পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম চন্দ্র খানি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। ইনি এই পত্রিকার সম্পাদকের পদে অধিরূঢ় হইয়া অতি দক্ষতার সহিত তাহাতে বিবিধ বিষয়ের অবতারণা করিয়া বঙ্গীয়লেখকদিগের বুদ্ধি ও গবেষণা বৃত্তির পরিচালনার এক নূতন পন্থা উদ্ভাবন করেন। কি সমালোচনা, কি গবেষণাপূর্ণ প্রবন্ধ, কি ঐতিহাসিক রহস্ত, কি কবিতা, সকল বিষয়ের উৎকৃষ্ট রচনা ইহঁার দ্বারা এবং ইহার তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত হইয়া বঙ্গে বিদ্যালোচনার এক নবযুগ উপস্থিত করিল। দুঃখের বিষয় যে ইনি সম্পাদকের কার্য্য ১২৮২ সালের পর ত্যাগ করিলে, কয়েক বৎসর পরে এই পত্রিকা লয় প্রাপ্ত হইয়াছে। বঙ্কিম বাবু বঙ্গভাষায় উপন্যাস লেখকদিগের শ্রেষ্ঠ। ইহঁার উপন্যাস এত উৎকৃষ্ট যে তাহাদের একখানিও প্রণেতার নাম চিরস্মরণীয় করিতে সমর্থ। কিন্তু কেবল উপন্যাসে বঙ্কিম বাবু ভারতের আধুনিক কৃতবিদ্যদিগের মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করেন নাই । ইহঁার প্রণীত ধৰ্ম্মবিষয়ক গ্রন্থ সকলও অতি উপাদেয়। ভারতের এই দুর্দিনেও ভারতসন্তান যে কতদূর ধীশক্তিসম্পন্ন হইতে পারে, তাহা এই মহাত্মার গ্রন্থ সকলে অবগত হওয়া যায়। এত দুর [ ১৭২ ] বঙ্কিম চন্দ্র দশী, সূক্ষ্মদৰ্শী লেখক ভারতে বহুকাল জন্মগ্রহণ করেন নাই । পুরাকালীন মুনিঋষিগণের পর এমত ধীশক্তি সম্পন্ন মহাত্মা জনসাধারণের উপকারার্থ লেখনী ধারণ ক জন্তু নাই। ইহঁার প্রণীত -ওচরে রত পাঠে শতশত লোক কৃষ্ণের প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধাবান হইয়া তাহাকে আদর্শ পুরুষের স্থলে অভিষিক্ত করিয়াছেন । ইহার প্রণীত ধৰ্ম্মতত্ত্ব ধৰ্ম্মবিষয়ে একখানি উৎকৃষ্ট গ্রন্থ। যিনি এই পুস্তক অনুধাবন পূৰ্ব্বক পাঠ করিবেন, তিনি হিন্দুধৰ্ম্মের শ্রেষ্ঠতা ও মাহাত্ম্য ক্তকণ্ঠে স্বীকার করিবেন । ধৰ্ম্মতত্ত্বের উপদেশানুসারে শিক্ষিত হইলে, মানব প্রকৃত মনুষ্যত্ব, লাভ করিতে পারে । বঙ্কিম বাবু যেমন প্রতিভাশালী তেমনি স্বদেশপ্রেমিক । ইহঁার গ্রন্থ নিচয়ের মধ্যে স্বদেশ-প্রেমের ভূরি ভুরি প্রমাণ প্রাপ্ত হওয়া যায়। ধৰ্ম্মতত্বের শেষ বাক্যটা উদ্ধৃত করিয়া এই মহাত্মার সংক্ষিপ্ত জীবনী শেষ করা গেল-সকল ধৰ্ম্মের উপর স্বদেশ-গ্রীতি, ইহা বিস্মৃত হইও না। o বঙ্কিম বাবুর প্রণীত পুস্তকাবলী— দুর্গেশনন্দিনী, কপালকুণ্ডলা, মৃণালিনী, বিষবৃক্ষ, চন্দ্রশেখর, কৃষ্ণকাস্তের উইল, দেবীচৌধুরাপা,