পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মানসিক পুষ্টিবর্ধন হল, সে পুষ্টি যাঁর ইচ্ছায় সাধিত হয়েছিল, তারই ইচ্ছায় যন্ত্রচালিতবৎ হয়ে আমার জীবনতরী চলল ও দেশকে চালনা দিলে এক নুতন অজানিত পথে, যার শেষ আজও দুর্লক্ষ্য।


॥ সতর॥

রুদ্রবীণ

বড়মামার হাতে আরম্ভে রবিমামা ভারতীর যে বীণাকে আবাহন করলেন—

শুধাই ঐ গো ভারতী তোমায়
তোমার ও বীণা নীরব কেন?
ভারতের এই গগন ভরিয়া
ও বীণা আর মী বাজে না কেন?

তার প্রায় পচিশোর্ধ কয়েক বৎসর পরে দাক্ষিণাতা থেকে ফেরা আমার অঙ্গুলির প্রথম সঞ্চালনে ভারতীর সেই বীণা রুদ্রবণ হয়ে বেজে উঠল। শঙ্করের ভেরী নাদিত করে লেখনী আমার বাঙালীকে মত্যুচর্চায় আহবান করলে। এবার আমার হাতের প্রথম প্রবন্ধই হল তাই। সেই আমার বীণের প্রথম ঝঙ্কার। যে বাঙালী পৈতৃক প্রাণটি বাঁচিয়ে রাখতেই সদা তৎপর, বীণা তাদের ডেকে বললে,—মৃত্যুকে যেচে বরণ করতে শেখ, অগত্যা তার কবলিত হয়ে তারা তাকে স্পর্ধা কর, তার সম্মুখীন হও... খেলায় ধুলায়, আমোদে প্রমোদে, শিকারে বিহারে, বিজ্ঞানে সজ্ঞানে, প্লেগে জনসেবায়, আগুনে লোক-উদ্ধারে, জলেতে আত্মপ্রাণপণে পরপ্রাণ রক্ষায়। ভূগোল শেখ ভূমণ্ডল প্রদক্ষিণে-মানচিত্রে অঙ্গুলি সঞ্চারণে নয়। পাড়ি দাও সমুদ্রে, চলে যাও সাহারার মরুতে, চড় তুঙ্গে এভারেস্টের শঙ্গে, সেকালের ভারতীয় সন্ন্যাসী পর্যটকদের লোটা-কম্বল-মা-সহায় হয়ে কিংবা একালের শ্বেতপঙ্গবদের অনেক তোড়জোড়ের মধ্যে প্রধান যেটি সেইটি সম্বল করে- সুস্থ ও সবল শরীর। মানুষের সবচেয়ে বড় পুজি সেইটি- বলিষ্ঠ ও সুসুস্থ শরীর। সে জন্যে চাই বাঙালীর ভারতের অন্যান্য জাতির মত নিয়মিত ব্যায়াম-চর্চা। এই হল আমার রুদ্রবীণের দ্বিতীয় ঝঙ্কার।

১২৫