পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবারাত্রির কাব্য SV) “চুপ কর।” হেরম্বকে তীব্র ধমক দিয়ে আনন্দ কেঁদে ফেলল। ধমকের চেয়ে আনন্দের কান্না আরও তীব্র তিরস্কারের মত হেরম্বকে আঘাত করল । আনন্দ তো কবি নয় । মেয়েরা কখন কবি হয় না। পৌরুষ ও কবিত্ব একধৰ্ম্মী। নিখিল মানবতার মধ্যে নিজেকে ছড়িয়ে দিয়ে স্তব্ধ হৃদয়ের একদা-রাণিত ধবনির প্ৰতিধ্বনিকে সে কখনও খুজে বেড়াতে পারবে না। জগতে তার দ্বিতীয় প্রতিরূপ নেই, সে বৃহতের অংশ নয় ; সে সম্পূর্ণ এবং ক্ষুদ্র । যে বংশপ্ৰবাহ মানবতার রূপ, সে তা বোঝে না । অতীত ভবিষ্যতের ভারে তার জীবন পীড়িত নয়, সার্থকও নয় । সৃষ্টির অনন্ত সুত্রে সে গ্ৰন্থির মত বিগত ও অনাগতকে নিজের জোরে যুক্ত করে রাখে না। পৃথিবী যেমন মানুষের জড় দেহকে দাড়াবার নির্ভর দেয়, মানুষের জীবনকে এরা তেমনি আশ্রয় যোগায়। পৃথিবী জুড়ে হেরম্বের আত্মীয় থাক, আনন্দের কেউ নেই। সে একা । অনেকক্ষণ কারো মুখে কথা ছিল না। নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করে প্রথম কথা বলার সাহস কার হােত বলা যায় না। এমন সময় হঠাৎ মালতীর তীব্ৰ আৰ্ত্তনাদ শোনা গেল । হেরম্ব চমকে বলল, ‘ওকি ?” “মা বুঝি ডাকিল৷ ” বারান্দায় গিয়ে হেরম্ব বুঝতে পারল, ব্যাপার। যাই ঘটে থাক অনাথের ঘরে ঘটেছে। ঘরে ঢুকে সে দেখল, অনাথ অজ্ঞান হয়ে