পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
ঝুঁশির রাণী।

হইতে লাগিল। নথে-খার লোকেরাও তীর ও বন্দুকের গুলি একসঙ্গে ছুড়িতে লাগিল। দুই প্রহর কাল পর্যন্ত ঘোরতর যুদ্ধ হইল। কেল্লার। উপরিস্থিত তোপের প্রচণ্ড গোলাবর্ষণে অস্থির হইয়া নথে-খার সৈন্য পিছু হটিল এবং কিঞ্চিৎ দুরে গিয়া কেল্লা অবরোধ করিয়া বসিয়া রহিল। প্রতিদিন উভয় সৈন্যের এক একবার সাক্ষাৎকার হইতে লাগিল। যুদ্ধের প্রথম আরম্ভেই, নথে-খরি ধ্বজপতাকা ধরাশায়ী হইল এবং বিস্তর সৈন্য বিনষ্ট হইল। ঝাশির অবল। বিধবা রাণীর সহিত যুদ্ধে তাঁহার ন্যায় বীরপুরুষের পরাস্ত হইয়া পলায়ন করিতে হইবে, ইহা অতি লজ্জার কথা বিবেচনা করিয়া নথে-খা, রাত্রিকালে, ঝুঁশি-কেল্লার “বোছ।” দরজার উপর লক্ষ্য সন্ধান করিয়া চারিটা তোপ বসাইলেন এবং সমস্ত সৈন্য চারিভাগে বিভক্ত করিয়া ঝাশি-সৈন্যকে আক্রমণ করিলেন। যদিও রাণীঠাকুরাণীর সৈন্য সুসজ্জিত ও প্রস্তুত ছিল, তথাপি “বোছা” দরজার উপর, চারিটা তোপের গোলা বর্ষিত হওয়ায়, দরজা ভগ্নপ্রায় হইল। এই সংবাদ রাণীঠাকুরাণী জানিবামাত্রই, তাঞ্জামে আরোহণ করিয়া “বোছ।” দরজার উপরিস্থিত তোপ-শ্রেণীর নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন এবং প্রভূত আবেশভরে তত্রস্থ সৈন্যদিগকে সাবাশি দিয়া তাহাদিগকে আরও উত্তেজিত করিবার জন্য কিছু কিছু বক্‌শিসও দিলেন। তাহারা উৎসাহিত হইয়া প্রাণপণে যুদ্ধ করিতে লাগিল। ইতিমধ্যে, বীরচূড়ামণি সর্দার লাল-ভাউ-বশিকে হুকুম করিয়া, কড়ক বিজলী” নামক কেল্লার প্রসিদ্ধ প্রকাণ্ড তোপ বুরুজের উপর অনাইলেন এবং গোলন্দাজকে সুবর্ণ-বলয় বকশিস দিয়া তুমুল যুদ্ধে উৎসাহিত করিলেন। এই তোপের বর্ষণ শুরু হইবামাত্র শত্রুপক্ষের সমস্ত গোলন্দাজ ভয়চকিত হইয়া রণবিমুখ হইল। এবং উহাদিগের তোপ ঝশি-সৈন্যের হস্তগত হইল। রঘুনাথ সিংহ প্রভৃতি সর্দারগণ পলায়নোমুখ শত্রু-সৈন্যের অনুসরণ করিয়া তাহাদিগকে সম্পূর্ণরূপে পরাভূত করিল। রাণীঠাকুরাণী, রঘুনাথ সিংহের শৌর্য-বীর্যের