পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

36שג הסקס. ব্ৰহ্মদশম ്. ९९७ পরমাত্মারই প্রকাশ সৰ্ব্বভূতে দেখিয়া আনন্দে বিহ্বল হইয়া পড়ে । তেজস্বী বৈদিক ঋষি সূর্য্যের নিকট কি মুন্দর প্রার্থনা করিয়াছেন ঃ– “হিরন্ময়েণ পাত্রেণ সত্যস্যাপিহিতং মুখং ! তত্ত্বং পুষয়পাবৃণু সত্যধৰ্ম্মায় দৃষ্টয়ে।” ঈশোপনিষদ। cई সূৰ্য্য ! সত্যস্বরূপ পরব্রহ্মকে লাভ করিবার পথ তুমি তোমার জ্যোতিস্ময় আবরণের দ্বারা আবৃত করিয়া রাখিয়াছ কেন ; আমি তোমাকে চাহি না ; আমি সত্যস্বরূপকেই প্রার্থনা করি, অতএব তুমি তোমার অন্তৰ্য্যামী পরমাত্মার সহিত আমার প্রত্যক্ষ যোগের পথ উদঘাটিত কর । যাহার ভাগ্যে ব্রহ্মদর্শন ঘটিয়াছে, সেই আত্মা এই বৈদিক ঋষির ন্যায় পরমাত্মাকে সকলের অন্তর্যামী দেখিয়া সকলেরই নিকট এই প্রার্থনা করে যে “আমাকে তাহার সহিত প্রত্যক্ষ ও চিরস্থায়ী যোগের পথ প্রদর্শন কর ; আমি তর্ক প্রভূতি বাক্যরাশি শুনিতে চাহি না ।” প্রকৃতই সে যখন আনন্দস্বরূপের নিকটে থাকিয়া এক মহান আনন্দ উপভোগ করে, তখন তর্কের দ্বারা তাহার স্বরূপ নিরূপণের অবসর কোথায় ? পরমেশ্বরের প্রসাদে আত্ম। র্তাহার সাক্ষাৎকার না পাইলে তর্কের দ্বারা তাহাঁকে নিরূপণ করে, কাহার সাধ্য ? ভারতের প্রাচীন ঋষিরা ইহা সুস্পষ্ট হৃদয়ঙ্গম করিয়াছিলেন । র্তাহারা অতি সারবান ও স্বল্প কথায় এই মহাসত্য প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন ; তাহারা বলিয়াছেন যে সেই নিত্যনিরঞ্জন পরমেশ্বর “অতর্ক্যং” তর্কের অগম্য এবং অস্তিক্যবুদ্ধি তর্কের দ্বারা পাওয়া যায় না “নৈষা তর্কেণ মতিরাপনেয়।” আজি পাশ্চাত্য জগত হইতেও এই সত্যের প্রতিধ্বনি ও বিস্তৃত ব্যাখ্যা পাইতেছি মাত্র । ঈশ্বরের অস্তিত্ব তর্কের দ্বারা প্রমাণ করা একেবারেই অসম্ভব । অtকাশের বা স্থানের যে অস্তিত্ব অাছে, ੋ তর্ক করিয়া বুঝা যায় ! ইহা অামাদের সমজ্ঞানসিদ্ধ একটী সত্য। আর যদি বা তর্কের উপসংহারে “ঈশ্বর আছেন” এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইতে হয়, তাহা হইলেও আমাদের সশরবিষয়ক বিশেষ কিছু জ্ঞানলাভ হইল না। আমরা তর্কের ফলে “ঈশ্বর আছেন” এই কথাগুলিতে সায় দিতে বাধ্য হইলাম বটে, কিন্তু সেই কথাগুলি আমার ঈশ্বরকে উপলব্ধি করিবার পক্ষে কিছুই সহায়তা করিতে পারিল না । এইরূপে দেখিতেছি যে তর্কের দ্বারা প্রকৃত ব্ৰহ্মলাভ একেবারেই অসম্ভব । ব্রহ্মপ্রসাদই ব্রহ্মলাভের সর্বপ্রধান উপায়। তিনি প্রসন্ন হইয়া আমাদের নিকটে স্বয়ং প্রকাশিত না হইলে আমরা কিছুতেই তাহাকে পাইতে পারিব না। তিনি আত্মাতে কখন যে আবিভূত হইবেন, তাহ বলিতে পারি না। তবে এই টুকু জানি যে, যে আত্মা যত নিৰ্ম্মল ও বিশুদ্ধ হইবে, সেই আত্মাতে র্তাহার সিংহাসন ততই দৃঢ়রূপে প্রতিষ্ঠিত হইবে। আমাদের আত্মা নিৰ্ম্মল ও বিশুদ্ধ হইলে তবে সেই শুদ্ধবুদ্ধমুক্তস্বরূপের তেজোময় আবির্ভাব ধারণ করিতে পারিব । অামরাই বা কিরূপে মলিনতাপূর্ণ আত্মাতে সেই দেবদেবকে আসীন হইবার জন্য আহ্বান করিতে পারি? আর, আমরা ধখন জানি না যে তিনি কখন আমাদের অন্তরে আবিভূতি হইবেন, তখন আমাদিগের আত্মাকে সৰ্ব্বদাই নিৰ্ম্মল ও পরিশুদ্ধ রাখা নিতান্তই কর্তব্য । , ব্ৰহ্মলাভ অনায়াসপাধ্য কাৰ্য্য নহে ;