ক। আবার সেই জলে ডোবার গল্প? কত বার ঐ এক গল্প করব? এই নে ভাই, চুল বাঁধা এবার শেষ হোলো।
তখন নিস্তার পাইয়া কনকের দিকে ফিরিয়া বসিয়া নীরজা বলিল—
“তা ক্র্লিই বা, এক গল্প কি আর দু’বার করতে নেই নাকি? আচ্ছা ভাই, বাড়ীর লোকেরা তোকে কেউ পেলে না কেন? ভাল করে খুঁজলে কি আর পেতো না?”
ক। বাড়ীতে আর কে ছিল বল্? শুধু চাকর দাসী? তা তারা মায়ের দাহ কার্য্যেই ব্যস্ত। তারপর তারা বোধ হয় এক দিকে খুঁজতে খুঁজতে হিরণকুমার অন্য দিক থেকে ততক্ষণে আমাকে বোটে তুলে নিয়েছেন।
নীরজা বলিল “ভাগ্যে হিরণকুমার তোকে দেখতে পেয়েছিল!”
কনক আর কিছুই উত্তর করিল না, এই জলমগ্নের কথায় কনক আরো বিষণ্ণ হইয়া পড়িল। দেখিয়া নীরজা বলিল—
“কথায় কথায় তবু তোর বিষণ্ণতা ঘুচে এসেছিল, আবার ভাই, সেভাব কেন বল দেখি? তুই ভাই, বাস্তরিক কি একটি আমার কাছে ঢাকিস্। তুই আমাকে তোর দুঃখের যে কারণ বলিস্ তা ছাড়া আর একটা কি নিশ্চয়ই তোর মনে আছে।”
কনক এই কথাটি শুনিয়া আর থাকিতে পারিল না, তাহার চক্ষু হইতে দুই এক বিন্দু অশ্রু ধীরে ধীরে ভূমিতে পতিত হইল। নীরজা বুঝিল, তাহার অনুমান ঠিক না হইয়া যায় না। ব্যথিত হৃদয়ে বলিল “বলনা ভাই, তুই আমার কাছে কি কথা ঢাক্ছিস? কনক আমি তো ভাই, তোর কাছে কিছু ঢাকি নে।”
নীরজার স্নেহবাক্যে কনকের অশ্রু আরও উথলিয়া উঠিল। নীরজার আর সন্দেহ মাত্র রহিল না! কনকের হৃদয় যে একটি লুকানো ব্যথা জাগিতেছে এবং ব্যথাটা যে কিছু গুরুতর রকমের,