পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- ধৰ্ম্মতত্ত্ব يفه প্ৰহলাদ বলিলেন, “যাহা শিখিয়াছি তাহার সার এই যে, র্যাহার আদি নাই, অস্ত নাই, মধ্য নাই—যাহার বৃদ্ধি নাই, ক্ষয় নাই—যিনি অচ্যুত, মহাত্মা, সৰ্ব্ব কারণের কারণ, র্তাহাকে নমস্কার ।” শুনিয়া বড় ক্রুদ্ধ হইয়া হিরণ্যকশিপু আরক্ত লোচনে, কম্পিতীধরে প্রস্তাদের গুরুকে ভৎসনা করিলেন। গুরু বলিল, “আমার দোষ নাই, আমি এ সব শিখাই নাই ।” তখন হিরণ্যকশিপু প্রস্কাদকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তরে কে শিখাইল রে ” প্রহ্নাদ বলিল, “পিতঃ ! যে বিষ্ণু এই অনন্ত জগতের শাস্ত, যিনি আমার হৃদয়ে স্থিত, সেই পরমাত্ম৷ ভিন্ন আর কে শিখায় ?” হিরণ্যকশিপু বলিলেন, “জগতের ঈশ্বর আমি ; বিষ্ণু কে রে দুৰ্ব্বদ্ধি।” প্ৰহলাদ বলিল, “ধাহার পরংপদ শব্দে ব্যক্ত করা যায় না, র্যাহার পরংপদ যোগীরা ধ্যান করে, যাহা হইতে বিশ্ব, এবং যিনিই বিশ্ব, সেই বিষ্ণু পরমেশ্বর ” হিরণ্যকশিপু অতিশয় ক্রুদ্ধ হইয়া বলিল, “মরিবার ইচ্ছা করিয়াছিস্ যে পুনঃ পুন: এই কথা বলিতেছিস্ ; পরমেশ্বর কাহাকে বলে জানিস্ না ? আমি থাকিতে আবার তোর পরমেশ্বর কে ?” নিভাক প্রহসাদ বলিল, “পিতঃ, তিনি কি কেবল আমারই পরমেশ্বর। সকল জীবেরও তিনিই পরমেশ্বর,—তোমারও তিনি পরমেশ্বর, ধাতা, বিধাতা, পরমেশ্বর। রাগ করিও না, প্রসন্ন হও ।” হিরণ্যকশিপু বলিল, “বোধ হয়, কোন পাপাশয় এই ছৰ্ব্বদ্ধি বালকের হৃদয়ে প্রবেশ করিয়াছে।” প্রহ্লাদ বলিল, “কেবল আমার হৃদয়ে কেন ? তিনি সকল লোকেতেই অধিষ্ঠান করিতেছেন। সেই সৰ্ব্বস্বামী বিষ্ণু, আমাকে, তোমাকে, সকলকে, সকল কৰ্ম্মে নিযুক্ত করিতেছেন।” এখন, সেই ভগবদ্বাক্য স্মরণ কর। “যতাত্মা দৃঢ়নিশ্চয়ঃ ** দৃঢ়নিশ্চয় কেন তাহা বুঝিলে ? সেই “হর্ষামৰ্ষভয়োদ্বেগৈমুক্তো য: স চ মে প্রিয়ঃ” স্মরণ কর। এখন, ভয় হইতে মুক্ত যে ভক্ত, সে কি প্রকার তাহা বুঝিলে ? “ময্যৰ্পিতমনোবুদ্ধিঃ” কি বুঝিলে ? + ভক্তের সেই সকল লক্ষণ বুঝাইবার জন্ত এই প্রহ্নাদচরিত্র কহিতেছি। সন্তুষ্ট: সততং ৰোগী যতাত্মা দৃঢ়নিশ্চয় । মধ্যৰ্পিতমনোবুদ্ধিৰ্বে মদ্ভক্ত: স মে প্রিয়।