পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
নেপালে বঙ্গনারী।

সেই কথা বলিতে পারি। এইরূপ পতিপ্রাণ নারী দরিদ্রের কুটীরে অতুল শোভা বিস্তার করে, রাজগৃহে কি কথা? এই মহীয়সী সৌভাগ্যশালিনী অশেষ গুণসম্পন্না মহিলার জীবন রমণীকুলের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্বরূপ বলিয়া আমরা সাধারণের নিকট এই মোহন চিত্র উপস্থিত করিতেছি। হিন্দু রমণীর ধমনীতে আজও সীতা সাবিত্রীর পবিত্র শোণিত কিরূপে প্রবাহিত হইতেছে তাহা পাঠক পাঠিকা একবার দর্শন করুন।

 মহারাজ চন্দ শামসের রাণা বাহাদুর সুবিখ্যাত জঙ্গরাণা বাহাদুরের ভ্রাতুষ্পুত্র—তিব্বতের যুদ্ধে প্রসিদ্ধ বীর ধীরশমসেরের পুত্র। বর্ত্তমান সময়ে এই রাণা বংশই নেপালের সর্ব্বোচ্চ স্থান অধিকার করিয়া আছেন। আমরা যাঁহার কথা বলিতে যাইতেছি তিনি মহারাজ চন্দ্র শামসের রাণা বাহাদুরের একমাত্র মহিষী ছিলেন। নেপালে বহু পত্নী গ্রহনের রীতি প্রচলিত আছে কিন্তু মহারাজ চন্দ্র শামসের রাণা বাহাদুর বোধ হয় ইহার এক মাত্র ব্যতিক্রম স্থল। তাঁহার গুণবতী পত্নী সম্পূর্ণরূপে তাঁহার পতির হৃদয় অধিকার করিয়াছিলেন, যে দিন তাঁহাকে সমুদয় নেপালের মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা ভাগ্যবতী রমণী বলিয়া দর্শন করিতে যাই সে দিন তাঁহার মুখেই শুনিয়াছি—“আমি সমুদয় নেপালের মধ্যে সৌভাগ্যবতী রমণী সন্দেহ নাই, কারণ বিধাতা যে শুধু আমাকে এমন পতি দিয়াছেন তাহা নহে, আমি আমার পতির একমাত্র মহিষী,—এ সৌভাগ্য আমার অন্য স্বদেশীয়া ভগিনীগণের নাই,— কন্যা অপেক্ষা পুত্রেরই এদেশে অধিক সমাদর, বিধাতা আমাকে