পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য Sob তাদের অস্তিত্ব আর পরস্পর-বিরোধী হয়ে নেই, তাদের একটি অপরটিকে কলঙ্কিত করে দেয় নি। আনন্দের ফিরে আসতে দেরী হয়। হেরম্বের ব্যাকুল অন্বেষণ তার দেহকে অস্থির করে দেয়। বিছানা থেকে নেমে সে ঘরের মধ্যে পায়চারী আরম্ভ করে। এদিকের দেয়াল থেকে ওদিকের দেয়াল পৰ্যন্ত হেঁটে যায়, থমকে দাঁড়ায় এবং প্রত্যাবৰ্ত্তন করে। তিনটি খোলা জানালা প্ৰত্যেকবার তার চোখের সামনে জ্যোৎস্নাপ্লাবিত পৃথিবীকে মেলে ধরে। কিন্তু হেরম্বের এখন উপেক্ষা অসীম। সম্মুখের সুদূর সাদা। দেয়ালটির আধহাতের মধ্যে এসে সে গতিবেগ সংযত করে, আর কিছুই দেখতে পায় না। মেঝেতে আনন্দের পরিত্যক্ত একটি ফুল তার পায়ের চাপে পিষে যায় । হেরম্ব জানে, আলো এই অন্ধকারে জ্বলবে। তাকে চমকে না দিয়ে। বিনা আড়ম্বরে তার হৃদয়ে পরম সত্যটির আবির্ভাব হবে। তার সমস্ত অধীরতা অপমৃত্যু লাভ করবে না, ঘুমিয়ে পড়বে। জীবনের চরম জ্ঞানকে সুলভ ও সহজ বলে জেনে সে তখন ক্ষুন্ন অথবা বিস্মিত পৰ্য্যন্ত হবে না । কিন্তু তার দেরী কত ? ফিরে এসে তার চাঞ্চল্য লক্ষ্য করে আনন্দ অবাক হয়ে গেল। কিন্তু, কথা বলল না । বিছানার একপাশে বসে তার অস্থির পদচারণাকে দৃষ্টি দিয়ে অনুসরণ করতে লাগল। হেরম্ব বহুদিন হল তার চুলের যত্ন নিতে ভুলে গেছে। তবু তার চুলে এতক্ষণ যেন একটা শৃঙ্খলা ছিল। এখন তাও নেই। তাকে পাগলের মত চিন্তাশীল দেখাচ্ছে। আনন্দের সামনে এমনিভাবে সে যেন কত যুগ ধরে ক্ষ্যাপার মত অসংলগ্ন পদ