পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যেন বহু জন্মজন্মান্তরের ভিতর দিয়ে নিয়ে আসছে। সঞ্চয় ফেলতে ফেলতে চলেছি, পরিচয়ের বদল হচ্চেই । কিন্তু মানুষের মুস্কিল এই যে, আমাদের পারিপার্শ্বিক আমাদের পরিণতির নূতন পৰ্ব্বকে সহজে স্বীকার করতে চায় না, এককালের দাবী অন্তকালেও চাপাতে চায়। এইজন্যেই আমাদের শাস্ত্রে পঞ্চাশের পর সমাজের রঙ্গভূমি থেকে নেপথ্যে সরে যেতে বলে । এদেশের উপদেশ অনুসারে সমাজ অর্থাৎ সৰ্ব্বসাধারণের সঙ্গে সম্বন্ধ জীবনের মাঝখানটাতে । বাল্যকালও দায়িত্ববিহীন, বৃদ্ধবয়সও । সামনের জীবনের জন্তে বালককে যখন প্রস্তুত হতে হয় তখন সংসার তার উপরে কৰ্ত্তব্যের দাবী করে না। কিন্তু মৃত্যুর জন্যেও প্রস্তুত হওয়া উচিত। মৃত্যুকে যারা নঙৰ্থক ব’লেই জানে, তারা, যেন চিরদিনই বঁাচতে হবে সেই রকম ভঙ্গীতে মৃত্যুকে অস্বীকার করতে চায়। কিন্তু ঠিকমতে ক’রে থেমে যাওয়াতেই প্রাণের পূর্ণতা প্রকাশ পায় এটা মনে রাখলে সেই থামবার জন্যেই সাধনা করা চাই । বস্তুত সকলে মিলে ঠিক সময়ে থামতে দিতে চায় না ব’লেই শেষ বয়সটা এত ক্লান্তির কারণ হয়ে ওঠে। মৃত্যুর প্রবেশ-প্রাঙ্গণে যে বৃহৎ অবকাশ অপেক্ষা করে আছে তাকে যদি বাইরের সংসার এবং অন্তরের পূর্বাভ্যাসে মিলে নষ্ট করতে না থাকে তাহলে সেটা খুব সুন্দর। যুরোপের নকল ক’রে কৰ্ম্মপূজাকে আমরা এত বড়ো কৃত্রিম মূল্য দিয়েছি যে জীবনটা যে একটা আর্ট, সুতরাং সমাপ্তিতে তার একটা সম্পূর্ণতা আছে বাহাদুরী ক’রে এটা আমরা >b\○