পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
ঝাঁশির রাণী।

পন্তের এই উক্তি-অনুসারে, ইংরাজের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেন। বলেন, ইংরাজ-সৈন্য ঝাঁশির অভিমুখে আসিতেছে, এই সংবাদ ঝুঁশিতে পৌঁছিলে এইরূপ তর্ক উপস্থিত হয় যে, উহা নথে-খার সৈন্য—উহারা মুখে রং লাগাইয়া পুনর্ব্বার ঝাশি আক্রমণ করিবার জন্য অসিয়ছে। এই বিশ্বাসে, রাণী তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবার হুকুম দেন ' সেই সময়ে নাকি অধীনস্থ ঠাকুর-মণ্ডলী রাণীকে এইরূপ বলেন যে, ইংরাজের সহিত যুদ্ধ করিয়া উঠা যাইবে না—তাহাদের সহিত রণস্পর্ধা করিয়া কোন ইষ্ট নাই—বাণপুরের রাজাও মাথোনের যুদ্ধে জয়লাভ করিতে পারেন নাই ইত্যাদি। কিন্তু এই সকল কথায় কোন ফল হইল না। কেহ বলিল—রাণীঠাকুরাণী, মিত্রতা স্থাপন করিবার জন্য ইংরাজদিগের নিকট তাহার একজন সর্দারকে পাঠাইয়াছিলেন, কিন্তু তাহাতে কোন ফল না হইয়া, উল্টা সেই সর্দারের ফাশি হয় এবং এই কারণেই রাণী যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়েন। আসল কথা, প্রকৃত কারণ ঠিক জানা যায় না জানিবার কোন উপায়ও নাই। এই পর্যন্ত জানা যায়, রাণী ইংরাজের সহিত সদ্ভাবে থাকিবার চেষ্টা করিয়াও যখন দেখিলেন, কোন ফল হইল,—ইংরাজেরা ঋশি আক্রমণ করিল; তখন সেই স্বাভিমানিনী তেজস্বিনী রাণী, ঋশি সংরক্ষণের উদ্যোগ করিতে লাগিলেন।

 তাঁহার সৈন্যমধ্যে লড়াকা ও সাহসী কয়েকজন আফগান ও বুণ্ডেল-নিবাসী লোক ছিল বটে কিন্তু তাহার সমস্ত সৈন্যমধ্যে তেমন সুব্যবস্থা ছিল না। এক্ষণে রাণী স্বীয় সৈন্যমধ্যে সুশৃঙ্খলা স্থাপনে উদ্যোগী হইলেন। তিনি সমস্ত সৈন্য-মণ্ডলীর নেতৃত্ব গ্রহণ করিয়া অল্পকালের মধ্যেই সমস্ত যুদ্ধের আয়োজন প্রস্তুত করিলেন। তিনি স্বয়ং পরিদর্শনাদি করিয়া দুর্গবপ্রের জীর্ণসংস্কার করাইলেন, কেল্লার বুরুজের উপর তোপ বইলেন এবং তোপ চালাইবার জন্য সুদক্ষ গোলন্দাজ নিযুক্ত করিলেন। সহরস্থ বপ্র-প্রকারের রন্ধমধ্যে “কারামাইন” বন্দুক প্রবিষ্ট করা-