পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নারায়ণ বলিলেন, —“তোমাদের ভয় নাই, তোমরা আমার সহিত এস। আমি এড়ৈ গরুকে বুঝাইয়া বলিব, সে তোমাদের প্রতি কোনরূপ অত্যাচার করিবে না।” এইরূপ আশ্বাস পাইয়া যম ও চিত্রগুপ্ত ভয়ে ভয়ে নারায়ণের পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিলেন, নারায়ণ আগে আগে চলিলেন। দ্বারে আসিয়া দেখিলেন যে, ঐড়ে গরু সিং পাতিয়া দাঁড়াইয়া আছে। নারায়ণকে দেখিয়া এঁড়ে গরু বলিল,-“মহাশয়! আপনার বাটীতে যম ও চিত্রগুপ্ত গিয়া আশ্রয় লইয়াছে। শীঘ্ৰ তাহাদিগকে বাহির করিয়া দিন। তাহাদিগকে সিঙে লইয়া আমি ঘুরাইব । মিত্তির-জা আমাকে এই আজ্ঞা করিয়াছেন।” সুমিষ্টভাবে নারায়ণ বলিলেন, —“এঁড়ে গরু ! তুমি ব্যস্ত হইও না। যম ও চিত্ৰগুপ্ত পলায় নাই। এ দেখ, আমার পশ্চাৎ আসিতেছে। তাহাদিগকে সিঙে লইয়া ঘুরাইতে মিত্তির-জা তোমাকে বলিয়াছেন। আচ্ছা মিত্তির-জা যদি যম ও চিত্ৰগুপ্তকে অব্যাহতি দেন, তাহা ইলে তুমি তার কথা শুনিবে তো?” ঐড়ে গরু উত্তর করিল,-“মিত্তির-জা আমাকে হুকুম দিয়াছেন। মিত্তির-জা যদি পুনরায় বলেন, না, ইহাদিগকে সিঙে করিয়া ঘুরাইতে হইবে না, তাহা হইলে তাঁর কথা শুনিব না। কেন? অবশ্য শুনিব ।” নারায়ণ বলিলেন, —“তবে আমার সঙ্গে এস! সকলে চল মিত্তির-জার কাছে যাই।” নারায়ণ আগে, তাহার পশ্চাতে ঐড়ে গরু, তাহার পশ্চাতে যম ও চিত্ৰগুপ্ত; এইরূপে সকলে পুনরায় যমপুরীর দিকে চলিলেন। এঁড়ে গরু দুই-চারি পৃঃ যায়, আর মাঝে মাঝে পশ্চাৎ দিকে চাহিয়া দেখে, পাছে যম ও চিত্রগুপ্ত পলায়। (G) মিত্তির-জা ভূত বলিলেন,-আমার নিকট য়া যম ও চিত্রগুপ্ত কি করিয়াছিলেন, কোথায় গিয়াছিলেন, তাহা আমি চক্ষে । পরে নারায়ণের নিকট যাহা আমি -শীতলার পাণ্ডা! তুমি মনে করিও না যে, শুনিয়াছিলাম, তাহাঁই তোমাকে আমি—মিত্তির-জা, এতক্ষণ চুপ ।। যম যেই সিংহাসন ফেলিয়া পলাইলেন, আর গিয়া বসিলাম। সিংহাসনে বসিয়া যমদূতাদিগকে হুকুম দিলাম,-“যিমপুরীতে যত পাপী আছে, এই মুহুৰ্ত্তে তোমরা তাদের সকলকে খালাশ কর।” যমপুরীতে তৎক্ষণাৎ মহাসমারোহ পড়িয়া গেল। শত শত, সহস্ৰ, লক্ষ, লক্ষ, পাপী খালাশ পাইতে লাগিল। দুৰ্গন্ধ পুতিময় নরক হইতে উঠাইয়া পাপিগণকে স্নান করাইতে লাগিলাম, সুগন্ধ আতর গোলাপ তাহাদিগের দেহে সিঞ্চন করিতে লাগিলাম। অগ্নিময় জ্বলন্ত নরক হইতে উঠাইয়া সুস্নিগ্ধ জলে পাপীদিগের শরীর সুশীতল করিতে লাগিলাম। শত শত কৰ্ম্মকার আনিয়া পাপীদিগের হস্ত-পদের শৃঙ্খল কটাইতে লাগিলাম। মৰ্ম্মভেদী কান্নার ধ্বনি বিলুপ্ত হইয়া যমপুরীতে আজ চারিদিকে আনন্দের কোলাহল পড়িয়া গেল। সহস্ৰ সহস্ৰ পাপী গলবস্ত্ৰ হইয়া যোড়হাতে আমার সিংহাসনের সম্মুখে দাঁড়াইল। সকলে বলিতে লাগিল,—“ধন্য মিত্তির-জা! শুভক্ষণে আপনার মা আপনাকে গর্ভে ধরিয়াছিলেন। আজ। আপনার কৃপায় যমযন্ত্রণা”হইতে আমরা রক্ষা পাইলাম। না হইলে নিৰ্দয় যম আরও কতকাল আমাদিগকে পীড়ন করিত, তাহা বলিতে পারি না।” সম্মুখে দাঁড়াইয়া যোড়হাতে পাপিগণ এইরূপে আমার স্তবস্তুতি করিতেছে, এমন সময় নারায়ণ, এঁড়ে গরু, যম ও চিত্রগুপ্ত সেই স্থলে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। নারায়ণকে দেখিয়া সসন্ত্রমে আমি উঠিয়া দাড়াইলাম। ভক্তিভাবে তাহার পায়ে গিয়া পড়িলেন। S8 দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comশ্মির্ত্য"ক "********