকেতন ] রাণু আজ একদিনে তোমার দুখানি চিঠি পেলুম। আজ অন্য অনেক দরকারী চিঠি জমেছিল, তার কতকগুলো লিখেচি আরও কতকগুলো লিখতে হবে— তারই মাঝখানে তোমাকে লিখে নিচ্চি, নইলে হয় ত আজকের ডাকে চিঠি যাবে না। তোমাদের ওখানে এবং এখানে ডাকওয়ালাদের সকলের প্রায় অসুখ হয়েচে, তাই ডাক যেতে আসতে এত দেরি হয়। আমাদের ইস্কুলেও সেই জ্বর’ এসে পড়েচে । কিন্তু অন্য জায়গার মত তেমন প্রবল নয়। অনেক ছেলেই এখন হাসপাতালে গেছে। আজ দুপুর বেলায় আর শুতে গেলুমনা— গেলে তুমি আজ আর আমার চিঠি পেতে না— কাজেই তোমার আর রাগ করবার জো নেই। কিন্তু একটা সুবিধে এই যে আজ তেমন গরম নয় । কাল সন্ধ্যাবেলায় স্তরে স্তরে গাঢ় নীল মেঘে আকাশ ছেয়ে গেল— তখন নীচের সেই পূবদিকের বারান্দায় সাহেবে আমাতে মিলে খাচ্ছিলুম— আমার আর সব খাওয়া হয়ে গিয়ে যখন চিড়ে ভাজা খেতে আরম্ভ করেছি এমন সময় পশ্চিম দিক থেকে সে সো করে হাওয়া এসে সমস্ত কালো মেঘ আকাশের একপ্রাস্ত থেকে আর একপ্রান্ত পৰ্য্যস্ত বিছিয়ে দিলে। কতদিন পরে এই সজল মেঘ দেখে আমার চোখ জুড়িয়ে গেল— যদি আমি তোমাদের কাশীর কোনো হিন্দুস্থানী মেয়ে হতুম (সেই যার কুঁজ আছে আর যে নাইয়ের নীচে কাপড় পরে তার মত নয়) তাহলে কজরী গাইতে গাইতে সেই শিরীষ গাছের দোলাটাতে দুলতে যেতুম। কিন্তু এভুজ কিম্বা আমি, আমাদের দুজনের কারো, হিন্দুস্থানী মেয়ের মত আকৃতি প্রকৃতি কিম্বা চালচলন নয়, তা ছাড়া সে কজরী গান জানে না, ○ >