না। তবে সুজার জননী রুকিনা বিবি বলিলেন— আমার পুত্রের জন্মোৎসবের স্মৃতিচিহ্ণ স্বরূপ, তিনি আমায় এই বহুমূল্য উপহার দিয়াছেন।”
জামাল খাঁ—বিস্মিত চিত্তে বলিলেন—“কোথায় সে রত্নহার?”
আনার উন্নিসা তাহার পেটিকা মধ্য হইতে সেই হার বাহির করিয়া, তাহার পিতার সম্মুখে ধরিল।
রত্ন বিচারে বৃদ্ধ জামাল খাঁর একটা পূর্ব্ব সঞ্চিত অভিজ্ঞতা ছিল। তিনি দুই চারি বার সেই হার ছড়াটী নাড়াচাড়া করিবার পর বুঝিলেন—সত্যই সে হারের খুব কিম্মত আছে।
কন্যার মত, জামাল খাঁও এই বহুমূল্য উপহারের ভিতরের রহস্যটী বুঝিতে না পারিয়া, একটু চিন্তান্বিত হইলেন। কিন্তু তখন তাঁহার সে চিন্তা চাপিয়া রাখিয়া তিনি বলিলেন—“ভালই হইয়াছে! কখন যে কাহার উপর খোদার সুনজর পড়ে, তাহা বোঝা বড়ই কঠিন! তাহা না হইলে, অন্যান্য নিমন্ত্রিতেরা যে উৎসব স্থলে একটী করিয়া অঙ্গুরীয় উপহার পাইয়াছে, সে স্থলে তোমার সম্বন্ধেই বা এরূপ স্বতন্ত্র ব্যবস্থা ঘটিল কেন? এ দান অবশ্য রুকিনা বিবির হাত দিয়া আসিয়াছে। কিন্তু প্রকৃত দাতা—সেই মহিমময় বিধাতা।”
আনার, স্থিরচিত্তে তাহার পিতার এই কথাগুলি শুনিল। সেও তাহার পিতার মত এই রত্নহারের কথাই তখন মনেমনে আলোচনা করিতেছিল। আনার তাহার পিতাকে সহসা সেই কক্ষ ত্যাগ করিয়া চলিয়া যাইতে উদ্যত দেখিয়া বলিল—“বাবা!
১১