পূর্ববঙ্গ গীতিকা ميا যখন স্বয়ং মাধুর মারা পাণিপীড়ন করিল, তখন এই প্ৰণয়িযুগলের অবস্থা তদ্রুপই দাড়াইয়াছিল। মনের এই অবস্থায় জীবন-পথের পথিকের পথভ্ৰম হওয়া অস্বাভাৰিক বা খুব আশ্চৰ্য্যের বিষয় নহে। তাহদের এই প্ৰেম অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং ইহাতে যদি কাহারও কোনদিকে কিছু পাপ থাকে তবে মণিরই তজজন্য দায়ী। কিন্তু কবি কোন পক্ষ সমর্থন করেন নাই, তিনি স্বাভাবিক ভাবে ঘটনাগুলি এমনই সরলতার সহিত বৰ্ণনা করিয়া গিয়াছেন যে বালিকার মনের অবস্থাটি যেন আমরা একটি স্বচ্ছ মুকুরে প্রতিবিম্বিত দেখিতে পাই। কবির লেখার গুণে এই স্বল্পায়তন পালার মধ্যে মাধুর মার সমস্ত যৌবনের কামনা এবং আশাভঙ্গে নিদারুণ মনের ব্যথা আমাদের চিত্তকে দ্রবীভূত করিয়া ফেলে ; এবং মাঞ্জুর মাকে অপরাধী বলিতে কিছুতেই প্ৰবৃত্তি হয় না। অপরদিকে মাণ্ডুর মার গৃহত্যাগের পরে মণিরের যে শোকাবহ চিত্র কবি অঙ্কিত করিয়া দেখাইয়াছেন, তাহ প্রেমের অধ্যাত্মরাজ্য স্পর্শ করিয়া পবিত্ৰ হইয়াছে। এই বহুপ্ৰতারণাময়ী যুবতী তাহার একনিষ্ঠ বৃদ্ধ স্বামীর প্রতি যে উৎকট ব্যবহার করিয়াছিল, মণির একদিনের জন্যও তাহা বিশ্বাস করে নাই । দিবসত্ৰয়ব্যাপী অনুপস্থিতির পরে মণির বাড়ী ফিরিয়া যখন মঞ্জুর মাকে দেখিতে পাইল না, সেদিন সেই উত্তেজিত মুহূৰ্ত্তে সে নানা কথাই ভাবিয়াছিল,-কিন্তু মাণ্ডুর মা যে তাঁহাকে প্রতারণা করিয়া পলাইয়া গিয়াছে, একথা একবারও তাহার মনে উদিত হয় নাই। সে ভাবিল তাহার ছোট্ট মাণ্ডুর মা-টি একটি ছোট্ট তুলসী মঞ্জরীর মত পবিত্ৰ, গঙ্গাধারার ন্যায় সুনিৰ্ম্মল, তাহার চরিত্র অনবদ্য ও বিশুদ্ধ, তাহাতে কলঙ্কের ( ९ टङ्ठ 3 মাণ্ডুর মা আছিল, আমার রে, আরে দুঃখু-নয়নের মণি। মাণ্ডুর মা আছিল, আমার রে, আরে ভাল,--নারীর শিরোমণি ॥ মাণ্ডুর মা আছিল, আমার রে, আরে ভালা,-কলিজার লোউ । মাজুর মা আছিল, আমার রে, আরে ভালা,-সাঁতীকুলের বোঁ ৷ আমার না মঞ্জুর মারে, আরে ভাল,—নয়নের কাজল। , - আমার না মাণ্ডুর মারে, আরে ভালা,-গঙ্গা নদীর জল ।
