পাতা:জীবন-স্মৃতি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৩৪৮).pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাশিক্ষার অবসান
৬৯

সম্বন্ধেও তাহার যথেষ্ট উৎসাহ তাহার সাহায্যে আমাদের কুস্তির আখড়ায় একবার আমরা গোটাকত বাঁখারি পুঁতিয়া তাহার উপর কাগজ মারিয়া নানা রঙের চিত্র আঁকিয়া একটা স্টেজ খাড়া করিয়াছিলাম। বোধ করি উপরের নিষেধে সে স্টেজে অভিনয় ঘটিতে পারে নাই।

 কিন্তু বিনা স্টেজেই একদা একটা প্রহসন অভিনয় হইয়াছিল। তাহার নাম দেওয়া যাইতে পারে ভ্রান্তিবিলাস। যিনি সেই প্রহসনের রচনাকর্তা পাঠকেরা তাঁহার পরিচয় পুর্বে কিছু কিছু পাইয়াছেন।

 তিনি আমার ভাগিনেয় সত্যপ্রসাদ। তাঁহার ইদানীন্তন শান্ত সৌম্য মূর্তি যাহারা দেখিয়াছেন তাঁহারা কল্পনা করিতে পারিবেন না। বাল্যকালে কৌতুকচ্ছলে তিনি সকল প্রকার অঘটন ঘটাইবার কিরূপ ওস্তাদ ছিলেন।

 যে সময়ের কথা লিখিতেছিলাম ঘটনাটি তাহার পরবর্তী কালের। তখন আমার বয়স বোধ করি বারো তেরো হইবে। আমাদের সেই বন্ধু সর্বদা দ্রব্যগুণসম্বন্ধে এমন সকল আশ্চর্য কথা বলিত যাহা শুনিয়া আমি একেবারে স্তম্ভিত হইয়া যাইতাম—পরীক্ষা করিয়া দেখিবার জন্য আমার এত ঔৎসুক্য জন্মিত যে আমাকে অধীর করিয়া তুলিত। কিন্তু দ্রব্যগুলি প্রায়ই এমন দুর্লভ ছিল যে সিন্ধুবাদ নাবিকের অনুসরণ না করিলে তাহা পাইবার কোনো উপায় ছিল না। একবার নিশ্চয়ই অসতর্কতাবশত প্রোফেসর কোনো একটি অসাধ্যসাধনের অপেক্ষাকৃত সহজ পন্থা বলিয়া ফেলাতে আমি