পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা পূর্ববঙ্গ গীতিকার দ্বিতীয় খণ্ডে ভেলুয়ার একটি পাল; প্রকাশিত হইয়াছে। পাঠক ভুল করিবেন না যে আমি সেই ভেলুয়া-পালার আর একটি সংস্করণ প্রকাশ করিতেছি । বিষয় ও কাব্য-কথায় এই পালাটি তাহা হইতে সম্পূর্ণরূপে পৃথক। চট্টগ্রাম, শ্ৰীহট্ট, নােযাখালি প্রভৃতি অঞ্চলে ভেলুয়ার দুইটি পালাগান গীত হইয়া থাকে। ইহারা দুইটি স্বতন্ত্র বিষয় লাইয়া রচিত। ১৮৯৬ খৃস্টাব্দে আমার “বঙ্গভাষা ও সাহিত্য” পুস্তকে : “আমি হামিদুল্লা প্রণীত ভেলুয়া কাব্যের উল্লেখ করিয়াছিলাম। এই কাব্যের প্ৰকাশক হামিদুল্লা পল্লীগীতির মাধুৰ্য নষ্ট করিয়াছেন। তিনি স্বীয় অকিঞ্চিৎকর বিদ্যাবত্তার পরিচয় দিতে উৎসুক হইয়া নানা অবান্তর কথা ও আবৰ্জনা পল্লীগীতিটির মধ্যে জুড়িয়া দিয়াছেন । এই গুরুতর বোঝার চাপে পড়িয়া পল্লীগীতির প্রাণ ওষ্ঠাগত হইয়াছে। বৰ্ত্তমান খণ্ডে প্রকাশিত ভেলুয়ার পালাটি এবং হামিদুল্লা-সম্পাদিত পালা এই উভয়ের আখ্যান-বস্তু কতকটা এক। কিন্তু দ্বিতীয় সংখ্যার ভেলুয়ার পালা কোন ঐতিহাসিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত বলিয়া আমার মনে হয় না। কতকগুলি অলৌকিক এবং অদ্ভুত অদ্ভুত বিষয় লইয়া গ্ৰাম্য কৃষক-পণ্ডিত তাহার কল্পনার লীলাখেলার দৌড়টা দেখাইয়া দিয়াছেন। বৰ্ত্তমান পালাটি সম্পূর্ণরূপে ঐতিহাসিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। ইহার চার পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন সংস্করণ আমরা পাইয়াছি। হামিদুল্লা-প্রকাশিত পালাটির কথা আমরা উল্লেখ করিয়াছি। ইহা একটি বৃহৎ গ্রন্থ। ১৯২০ খৃঃ অব্দে ঢাকা চুরিহাটা হামিদিয়া প্রেসে মুন্সী মােহাম্মুলী কৰ্ত্তক এই পালার একটি সংস্করণ (কাশিত হয়। মোহাম্মালী শাহেব এই কবিতায় পল্লীপালাটিকে কতকটা অবিকৃত রাখিয়াছেন । তথাপি এই পল্লীসাহিত্যের প্রকাশকগণের একটা সাধারণ দোষ আছে অর্থাৎ যাহার উপর হাত দিবেন তাহা লইয়া নিজের কিছু কারিকুরি দেখাইয়া বাহাদুরী লইতে চেষ্টিত হইবেন,-সেই দােষটি মােহাম্মালীর à •