পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ه/والا প্ৰস্তাবগুলি সাধারণতঃ সমীচীন মনে হয় ; আমি নীচে সেগুলি উল্লেখ कब्रिव्लांभ । (১) “জুইতের ঘর” শব্দের অর্থ আমি ভাবিয়ছিলাম “সুসজ্জিত বাড়ী?” কিন্তু দেখিতেছি, উহার একটা স্থানীয় অর্থ আছে। অমূল্যবাবু বলেন যে উহা একপ্রকার ‘বাঙ্গালা ঘর'-কে বুঝায়। তিনি ঐ রূপ বাড়ীর একটি ছবিও আঁকিয়া পঠাইয়াছেন ও তাহা হইতে বুঝিতে পারি যে উহা পূর্বকালীন খিলানওয়ালা একপ্রকার মন্দিরের মত গৃহ। প্ৰসিদ্ধ লেখক ফাগুসন বাঙ্গালী দিগকে উহার আবিষ্কৰ্ত্তা বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন । প্ৰায় অৰ্দ্ধশতাব্দী পূর্বেও ঐরূপ গৃহ মৈমনসিংহে বৈঠকখানারূপে ব্যবহৃত হইত। ” প্রাচীন কালে ‘জুইতের ঘর” ইষ্টক নিৰ্ম্মিত হইত, এখন উহা বঁাশ ও খড়ের দ্বারা তৈয়ারী হয়। (২) “কামলা” (পূঃ ৬২, পঙক্তি ১১ ) । অমূল্যবাবুর পত্র হইতে বুঝিতে পারিলাম যে উহার অর্থ কেবল “দিন মজুর' নহে, পরন্তু পূৰ্বমৈমনসিংহে উহা দ্বারা কারুশিল্পী দিগকেও বুঝাইয়া থাকে। , , (৩) ‘ঝাপে বুপে’ ( পূঃ ৬২, পঙক্তি ১১)। অমূল্যবাবুর মতে ‘ঝাপ’ শব্দে 'বেড়া’ বা 'ছাউনী’র নিম্নদেশ বুঝায় ; আমাদের জেলায় (ঢাকা ) কিন্তু উহা দ্বারা খড়ের বা চেটাইয়ের দরজাকে বুঝায়। // (৪) তিন আব্বা দিয়া'-র (পৃঃ ৬৩, শেষ পঙক্তি) অর্থ আমি ভাবিয়াছিলাম তিনবার মুখে হাতের চেটাে দিয়া ‘আবা” “আবা” শব্দ করা ( ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা খেলিতে খেলিতে বিরতি প্রার্থনা করিবার সময় ‘আবা।” দেয়)। বৈষ্ণব পদাবলীতেও উহার এই অর্থে ব্যবহার আছে। অমূল্যবাবু এ সম্বন্ধে আমার সহিত একমত হইয়া বলিতেছেন যে, বৰ্ত্তমান ক্ষেত্রে কিন্তু ঐ অর্থ একেবারেই খাটিবে না এবং এখানে ‘তিন আব্বা দিয়া” নববধূকে বরণ করিবার সময় কুলস্ত্রীরা যে চালের গুড়ির আলিপনা দেয়, তাহাকে বুঝাইতেছে। তিনি তাহার পত্রে এইরূপ একটি আলিপনার চিত্ৰ আঁকিয়া দিয়াছেন। তঁহাদের জেলায় ইহা একটি সুপরিচিত প্ৰথা এবং বৰ্ত্তমান ক্ষেত্রে এই অর্থে ইহার প্রয়োগ সুষ্ঠ হইবে সন্দেহ নাই, সুতরাং আমার মনে হয় অমূল্যবাবুর প্রস্তাবিত অর্থই এক্ষেত্রে গ্রহণ করা উচিত।