পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তাঁকে হ্রীংয়ে—অন্তরে হৃদয়ে অনুভবে এনেছি। তিনি বাইরে শ্রী হয়ে materialised হয়ে ধনে ধান্যে, সোনায় রূপায় অন্নসম্ভারে রূপ ধরে প্রকাশ হোন।”

 তারা ভারি খুসী হয়ে এই মন্ত্রটি লিখে নিলে, পর বৎসর থেকে তাদের পূজাবিধির অঙ্গীভূত হল।

 গৃহিণীটি প্রাক্তন আর্যসমাজভুক্ত স্বামীকে সনাতনী করে ফেলেছেন। বল্লেন—“প্রত্যেক গৃহস্থের দরকার লক্ষ্মীপূজা ও শক্তিপূজা। এ দুই ছাড়া সংসারে কার চলে?” ধর্মসংস্কারকদের তর্কবিতর্কের ভিতর তিনি নেই—তাঁর আছে সংসারী গৃহিণীর প্র্যাকটিক্যাল কমন সেন্স। গৃহপতি বললেন—“আর্যসমাজ ব্রাহ্মসমাজাদির ক্রিয়াক্রমে আর তাঁর আস্থা নেই। তাদের tenets হচ্ছে—negation of everything. positive কোন কিছুর আশ্রয় দেয় না গৃহস্থকে।”

 মহীশূরে ব্রাহ্মণ-প্রাধান্য অত্যধিক। সেখানে পুরোহিতের মধ্যস্থতায় ছাড়া কোন পূজা হতে পারে—মেয়েরা নিজেই করতে পারেন, তার পরিচয় পাইনি। তাঁরা মন্দিরে যে পূজাদ্রব্য নিয়ে যেতেন তা পুরোহিতের দ্বারা নিবেদিত হত।

 প্রত্যেক উৎসবের দিন স্কুলের কোন-না-কোন বড় মেয়ে বা শিক্ষয়িত্রী আমার সঙ্গে দেখা করতে আসত, হাতে উৎসব-ভোজের কিছু না কিছু নিদর্শন নিয়ে আসত। মাঝে মাঝে তিন-চারজন একত্রে এসে, বীণা সঙ্গে করে এনে আমায় গান ও বাজনা শুনাত। তাদের বীণার ঝঙ্কারের সঙ্গে গাওয়া একটি গান আমার মনে পড়ে—সেটি তেলেগু নয়, হিন্দী—

“সত্যলোকসে নারদ আওয়ে!
নারদ বীণ বাজাওয়ে!
আরে আরে নারদ বীণ বাজাওয়ে!
আরে আরে নারদ বীণ বাজাওয়ে।”

 শুধু এই কটি কথা—কিন্তু ঝঙ্কারে ঝঙ্কারে গেয়ে গেয়ে অফুরন্ত! সত্যলোক থেকে নারদ যে বীণা হাতে করে নামছেন—তাঁর বীণার ঝঙ্কার শুনা যাচ্ছে—একেবারে realistic!

 দুই একটি মেয়ে বেহালা বাজাতে পারত। আমিও লরেটোতে প্রফেসর মাঞ্জাতা বলে একজন ইতালীয়ান মাস্টারের কাছে বেহালা শিখতে আরম্ভ করেছিলুম—বি-এ পাসের পরে। ইন্দিরাও তাঁর কাছে

১১৭