পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বড় পুত্র জীবিত নাই, কনিষ্ঠ পুত্ৰ দেশত্যাগী হইয়াছে। বিধবা পুত্রবধূ ও পৌত্রকে তিনি তাড়াইয়া দিলেন। রায় মহাশয়ের সংসার শূন্য বােধ হইল। কতক রাগে, কতক মনের খেদে, তিনি পুনরায় বিবাহ করিতে ইচ্ছা করিলেন। তাহার বয়স এক্ষণে ষাটি বৎসরেরও অধিক। কিন্তু টাকায় কি না হয়? নিকটস্থ একখানি গ্রামে চতুৰ্ভুজ হােড় নামক এক ব্যক্তি বাস করিতেন। কন্যা বিক্রয় করিয়া অনেক অর্থলাভ করিবেন, এইরপ আশা করিয়া, কন্যাকে তিনি বড় করিতেছিলেন। অনেক টাকা দিয়া রায় মহাশয় তাহার পনের বৎসর বয়স্ক কন্যাকে বিবাহ করিলেন। হাড় মহাশয়কে কেবল যে তিনি নগদ টাকা দিলেন তাহা নহে, তাহার কন্যাকে প্রচুর অলঙ্কার প্রদান করিলেন!! কন্যার যদি পুত্ৰ হয়, তাহা হইলে তাঁহাকেই সমুদয় সম্পত্তি দিয়া যাইবেন, সেইরূপ অঙ্গীকার করিলেন!! আর সপরিবার হাড় মহাশয়কে চিরকাল প্ৰতিপালন করিতেও স্বীকৃত হইলেন। সেজন্য বিবাহের পর কন্যার পিতা হাড় মহাশয়, কন্যার মাতা, কন্যার ভ্রাতা বৃন্দাবন ও ভ্রাতার স্ত্রী সকলে আসিয়া রায় মহাশয়ের বাটিতে বাস করিতে লাগিলেন। রায় মহাশয়ের সংসার পুনরায় জাজ্বল্যমান হইল। কিন্তু বিধাতা কপালে সুখ না লিখিলে সুখ হয় না। একবৎসর পরে, ঠিক পূজার পূৰ্ব্বে, রায় মহাশয়ের নববিবাহিতা পত্নী সহসা রোগগ্ৰস্ত হইয়া ইহলীলা সম্বরণ করিলেন। রায় মহাশয়ের পুনরায় গৃহশূন্য হইল। পত্নীর পরলোক হইল বটে, কিন্তু হড়বংশ রায় মহাশয়ের বাটীতে বাস করিতে লাগিলেন। মনের দুঃখে রায় মহাশয় বলিলেন যে,- “আমার পুত্ৰ, পুত্রবধূ, কেহই আমার অসময়ে মুখপানে চাহিয়া দেখিল না । পুত্ৰ, অথবা পৌত্রকে আমি আমার আমার সমুদয় সম্পত্তি দিয়া যাইব ।” SNర్ এই কথা শুনিয়া হড়বংশের মন পুলবি সকলে একান্ত মনে রায় মহাশয়ের সেবা-শুশ্ৰুষা করিতে লাগিলেন। রায় মহাশয় বললেন বটে, কিন্তু কীিয়াব কখন কাহাকেও তিনি ভালবাসিয়া থাকে বিনয়ও পিতামহকে অন্তরের সহিত ভালবাসিত। হাড়গণ যে নিতান্ত স্বার্থপর, রায় মহাশয় তাহা বিলক্ষণ বুঝিয়াছিলেন। তাঁহার টাকা পাইবার লোভে তাহারা যে তাঁহার আজ্ঞাকারী হইয়া আছে, তাহাদের মনে যে অনুমাত্র স্নেহ-মমতা নাই, তাহাও তিনি জানিতেন। সেজন্য সৰ্ব্বদাই তাঁহার মন উদাস থাকিত। শিশু বিনয় ভিন্ন পৃথিবীতে আর কোন প্রাণী যে তাঁহাকে ভালবাসে না, এই বৃদ্ধবয়সে সৰ্ব্বদাই তাঁহার মনে সেই চিন্তা উদয় হইত। সংসার সর্বদাই তিনি শূন্য দেখিতেন। বৃদ্ধবয়সে মানুষ যখন পৃথিবীর সমুদয় সুখ হইতে বঞ্চিত হয়, তখন আত্মীয়স্বজনের স্নেহ-মমতায় মানুষ অনেক পরিমাণে শান্তিলাভ করে। রায় মহাশয় দােল-দুর্গোৎসব করেন বটে, কিন্তু প্ৰকৃত ঈশ্বরে ভক্তি তাঁহার ছিল না। ঈশ্বরে একান্ত বিশ্বাসজনিত যে শান্তি, সে শান্তির আস্বাদ তিনি একেবারেই জানেন না। তাহার পর এত টাকা থাকিতেও সাংসারিক সুখ তাঁহার একেবারেই নাই। দ্বিতীয় পত্নী বিয়োগের পর একবৎসরকােল তিনি অতি দুঃখে কাটাইলেন। তাহার পর বিনয়কে কাছে আনিতে তাঁহার নিতান্ত ইচ্ছা হইল। হাড়গণ এ প্রস্তাবে যতদূর সাধ্য আপত্তি করিলেন। কিন্তু রায় মহাশয় তাহাদের কথা শুনিলেন না। তিনি বিনয়কে আনিতে পাঠাইলেন। কিন্তু পুত্রবধূকে পুত্র গৃহত্যাগী হইয়াছে, সে পুত্রবধূর মুখ আমি দেখিব না। ኢኃobr fing <nž3. g3 ze! A www.amarboi.comfo%3"*"***"****