পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
ঝাঁশির রাণী।

রাণীঠাকুরাণী কিছুমাত্র বিচলিত না হইয়া কোমরে তলবার বাঁধিয়া, বরে উপর উত্তম বন্দোবস্ত করিলেন এবং সৈন্যগণকেও উত্তেজিত করিয়া তুলিলেন। পুনর্ব্বার ঘোরতর যুদ্ধ আরম্ভ হইল।

 ইংরাজ-সৈন্য কেল্লা আক্রমণ করিবার অভিপ্রায়ে সবেগে আসিতেছে। দেখিয়া, সহরের ব ও কেল্লার বুরুজ হইতে ঝাঁশির সৈন্য তাহাদিগের উপর তোপ চালাইতে আরম্ভ করিল-“তোপের প্রচণ্ড গোলাবর্ষণে ইংরাজ-সৈন্য একেবারে ধ্বংশপ্রায় হইল, তথাপি উহার। প্রাণের আশা ছাড়িয়া দিয়া সাহসের উপর ভর করিয়া অগ্রসর হইতে লাগিল এবং বপ্র-প্রাকারে সিঁড়ি লাগাইবার চেষ্টা করিতে লাগিল। কিন্তু কিছুতেই পারিয়া উঠিল না। কিয়ৎকালের জন্য কেল্লার লোকেরা সুচারু- রূপে ব সংরক্ষণ করিয়াছিল। কিন্তু অবশেষে ব্রিগেডিয়ার স্টুয়ার্ট সহরের বোচ্ছ দরজা হস্তগত করিয়া দক্ষিণ দিকে আক্রমণ করায় প্রাপরিস্থ গোলন্দাজ সৈন্য হতাশ হইয়া পলাইতে লাগিল। ষ্টুয়ার্টের সৈন্য জয়লাভ করিয়াছে শুনিয়া অন্যান্য বিভাগের ইংরাজ-সৈন্যমধ্যেও উৎসাহ বিস্ফুরিত হইয়া উঠিল; এবং এক্ষণে সকল দিক হইতেই তাহারা সিঁড়ি লাগাইয়া বপ্রের উপর উঠিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। অবশেষে এক সহস্র ইংরাজ-সৈন্য প্রের উপর উঠিতে সমর্থ হইল। এই সময়ে সর- হিউয়োজ তাহার অধীনস্থ সৈন্য লইয়া “বোছা” দরজার নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন এবং তিনিও সহরের দিকে চাল আরম্ভ করিলেন। ঝাঁশি-সহরের মধ্যভাগে এক প্রকাণ্ড রাজবাটী ছিল এবং তাহার সংরক্ষণার্থ কতকগুলি লোক তথায় রক্ষিত হইয়াছিল। সর হিউরোজ তাহাদিগকে আক্রমণ করিয়া রাজবাটী হস্তগত করিবার সঙ্কল্প করিলেন।

 এদিকে রাণীঠাকুরাণী, কেল্লার সমস্ত তোপ-মঞ্চ সাপ্লাইবার সুন্দর বন্দোবস্ত করিতেছিলেন। এমন সময়ে যখন শুনিলেন, সহরের দক্ষিণ বপ্র ইংরাজের হস্তগত হইয়াছে, তখন তাহার হৃদয়ে যেন শত বৃশ্চিক