পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।

লোকরাসিনী হইলেন। এই সময়ে শ্রীমন্ত আপ্পা-সাহেবের মৃত্যু হওয়ায় মোরোপন্ত কাশীধাম ত্যাগ করিয়া ব্রহ্মাবর্তে গিয়া বাস করিতে বাধ্য হইলেন। আগাজীর সহোদর পেশোয়া বাজীরাও-সাহেব, স্বীয় ঔদার্যগুণে মোরোপকে আপনার নিকট আশ্রয় দিলেন। ব্রহ্মাবর্তে মোনরাপন্ত ও শ্রীমন্ত পেশোয়ার বাসস্থান প্রায় সংলগ্ন ছিল। মনুবাই পিতার অত্যন্ত আদরিণী ছিলেন। দুর্দৈবক্রমে মাতৃবিয়োগ হওয়ায়, কন্যার সমস্ত রক্ষণভার পিতার স্কন্ধে আসিয়া পড়িল। পিতৃসন্নিধানে থাকা-প্রযুক্ত মনুবাইকে প্রায় অষ্টপ্রহর পুরুষবর্গের মধ্যে অবস্থিতি করিতে হইত। এই দিব্যশ্রী ফুল্ল-কপোল বালিকাটা, পেশোয়ার সমস্ত অনুচরবর্গেরই আদরের সামগ্রী ছিল। ইহার উজ্জ্বল বিশালনেত্র ও গৌরবর্ণ মুখকান্তি দেখিয়া সকলেরই আনন্দোদয় হইত। বাজীরাও-সাহেবের অধীনস্থ রামচন্দ্র-পন্ত সুবেদার, বাবাভট, প্রভৃতি প্রমুখ-মণ্ডলী এই বালিকার সতেজবৃত্তি অবলোকন করিয়া কৌতুক-সহকারে ও আদরভরে ইহাকে “চ্ছবেলী” (ময়না) বলিয়া ডাকিতেন। শ্রীমন্ত বাজীরাও পেশোয়ার দত্তকপুত্র নানাসাহেব ও রাও-সাহেব এই দুইটী বালক এই সময় অল্পবয়স্ক হওয়ায় নানাপ্রকার খেলাধুলায় প্রবৃত্ত হইত; এই বালিকাটাও তাহাদের খেলায় যোগ দিবার উপক্রম করিত। এই বালবৃন্দের লীলা অবলোকন করিয়া শ্রীমন্ত। পেশোয়া অত্যন্ত আনন্দ উপলব্ধি করতেন। ঝাঁশিরাণীর সপত্নী মাতা শ্রীমতী চিমা বাই, রাণী ঠাকুরাণীর বাল্যজীবন-সম্বন্ধে এইরূপ বলেন; “বাল্যকালে, বিবাহের পূর্ব্বে, ঘুড়ি-ওড়ানো, চাকা-চালানো, মেয়েদের মধ্যে রাণী-সাজা, কাহাকে দাসী-করা, কাজ না করিলে কাহাকে বা দণ্ড দেওয়া ইত্যাদি বাল্যখেলা রাণীর পছন্দসই ছিল।” নানাসাহেব ও রাওসাহেব-ইহাদের বিদ্যাশিক্ষা দিবার জন্য, তৎকালের পদ্ধতি-অনুসারে, একজন শিক্ষক নিযুক্ত ছিল। এই শিক্ষক ইহাদিগকে বর্ণপরিচয়ে শিক্ষা দিতেন। এই সময়ে, মনুবাই ইহাদের সান্নিধ্যে থাকাযুক্ত তাহারও