পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
জাপান-যাত্রী

পরিচয় কুৎসিত হয়ে উঠ্‌চে। কিন্তু বীভৎসতাকে দেখ্‌তে পাচ্চি নে, কেননা লোভে দুই চোখ আচ্ছন্ন।

 জাপানে সহরের চেহারায় জাপানিত্ব বিশেষ নেই, মানুষের সাজ সজ্জা থেকেও জাপান ক্রমশঃ বিদায় নিচ্ছে। অর্থাৎ, জাপান ঘরের পোষাক ছেড়ে আপিসের পোষাক ধরেচে। আজকাল পৃথিবী-জোড়া একটা আপিস-রাজ্য বিস্তীর্ণ হয়েছে, সেটা কোনো বিশেষ দেশ নয়। যেহেতু আপিসের সৃষ্টি আধুনিক য়ুরোপ থেকে, সেই জন্যে এর বেশ আধুনিক য়ুরোপের। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই বেশে মানুষের বা দেশের পরিচয় দেয় না, আপিস-রাজ্যের পরিচয় দেয়। আমাদের দেশেও ডাক্তার বল্‌চে,―আমার ঐ হ্যাট্‌ কোটের দরকার আছে; আইনজীবীও তাই বল্‌চে, বণিকও তাই বল্‌চে। এমনি করেই দরকার জিনিযটা বেড়ে চলতে চলতে, সমস্ত পৃথিবীকে কুৎসিতভাবে একাকার করে দিচ্ছে।

 এইজন্যে জাপানের সহরের রাস্তায় বেরলেই, প্রধানভাবে চোখে পড়ে জাপানের মেয়েরা। তখন বুঝতে পারি, এরাই জাপানের ঘর, জাপানের দেশ। এরা আপিসের নয়। কারো কারো কাছে শুনতে পাই, জাপানের মেয়েরা এখানকার পুরুষের কাছ থেকে সম্মান পায় না। সে কথা সত্য কি মিথ্যা জানিনে, কিন্তু একটা সম্মান আছে সেটা বাইরে থেকে দেওয়া নয়―সেটা নিজের ভিতরকার। এখানকার মেয়েরাই জাপানের বেশে জাপানের সম্মানরক্ষার ভার নিয়েচে। ওরা দরকারকেই