পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&8 ! नन्न-कl । . আমাদের দেশে যে ছেলের কিছু হবার নয়। তাকে আর্টস্কুলে। পাঠানো হয়; এবং ঐ একই কারণে যুক্তি যখন অন্য কোন দাড়াবার স্থান না পায় তখন তা আর্টের নিকট গিয়ে আশ্রয় গ্ৰহণ করে । ধৰ্ম্মসম্বন্ধে আলোচনায় “আমি বিশ্বাস করি”-এ কথার উপর যেমন আর কোন কথা চলে না ; আর্ট সম্বন্ধে আলোচনায় “আমার চোখে সুন্দর লাগে” এ কথার উপরও তেমনি আর কোন কথা চলে না। সৌন্দৰ্য অনুভূতির বিষয়-জ্ঞানের বিষয় নয়। ন্যায়শাস্ত্ৰ অনুসারে তার প্রমাণ দেওয়া যায় না। অতএব যিনি আর্ট জিনিষটা অপরকে যত কম বোঝাতে পারেন, নিজে তিনি তত বেশী বোঝেন। ধৰ্ম্মসম্বন্ধে বিশ্বাস অন্ধ হলেও সম্ভবত লোক ধৰ্ম্মজ্ঞ হতে পারে, কিন্তু রূপসম্বন্ধে অন্ধ হয়ে লোকে সৌন্দৰ্য্যজ্ঞ হতে পারে না। কারণ সৌন্দৰ্য স্ব-প্রকাশ। সৌন্দর্ঘ্যের পরিচয় এবং অস্তিত্ব উভয়ই কেবলমাত্ৰ প্ৰকাশের উপর নির্ভর করে। সেই পদার্থকে আমরা সুন্দর বলি, যার স্বরূপ পূৰ্ণব্যক্ত হয়েছে। রূপ হচ্ছে বিশ্বের ভাষা, এবং সৌন্দৰ্য সৃষ্টির শেষ কথা। প্রকৃতিও বৃথায় কিছু করেন না, মানুষেও বিনা উদ্দেশ্যে কোনও পদার্থে হাত দেয় না। যা মানবজীবনের পক্ষে আবশ্যকীয়, মানুষে তাই হাতে গড়ে; সেই গঠনকাৰ্য্যের সার্থকতা এবং কৃতাৰ্থতার নামই আৰ্ট। নিরর্থক দ্রব্য সুন্দর হয় না। আবশ্যকতার বিরহে সৌন্দৰ্য্য শুকিয়ে মারা যায়। সুতরাং যে জাতির পক্ষে যে সকল জিনিষ জীবনযাত্রার জন্যে আবশ্যকীয় নয়, সে জাতির পক্ষে সে সকল জিনিষের সৌন্দৰ্য উপলব্ধি করা কঠিন। আর্ট একটি স্মৃষ্টিপ্রকরণ, একটি ক্রিয়া মাত্র, সুতরাং আর্টের প্রাণ কৰ্ত্তার। হাতে এবং মনে, ভোক্তার চোখে এবং কাণে নয়।