পাতা:দীনবন্ধু গ্রন্থাবলী.djvu/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

jo দীনবন্ধু-গ্ৰস্থাবলী করিতে আরম্ভ করিলে কুঠিয়াল সাহেবরা অর্থবশীকৃত “বুনো” ও লাঠিয়ালদের দ্বারা শক্তিপ্রয়োগে প্রজাদিগকে পীড়ন করিতেন। এই ভাবে নীলকরদের অত্যাচার আরম্ভ হইয়া উনবিংশ শতাব্দীর সূত্রপাত হইতেই তাহ দরিদ্র প্রজাদের পক্ষে ভয়াবহ আকার ধারণ করে । স্ব স্ব ন্যায্য অধিকার দাবি করিতে গিয়া বহু প্রজা ভিটেমাটি সহ উচ্ছন্ন এবং তাহাদের সমর্থক বহু বৰ্দ্ধিষ্ণু গ্রামবাসী অকারণে কুঠিতে কয়েদ হইয়া বিপন্ন হয় । শক্তিমদমত্ততাজনিত এই অত্যাচারে নিতান্ত নিরীহ প্রজাদেরও ধৈৰ্য্যের সীমা ছাড়াইয়া যায়। স্থানীয় ইংরেজ ম্যাজিষ্ট্রেটর অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঘুষ এবং অন্যান্ত কারণে কুঠিয়ালদেরই পক্ষ অবলম্বন করাতে ন্যায়বিচার হয় নাই । ফলে নীলকরদের পীড়ন অবাধে চলিতে থাকে । ‘নীল-দৰ্পণ’ এই পীড়নেরই নিখুত চিত্র। বঙ্কিমচন্দ্ৰ-লিখিত দীনবন্ধু-জীবনীতে “নীল-দৰ্পণ” প্রসঙ্গ যাহা আছে, তাহা নিয়ে উদ্ধত হইল— উড়িষ্যা বিভাগ হইতে দীনবন্ধু নদীয়া বিভাগে প্রেরিত হয়েম, এবং তথা হইতে ঢাকা বিভাগে গমন করেন। এই সময়ে নীলবিষয়ক গোলযোগ উপস্থিত হয়। দীনবন্ধু নানা স্থানে পরিভ্রমণ করিয়া নীলকরদিগের দৌরাত্ম্য বিশেষরূপে অবগত হইয়াছিলেন । তিনি এই সময়ে "নীল-দৰ্পণ” প্রণয়ন করিয়া বঙ্গীয় প্রজাদিগকে অপরিশোধনীয় ঋণে বদ্ধ করিলেন । দীনবন্ধু বিলক্ষণ জানিতেন, যে, তিনি যে নীল-দর্পণের প্রণেতা, এ কথা ব্যক্ত হইলে, তাহার অনিষ্ট ঘটিবার সম্ভাবন । যে সকল ইংরেজের অধীন হইয়া তিনি কৰ্ম্ম করিতেন, তাহার। নীলকরের সুহৃদ। বিশেষ, পোষ্ট আপিসের কাৰ্য্যে নীলকর প্রভৃতি অনেক ইংরেজের সংস্পর্শে সৰ্ব্বদা অালিতে হয় । তাহারা শত্রুতা করিলে বিশেষ অনিষ্ট করিতে পারুক না পারুক