পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জলের সমুদ্র নয়, আরও উন্মাদ হৃদয়-সমুদ্রের কলরবে মাঝরাত্রি পার না হলে হেরম্বের ঘুম আসে না। তবু আজ প্ৰত্যুষেই তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঘুমের প্রয়োজন আছে কিন্তু ঘুম আসবে না, শুয়ে শুয়ে সে কষ্ট ভোগ করার চেয়ে উঠে বসে চুরুট ধরানোই হেরম্ব ভাল মনে করল। কাল গিয়েছে কৃষ্ণাচতুৰ্দশীর রাত্ৰি। আনন্দের পূর্ণিমা-নৃত্যের পরবর্তী অমাবস্যা সম্ভবতঃ আজ দিনের বেলাই কোন এক সময়ে সুরু হয়ে যাবে। হেরম্ব উঠে গিয়ে জানালায় দাড়ায় । গাছের ফ্যাক দিয়ে দেখা যায়। • বাগানের অপর প্রান্তে আনন্দ ফুল তুলছে। দেখে হেরম্বের খুলী হয়ে ওঠার কথা, কিন্তু আগামী সমস্ত দিনটির কল্পনায় সে বিষন্ন হয়েই থাকে । দিনের বেলাটা এখানে হেরম্বের ভাল লাগে না । উৎসবের পর সামিয়ানা নামানোর মত নিরুৎসব কৰ্ম্ম-পদ্ধতিতে সারাদিন এখানকার সকলে ব্যাপৃত হয়ে থাকে, হেরম্বের সুদীর্ঘ সময় বিরক্তিতে পূর্ণ হয়ে যায়। সকালে মন্দিরে হয়। ভক্ত-সমাগম । লাল চেলী পরে কপালে রক্তচন্দনের তিলক একে মালতী তাদের বিতরণ করে পুণ্য, অভয় চরণামৃত এবং মাদুলী। চন্দন ঘষে, নৈবেদ্য সাজিয়ে প্ৰদীপ জেলে ও ধূপধুনো দিয়ে আনন্দ মাকে সাহায্য করে, হেরম্বকে খেতে দেয়,