পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Si/o (১৯) “কেরুয়াল’ ( পৃঃ ১৯৯২) কথাটি আমি ‘কাণ্ডার’ শব্দ হইতে উৎপন্ন বলিয়াছিলাম। অনেক পুরাতন বাঙ্গাল কবিতায় কথাটি এই অর্থে ব্যবহৃত হইয়াচ্ছে ; যথা, “কঁধে কেরুয়াল করি। হাসিয়ে মুরারি।” (মালাধর বসু প্ৰণীত ‘শ্ৰীকৃষ্ণমঙ্গল,” শক ১৩৯৫ () ইহা দ্বারা ‘দাঁড়’ বুঝাইলে তরুণী বাহিবার সময় উহা মাঝির স্কন্ধে থাকিস্ত না । ‘কাণ্ডার’ শব্দ হইতে যে “কেরুয়াল’ শব্দের উৎপত্তি সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই । যদি মৈমনসিংহের স্থানীয় ভাষায় উহার অর্থ ‘দাঁড়া’ হয়, তাহা হইলে বলিতে হইবে যে আসল অর্থ হইতে উহা বহু नूरुद्र চলিয়া গিয়াছে। এক প্রদেশের শব্দ অন্য প্রদেশে ব্যবহৃত হইবার সময় যে এরূপ। বহু অর্থনৈক্য ঘটিয়া থাকে, তাহার দৃষ্টান্ত বিরল নহে। “কেরুয়াল' কথাটি “কঁড়াল” কথা হইতে উৎপন্ন হইয়াছে এবং ‘র’ ‘ল’-তে পরিবর্তিত হয়, এই নিয়মানুসারে উহ। “কাণ্ডার’ হইতে আসিয়াছে ইহা বুঝিতে পারা কঠিন হইবে না। % (২০ ) “চুটিয়াচুটী' ( পৃঃ ২৪৪ ) । মহিমবাবুর মতে ইহা চুটিয়া ময়না” নামক একপ্রকার স্থানীয় পক্ষিবিশেষের নাম। (২১) ‘হানা” ( পৃঃ ২৭২) শব্দটির মৎপ্রদত্ত অর্থ (নষ্ট করা, আঘাত করা, আক্রমণ করা ) সম্বন্ধে আপত্তি করিয়া ইনি বলেন উহার অর্থ হইবে ‘আসিতে আরম্ভ করিয়াছিল’। আমি কিন্তু এই অর্থ গ্রহণ করিতে অসমর্থ। ইহা বঙ্গভাষায় সুপ্রচলিত কথা এবং আমার দেওয়া পূৰ্বেকার অর্থই বজায় রাখা সঙ্গত মনে করি । (২২) “পাছাড়ি’ ( পৃঃ ৩১৮) শব্দের অর্থ ইহার মতে “পাছাপাড় সাড়ী’, কিন্তু ইহা ভুল। প্রাচীন বঙ্গসাহিত্যে বহুস্থলে “পাছাড়ি" শব্দটির প্রয়োগ দেখিতে পাওয়া যায় এবং উহাতে একপ্রকার মোটা কাপড়কে বুঝায়। ( “বিনে বান্দী নাহি পিন্ধে পাটের পাছাড়ি”— ময়নামতী গান।) শ্ৰীযুক্ত অমূল্যচরণ চক্ৰবৰ্ত্তী, জয়কা পোষ্ট্র, কামারাটিয়া, মৈমনসিংহ, আমাকে কতকগুলি বিষয় সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করিয়া পাঠাইয়াছেন। তিনি বলেন যে ‘জালিয়ার হাওর’ কিশোরগঞ্জের দক্ষিণে নয়, উত্তর-পূর্বে। কিশোরগঞ্জের দক্ষিণে যে হাওর আছে, তাহাকে ‘বড় হাওর’ বলে তাহার