পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
দুই বোন

নাচিয়ে বেড়িয়েছে। সে বলত, “আমার যখন সময় আসবে, তখন এই সামাজিক পৌত্তলিকতা ভাঙবার জন্যে কালাপাহাড়ি করতে বেরােব।” সময় হােলো না কিন্তু ঊর্মির মনকে খুবই সজীব করে রেখে দিয়ে গেছে।


 মুশকিল বাধল এই নিয়ে। নীরদের কার্যপ্রণালী অত্যন্ত বিধিবদ্ধ। ঊর্মির জন্যে পাঠ্যপর্যায়ের বাঁধা নিয়ম করে দিলে। ওকে উপদেশ দিয়ে বললে, “দেখাে ঊর্মি, মনটাকে পথে চলতে চলতে কেবলি চলকিয়ে ফেলো না, পথের শেষে যখন পৌছবে তখন ঘড়াটাতে বাকি থাকবে কী।”

 বলত, “তুমি প্রজাপতির মতাে, চঞ্চল হয়ে ঘুরে বেড়াও, কিছুই সংগ্রহ ক’রে আনাে না। হোতে হবে মৌমাছির মতাে। প্রত্যেক মুহূর্তের হিসেব আছে। জীবনটা তাে বিলাসিতা নয়।”

 নীরদ সম্প্রতি ইম্পীরিয়াল লাইব্রেরি থেকে শিক্ষাতত্ত্বর বই আনিয়ে পড়তে আরম্ভ করেছে, তাতে এই রকম সব কথা আছে। ওর ভাষাটা বইয়ের ভাষা, কেননা, ওর নিজের সহজ ভাষা নেই। ঊর্মির সন্দেহ