পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
৭১

 রাণীঠাকুরাণী ইতিপূর্ব্বে সৈন্যের সুব্যবস্থা করিবার জন্য রাও-সাহেবকে বারম্বার অনুরোধ করিয়াছিলেন। কিন্তু তখন তিনি বিজয়গাৎসবে মত্ত হইয়া সে দিকে বড় মনোেযোগ দেন নাই। এতক্ষণে তাঁহার চেতনা হইল। কিন্তু সুযোগ একবার ছাড়িয়া দিলে আর তাহা ফিরিয়া পাওয়া যায় না।

“ন কার্যকালং মতিমান্নতিক্রমে কথংচন।
কথংচিদেব ভবতি কার্যযােগঃ শুদুলভঃ।”

 রাণীঠাকুরাণী তাত্যা-টোপেকে এইরূপ বলিলেন —“আজ পর্যন্ত আমরা যে এত প্রাণপণ পরিশ্রম করিলাম, তাহা সফল হইবার আর আশা রহিল না! শ্রীমন্ত পেশোয়ার দুরাগ্রহী স্বভাব প্রযুক্ত ও তাহার বিজয়োন্মত্ততা বশতঃ আমাদের সমস্ত যুক্তি পরামর্শই বৃথা হইল! ইংরাজসৈন্য আমাদিগের মুখামুখী হইয়াছে, তথাপি এখনও আমাদের সৈন্যমধ্যে কিছুমাত্র ব্যবস্থা নাই। অতএব, এখন আমরা ইংরাজের সম্মুখীন হইয়া কতদুর কৃতকার্য হইব, তাহা তো স্পষ্টই দেখা যাইতেছে। তথাপি, উপস্থিত বিপদের সময়ে সাহস ত্যাগ করিলে কোন ফল হয় না। তুমি এক্ষণে ফৌজের পরিদর্শনে এখনি বহির্গত হও এবং যাহাতে বিরুদ্ধ পক্ষ আমাদিগের প্রতি আক্রমণ করিতে না পারে, তাহার বন্দোবস্ত করো। আমি নিজ কর্তব্যের জন্য প্রস্তুত আছি! এখন তোমার কর্তব্য তুমি কর।” তাত্যা-টোপে, এই, কথা শুনিবামাত্র বীর্যোৎসাহে উত্তেজিত হইয়া উঠিলেন এবং রাণীঠাকুরাণীর প্রতি গোয়ালিয়ারের পূর্বদিক্‌ রক্ষণের ভার দিয়া নিজে অন্য সৈন্যবিভাগের ব্যবস্থা করিতে প্রবৃত্ত হইলেন।

 এক্ষণে রাণীঠাকুরাণী যোদ্ধৃ-বেশ পরিধান করিয়া ও অশ্বারূঢ় হইয়া আপনার সৈন্যের মধ্যে কাওয়াৎ করাইতে লাগিলেন।

 ১৭ই তারিখে ব্রিগেডিয়র স্মিথ যুদ্ধের ব্যুগল বাজাইয়া যুদ্ধ আরম্ভ করিয়া দিলেন। ইংরাজ-সৈন্য সম্মুখে অগ্রসর হইবামাত্র, রাণীর