পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳՏՆ, নিয়মিত ও নিদিষ্ট নয় ; এবং এক ছত্ৰে সাজানো ধ্বনি-শ্রেণীর শেষ প্রান্তে পূর্ণ-যতি স্থাপিত হওয়া আবশ্যিক নয়, বরং ওই ধরণের ছন্দে লাইন বা ছত্রের শেষে পূর্ণ-যতি স্থাপন না-করাই ও-ছন্দের রীতি । ওসব ছন্দে ছত্রের শেষ প্রান্তে পূর্ণ-যতির পরিবর্তে অৰ্দ্ধ-যতি এবং এমন কি ঈষদ-যতিও স্থাপিত হ’তে পারে ; আবার ছত্রের মধ্যেও যে-কোনো পৰ্ব্ব বা পৰ্ব্বীদ্ধের পরেই অৰ্দ্ধ-যতি বা পূর্ণ-যাতি স্থাপিত হ’তে পারে। এসব ছন্দে ধ্বনির গতি প্রতি-ছত্রের নিদিষ্ট বা অনিদিষ্ট দৈর্ঘ্যকে অতিক্রম ক’রে ছত্রের পর ছত্রে প্রবাহিত হ’তে থাকে এবং প্রয়োজন অনুসারে ছত্রের প্রাস্তে কিংবা মধ্যেও ধ্বনি-গতি বিরত হতে পারে । যে-সব ছনে এ-ভাবে ছত্রের অন্তে পূর্ণ-ধতি থাকা আবশ্যিক নয় সে-সব ছন্দকে আমি বলেছি “প্রবহমান’ ছন্দ । মাঘের “পরিচয়ে রবীন্দ্রনাথ যাকে বলেছেন “লাইন-ডিঙেনে। চাল” তাকেই আমি বলেছি *প্রবহমানতা’ ৷ এই প্রবহমানত বা "লাইনডিঙোনো চাল”-টাকেই ফরাসী ভাষায় বলা হয় ৪-শব্দটার ইংরেজী রূপ হচ্ছে enjambment I যা হোক, এই প্রবহমান ছন্দে ও যে ধ্বনি-শ্রেণা একচ্চত্রে সাজানে থাকে তাকেও আমি পংক্তি’ নামেই অভিহিত করব, কেন-ন, প্রবহমান ছন্দের ছত্রকে ইচ্ছামত ভেঙেচুরে দু-তিন সারে সাজিয়ে লেপ চলে না, তাই এ-সব ছন্দের একেকটি সার বা ছত্রকে একেক পংক্তি’ ব’লে অভিহিত করলে অর্থের বিভ্ৰাট ঘটার সম্ভাবনা নেই। সুতরাং প্রবহমান ছন্দের পংক্তিগুলিকে বলতে পারি প্রবহমান বা ‘অ-যতিপ্রান্তিক পংক্তি ( run on on unstopt lines); fox wra arol দরকার যে এই প্রবহমান পংক্তির অস্তে পূর্ণ-যতি থাকা আবশ্বিক না হ’লেও একটি ক’রে অৰ্দ্ধ বা ঈষদ-যতি থাকা প্রয়োজন। আর যে-সব ছন্দ প্রবহমান নয় সে-সব ছন্দের পংক্তিগুলিকে শুধু পংক্তি’ বা যতি-প্রাস্তিক পংক্তি ( end stopt lines) to off - § বাংলা ছন্দকে আমি ধ্বনি-ব্যষ্টি বা unit-এর প্রকৃতিভেদে স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও যৌগিক ওরফে ‘enjam bement’ i প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩৩৮ [ ७s* छांशृं, २ग्न ‘অক্ষরবৃত্ত’ এই তিনটি প্রধান শ্রেণীতে বিভক্ত করেছি । ছন্দের এই তিন ধারার মধ্যে শুধু যৌগিক ও স্বরবৃত্ত ধারাতেই প্রবহমান ছন্দোবন্ধ রচনা করা সম্ভব হয়েছে। তার মধ্যেও শুধু দ্বিপদী অর্থাৎ পয়ার-জাতীয় ছন্দোবন্ধকেই প্রবহমান আকার দেওয়া হ’য়ে থাকে। ইংরেজীতে যেমন sĩ Iambic pentameter-so প্রবহমান ( run-on ) ছন্দোবন্ধ রচনা করা যায়, বাংলাতে তেমনি শুধু ধৌগিক ও স্বরবৃত্ত পয়ার বা দ্বিপদীকেই প্রবহমান আকার দেওয়া হ’য়ে থাকে । বাংলা কাব্যসাহিত্যের অধিকাংশ প্রবহমান ছন্দোবন্ধ চোদ বাষ্টির যৌগিক পয়ারেই রচিত হয়েছে। চোঙ্গ unit ব৷ ব্যষ্টির প্রবহমান যৌগিক পয়ারের দৃষ্টাস্ত-স্বরূপ রবীন্দ্রনাথের ‘মেঘদূত’ । মানসী , বস্থঙ্কর।’ । সোনার তরী , ‘স্বৰ্গ হইতে বিদায় । চিয়া ) প্রভৃতি কবিতার উল্লেখ করতে পারি । এগুলি হচ্ছে স-মিল প্রবহমান যৌগিক পয়ারের দুষ্ঠাস্তু ধদি এ-সব প্রবহমান পয়ারের পংক্তি প্র: স্থস্থিত মিলট উঠিয়ে দেওয়া যায় ভ; হ’লেক্ট এ ছন্দোবন্ধ তথাকথিত “অমিত্রঃক্ষর ছন্দে পরিণত হবে । অর্থাৎ অ-মিল প্রবহমান যৌগিক পয়ার আর অমিত্ৰাক্ষর ছন্দ একই জিনিষ । আজ পর্য্যস্ত বাংলায় যত অমিত্ৰাক্ষর ছন্দ রচিত হয়েছে তার সবই চোদ বাষ্টির অ-মিল প্রবহমান ধৌগিক পয়ার । আঠারে: ব্যষ্টির অমিত্রাক্ষর ছন্দ কেউ রচনা করেন নি । আঠারে। ব্যষ্টির যৌগিক পয়ারে অর্থাৎ বদ্ধিত যৌগিক পয়ারে অতি সুন্দর স-মিল প্রবহমান ছন্দোবন্ধ রচিত হয়েছে। দুষ্টান্ত-স্বরূপ রবীন্দ্রনাথের ‘সমুদ্রের প্রতি । সোনার ভর ), 'এবার কিরাও মোরে’ ( চিত্র । প্রভৃতি কবিতার নাম করতে পারি। রবীন্দ্রনাথ যাকে বলেছেন আঠারো ‘অক্ষরের’ ‘দীর্ঘপয়ার’ বা বড়ে পয়ার তাকেই আমি বলেছি বন্ধিত যৌগিক পয়ার’ । স্বরবৃত্ত পয়ারেও প্রবহমান ছন্দোবন্ধ রচনা কর সম্ভব । চোঙ্গ স্বরের পয়ারে প্রবহমান ছন্দোবদ্ধ কেউ রচনা করেছেন ব’লে মনে হয় না । আঠারো স্বরের বদ্ধিত পয়ারে প্রবহমানতার দৃষ্টান্তও খুব কম আছে । এরকম ছন্দোবন্ধের দৃষ্টাস্ত-স্বরূপ রবীন্দ্রনাথের পূরব" কিছু