পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৬৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের সাহিত্য-সম্পং । W)○○ রাজা দুষ্মন্ত যে সময়ে কশ্ব মুনির আশ্রমে আসিয়৷ অতিথি হইয়াছিলেন এবং শকুন্তলাকে বিবাহ করিয়াছিলেন, কশ্ব মুনি সে সময়ে আশ্রমে ছিলেন না । তিনি তীর্থযাত্রায় গমন করিয়াছিলেন । রাজ রাজধানীতে চলিয়া গেলে, শকুন্তলার ও সখীদ্বয়ের মনে নান৷ দুশ্চিন্তার উদয় হয়। মুনির অজ্ঞাতসাবে এই বিবাহ হইয়াছে, প্রত্যাবর্তন করিয়া তিনি কি বলিবেন,—এই চিন্তায় তাহার। অধীর হইয় উঠেন। কিন্তু মহর্ষি কশ্ব আশ্রমে প্রত্যাবৃত্ত হইয়া তদ্বিষয়ে অন্য মত প্রকাশ করেন না ; বরং শকুন্তলা গান্ধৰ্ব্ব-বিবাহে রাজা দুষ্মস্তের সহিত পরিণীত হইয়াছেন জানিয়া মহর্ষি সন্তোষ প্রকাশ কবেন, এবং শকুন্তলাকে দুষ্মস্তের রাজধানীতে প্রেবণের জন্য উৎসুক হন । ইহার পর শকুন্তলার রাজধানীতে যাত্র। আশ্রম পরিত্যাগ করিয়া শকুন্তলা যখন রাজধানীতে গমন করিতেছেন, সে দৃশু বড়ই মৰ্ম্মভেদী । সেখানে স্বভাবের বর্ণনাও যেমন পরিস্ফুট, বিচ্ছেদের বেদনাও তেমনই মৰ্ম্মম্পশী । মহর্ষি কথের নয়নদ্বয় বাষ্পভরে অবরুদ্ধ হইয়া আসিল । তিনি মনে মনে কহিলেন,—"বনবাসী তপস্বী হইয়া ও স্নেহ-বশে আমি যখন এত ব্যাকুল হইয়াছি, না-জনি তনয়া-বিচ্ছেদে সংসারীরা কত ব্যথাই অনুভব করে!” ইহার পর মহর্ষি শকুন্তলাকে আশীৰ্ব্বাদ করিয়া কহিলেন,—“মা, তুমি যযাতির শৰ্ম্মিষ্ঠার ন্যায় ভৰ্ত্তার আদরণীয়। হও এবং রাজচক্ৰবৰ্ত্তী-লক্ষণ ক্রান্ত একটা তনয লাভ কর।” এইরূপ আশীৰ্ব্বাদ করিয়া হোমাগ্নির চতুষ্পার্শ্বে শকুন্তলাকে পরিক্রমণ করাইলেন । তদনন্তর মহর্ষি বনদেবতাসমম্বিত তপোবনস্থিত রক্ষসকলকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন,—“তোমাদেব জলসেক না করিয়া যে শকুন্তলা অগ্রে জলপান করিতে ইচ্ছা করিতেন না, এবং ভূষণপ্রিয়। হইয়াও স্নেহ প্রযুক্ত যে শকুন্তলা তোমাদের একটমাত্র পল্লব ছিন্ন করিতেন না, তোমাদের পুষ্পোদগম-সময়ে প্রথমেই র্যাহার উৎসব হইত, সেই শকুন্তল অদ্য পতিগুহে গমন করিতেছেন ; অতএব তোমরা সকলে এ বিষয়ে অনুমতি প্রদান কব ।’ তখুন আকাশবাণীতে মঙ্গলধ্বনি উখিত হইল। বনদেবতাগণ যেন শকুন্তলার পতিগৃহে গমনে অনুমতি করিলেন । এই সময়ে আশ্রম-পরিত্যাগে শকুন্তলার কষ্ট্রের বিষয় অকুধাবন করিয়} প্রিয়ম্বদা কহিলেন,—‘এই তপোবন-বিরহে তুমিই যে কেবল কাতর হইয়াছ, তাহ। নহে। তোমার বিরহে তপোবনের অবস্থা অবলোকন কর । ঐ দেখ ! হরিণীগণ কুশগ্রাসউদগীরণ করিতেছে! ময়ুরী-সকল আনন্দের সহিত নৃত্য করিয়া থাকে ; কিন্তু ঐ দেখ !— আজ তাহার তোমার বিরহ-আশঙ্কায় সে আনন্দ পরিত্যাগ করিয়াছে । আরও দেখ– পরিণত-পত্র পতন-ছলে তোমার বিরহে লতা-সকল যেন অশ্রুপাত করিতেছে। শকুন্তল। মাধবী-লতা-সমীপে গমন করিয়া আলিঙ্গন করিলেন ; কহিলেন,—‘লতাভগিনী ! শাখারূপ বাহুযুগল দ্বারা আমাকে প্রত্যালিঙ্গন কর। আজ হইতে তোমাদিগের দুরবৰ্ত্তিনী হইলাম। পিতাকে কহিলেন–পিতঃ ! আমার স্তায় ইহাদিগকে মেহের চক্ষে দেখিখেন।’ ইহার পর শকুন্তলা কখনও সখীদিগের হস্ত ধারণ করিয়া অশ্রুবর্ষণ করিলেন, কখনও বা আশ্রমের সংবাদ পাইবার ইচ্ছা প্রকাশ করিলেন...ত্যুর ৰুে এক মৃগশিশু নদিয়া, গুহার চরণ আক্রমণ-পূৰ্ব্বক বসন-প্রাস্তে সংলগ্ন হইল। এই মৃগশিশুকে মাত্বহীন