পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আনার অধিক লাভ করিব না।” কিন্তু ফলে তাঁহাকে বিলক্ষণ ঠকাইতাম। আমি ব্যবসাদারের চাকর ছিলাম। দোকানদারের রীতি এই। আলাপী লোকেরা আমাদিগকে বিশ্বাস করে, আলােপী লোককে ঠকাইতে দোকানদারের বিলক্ষণ সুবিধা হয়। বড়বাজারে বসিয়া প্রতিদিন হাজার হাজার মিথ্যাকথা বলিতাম; শত শত লোককে আমরা ঠিকাইতাম। না ঠিকাইলে আমাদের কাজ চলে না। এই সূত্রে সরকেল মহাশয়ের সহিত আমার আলাপ-পরিচয় হইয়াছিল। সরকেল মহাশয়ের একটু জমিদারী আছে, তাহা ব্যতীত তিনি তেজাঁরতি করেন। আমি ভাবিলাম যে, তাহার নিকট হইতে এক হাজার টাকা ঋণ গ্ৰহণ করিয়া আমি আমার আবাদের পতিত ভূমি উঠিত করিব। এইরূপ মনে করিয়া আমি সরিকেল মহাশয়ের ভবনে গমন করিলাম। আবাদ বাধা রাখিয়া তাহার নিকট এক হাজার টাকা ঋণ চাহিলাম। তিনি বলিলেন যে, “আব্বাদ না দেখিয়া টাকা দিতে পারি না।” একজন গোমস্তাকে আমার আবাদ দেখিতে পাঠাইলেন। সাতদিন পরে পুনরায় আমাকে যাইতে বলিলেন। এই সময় আমি দেখিলাম যে, সেই গ্রামে দুইজন সন্ন্যাসী আসিয়াছেন। সরকেল মহাশয়ের বাড়ীর বাহিরে তাহারা আডিডা গাড়িয়াছেন। তাহদের সহিত তিনটি ঘোড়া ও বৃহৎ এক প্রস্তরনিৰ্ম্মিত কালীর প্রতিমা আছে। দিনের মধ্যে তিনবার শঙ্খ ও শিঙ্গা বাজাইয়া তাহারা দেবীর পূজা করেন। সমস্ত দিন অনেক লোক আসিয়া প্রতিমা দর্শন কর। খুব ধুম। যে পৰ্যন্ত সন্ন্যাসী মহাশয়েরা এই গ্রামে আসিয়াছেন, সেই পৰ্যন্ত সরকেল মহাশয় তাহদের সমুদয় ব্যয়নিকর্ধাহ করিতেছেন। ইহােৱ অনেক বৎসর পরে আমি নিজে সন্ন্যাসী-মাহাত্ম্য সম্বন্ধে তখন যদি কিছু অভিজ্ঞতা তাহা হইলে সরকেল মহাশয়কে সাবধান করিতাম । (ề সাতদিন পরে পুনরায় আমি র বাটী গমন করিলাম। সন্ধ্যাবেলা পৌছিলাম। সেজন্য টাকা-কড়ি সম্বন্ধে কোন কথাবাৰ্ত্ত হইল না। সরকেল মহাশয়ের দুই মহল কোটাবাড়ী। পূৰ্ব্বদিকে র, পশ্চিমদিকে সদরবাটী! সদরবাটীর উত্তরদিকে অভিভূত হইয়া পড়িলাম। রাত্রি বােধ হয় তখন একটা, এমন সময় ভিতরবাড়ীতে দুমৃদুম করিয়া শব্দ হইতে লাগিল। আমার নিদ্ৰাভঙ্গ হইল। ডাকাত পড়িয়াছে মনে করিয়া আমি উঠিয়া বসিলাম। কিন্তু লোকের সাড়া-শব্দ কিছুই পাইলাম না। শব্দটাও ডাকাতপাড়া শব্দের ন্যায় নহে। আমার বোধ হইল, যেন একটা ভারী বস্তু এক সিঁড়ি হইতে অপর সিঁড়িতে সবলে লাফাইয়া উপরতলা হইতে নীচের তলায় নামিতেছে। প্রথম মনে করিলাম যে, সরকেল মহাশয় বুঝি কোন বস্তু এই প্রকারে উপর হইতে নীচে আনিতেছেন। রথের সময় পুরুষোত্তমে জগন্নাথের কোমরে দড়ি বাধিয়া উড়ে পাণ্ডারা যেরূপ মন্দিরের এক পৈঠা হইতে অপর পৈঠায় নামায়, সরকেল মহাশয় বুঝি সেইরূপ কোন ভারী বস্তু নামাইতেছেন। কিছুক্ষণ পরে বাড়ীর ভিতর কোলাহল পড়িয়া গেল। সরকেল মহাশয় চীৎকার করিয়া বলিলেন যে, টাকাকড়িপূর্ণ তাঁহার লোহার সিন্দুক কে লইয়া যাইতেছে। তাহার পর স্ত্রীলোকেরা চীৎকার করিয়া বলিল যে, ভূতে লোহার সিন্দুক লইয়া যাইতেছে। আমি স্বচক্ষে দেখি নাই, কিন্তু পরে শুনিলাম যে, সিন্দুক আপনা। আপনি সিঁড়ির এক পৈঠা হইতে অপর পৈঠায় নামিতেছিল। লোহার সিন্দুক যখন উপর হইতে নীচে নামিতেছিল, তখন সরকেল মহাশয় একবার তাহার আংটা ধরিয়াছিলেন। পরমুহুৰ্ত্তে পায়ের উপর লোহার সিন্দুক পড়িয়া তাঁহার পা Essge sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro ኬro“ሳ