পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

rs o Գ দিবারাত্রির কাব্য -থাকলে তাদের প্ৰেম অল্পদিনের মধ্যে মরে যেত, আপনি কি করে জানলেন বলুন।” হেরম্ব এটা আশা করে নি। লজ্জা না করার অভিনয় করতে আনন্দের যে প্ৰাণান্ত হচ্ছে, এটুকু ধরতে না পারার মত শিশুচোখ হোরম্বের নয়। একবার মরিয়া হয়ে সে এ প্রশ্ন করছে, তার সম্বন্ধে এই সুস্পষ্ট ব্যক্তিগত প্রশ্নটা । তার এ সাহস অতুলনীয়। কিন্তু প্রশ্নটা চাপা। দিয়েও আনন্দের সরম-তিক্ত অনুসন্ধিৎসাকে চাপা দেওয়া গেল না দেখে হেরম্ব অবাক হয়ে রইল । ‘বুদ্ধি দিয়ে জানলাম।” হেরম্ব এই জবাব দিল । “শুধু বুদ্ধি দিয়ে ?” “শুধু বুদ্ধি দিয়ে, আনন্দ। বিশ্লেষপ করে।” আনন্দের বালিশ থেকে সদ্য-আবিস্কৃত লম্বা চুলটির একপ্রান্ত আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরে ফু দিয়ে উড়িয়ে সেটিকে হেরম্ব সোজা করে রাখল। ‘জল খেয়ে আসি ৷” বলে আনন্দ গোল পালিয়ে । হেরম্ব তখন ত্যাবার ভাবতে আরম্ভ করল যে কোন অজ্ঞাত সত্যকে আবিস্কার করতে পারলে তার হৃদয়ের চিরন্তন পরাজয়, জয়-পরাজয়ের স্তরচুত্যুত হয়ে সকল পার্থিব ও অপার্থিব হিসাবনিকাশের অতীত হয়ে যেতে পারে । চোখ দিয়ে দেখে, স্পর্শ দিয়ে অনুভব করে, বুদ্ধি দিয়ে চিনে ও হৃদয় দিয়ে কামনা করে, মৰ্ত্ত্যলোকের যে-আত্মীয়তা আনন্দের সঙ্গে তার স্থাপিত হওয়া সম্ভব, আত্মার অতীন্দ্ৰিয় উদাত্ত আত্মীয়তার সঙ্গে তার তুলনা কোথায় রহিত হয়ে গেছে। কোন হৃদ্য যুক্তি, সীমারেখার মত, এই দুটি মহাসত্যকে এমন ভাবে ভাগ করে দিয়েছে যে,