অর্থানুকল্যে প্রকাশিত হইত। তিনি নিজেও তাহাতে লিথিতেন। বিদ্যালয়, চিকিৎসালয়, অন্নসত্র প্রভৃতি অন্যান্য জনহিতকর কার্য্যে ও তাঁহার খুব অনুরাগ ছিল এবং তজ্জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয়ও করিয়াছেন। তাঁহার গুণের পুরস্কারস্বরূপ তিনি ১৮৭৭ সালে রাজা ও ১৮৮০ সালে মহারাজা উপাধি প্রাপ্ত হন। নীলকৃষ্ণ ও বিনয় কৃষ্ণ নামে দুই পুত্র রাখিয়া তিনি পরলোক গমন করেন।
কমলকৃষ্ণ সিংহ, রাজা—তিনি ময়মনসিংহের অন্তর্গত সুসঙ্গের রাজা প্রাণকৃষ্ণ সিংহ বাহাদুরের দ্বিতীয় পুত্র। তিনি ১২৪৬ বাংলার (১৮৩৯ খ্রীঃ) আষাঢ় মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তৎকালে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে উর্দ্দু ও পারস্য ভাষা শিক্ষা করিয়া ছিলেন। তিনি একজন উৎকৃষ্ট শিকারী ছিলেন। গারো পাহাড় তখনও তাঁহাদের হস্তচ্যূত হয় নাই। তিনি তথায় হাতী ধরিবার খেদা করিয়া হাতী ধরিতেন। এই প্রকার শিকারে তিনি কয়েকবার নিজের জীবনও বিপন্ন করিয়াছলেন। সঙ্গীতেও তাঁহার বিশেষ অনুরাগ ছিল। এই রাজ পরিবার পুরুষানুক্রমেই বিদ্যাচর্চ্চার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। রাজা কমলকৃষ্ণ সিংহ বাহাদুরের রচিত ‘সঙ্গীত শতক’ ‘তুর্য্যতরঙ্গিনী’ ‘সেতার শিক্ষা’, ‘অশ্বতত্ত্ব’কমললোচন, দ্বিজ—উত্তর বঙ্গের একজন প্রসিদ্ধ কবি। তাঁহার পিতা যদুনাথও কবি ছিলেন। রংপুর জিলায় তাঁহাদের নিবাস ছিল। কমললোচনের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘চণ্ডিকা বিজয়’ রংপুর সাহিত্য পরিষৎ হইতে প্রকাশিত হইয়াছে। তিনি খ্রীঃ সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগে বর্ত্তমান ছিলেন।
কমলাকর—(১) একজন প্রসিদ্ধ জ্যোতির্ব্বিৎ পণ্ডিত। তাঁহার পূর্ব্বপুরুষদের মধ্যেও বহু খ্যাতনামা জ্যোতির্ব্বিৎ জন্মগ্রহণ করেন। ১৬৫৮ খ্রীঃ অব্দে তিনি সূর্য্যসিদ্ধান্তের প্রচলিত মত-সম্মত ‘সিদ্ধান্ততত্ত্ব বিবেক’ নামক জ্যোতিষগ্রন্থ প্রণয়ন করেন। ঐ গ্রন্থের কোনও কোনও স্থানে তিনি ভাস্করাচার্য্যের মত খণ্ডন করিতে প্রয়াস পান। তাঁহার রচিত অপর গ্রন্থের নাম ‘অপূর্ব্ব ভাবনোপপত্তি।’ (২) ‘জাতক তিলক’ নামক গ্রন্থের রচয়িতা আর একজন কমলাকরের নামও পাওয়া যায়। তাঁহার অন্য পরিচয় অপ্রাপ্য।
কমলাকর ভট্ট—একজন জ্যোতির্ব্বিদ পণ্ডিত তিনি নির্ণয়াসিন্ধু নামক স্মৃতিগ্রন্থ ১৬১৬ শকে (১৬৯৪ খ্রীঃ) রচনা করেন।