পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নির্বাসিতের আত্মকথা سC)}g\ আসিয়া বলিল—“দাদা, পেটের জ্বালাতেই মরে গেলুম। কাল সমৰু দিন পেটে ভাত পড়ে নি। দুপুর বেলা শুধু দুটা মুড়ি খেতে দিয়েছিল। বারীন্দ্র লাফাইয়া উঠিল। কাছেই ইন্সপেক্টর বিনোদ গুপ্ত দাড়াইয়াছিলেন ; তঁহাকে বলিল-“বাপু, আমাদের ফাঁসি মাসি যা কিছু দিতে হয় দাও ; ছেলে গুলোকে এমন ক’রে দগ্ধাচ্ছ কেন ?” বিনোদ গুপ্ত তাড়াতাড়ি-“এই ইয়া ল্যাও, উয়া ল্যাও” করিয়া একটা সৰইন্সপেক্টর বাবুর উপর খাবার আনিবার জন্য হুকুম চালাইলেন, সৰ, ইন্সপেক্টর বাবুঢ়ী হেড কন্সটেবল ও হেড কন্সটেবলটী একজন অভাগ৷ কন্সটেবলের উপর হুকুম জাহির করিয়া সরিয়া পড়িলেন। ফলে পুন: পুনঃ তাগাদায় এক গ্লাস জল ভিন্ন আর কিছু আসিয়া পৌছিল না। বিনোদ গুপ্তকে সে কথা জানাইলে তিনি একটা কাল্পনিক কন্সটেবলের উপর ভাটার মত চক্ষু রক্তবর্ণ করিয়া অজস্র গালিবর্ষণ করিতে করিতে কোথায় যে অন্তহিত হইলেন তাহা আমরা খুজিয়াও পাইলাম না। পুলীস কোর্টের লীলা সাঙ্গ হইবার পর আমাদের গাড়ীতে পুরিয়া আলিপুরের ম্যাজিষ্ট্রেটের কোটে হাজির করা হইল। ন্যায়তঃ ধৰ্ম্মতঃ আমি স্বীকার করিতে বাধ্য যে রাস্তায় পুলিস কৰ্ম্মচারীরা আমাদের দুই খানা করিয়া কচুরী, ও একটা করিয়া সিঙ্গাড়া খাইতে দিয়াছিলেন, এমন কি ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের কাছে statement করিবার সময় গল যাহাতে না শুকাইয়া যায় সেইজন্য কাহাকে কাহাকেও এক এক গ্লাস জল পৰ্য্যন্ত দিয়াছিলেন। তবে সেটা ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের নিকট ধমক খাইবার পর । কোর্টে গিয়া দেখিলাম ম্যাজিষ্ট্রেট বার্লি ( Birley ) সাহেব বিকট বদনে উঁচু তত্তের উপর বসিয়া আছেন। মুখ খানি যেন সাদা মাবেল পাথর দিয়া বাধান। দেখিলে মনে হয় যেন একটী মূৰ্ত্তিমান শাসন যন্ত্র।