পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] যাত্রা ዓዓoo পাত্রপক্ষের জনৈক মাতব্বর যোগ দিলেন "বেহায় মশায় বলুন, দাদা। বাবা, এ যে দিনে ডাকাতি । এ সমস্তের আর জবাব কি, ক্রুদ্ধ বৈবাহিকের সামনে বিপাকে-পড়া নৌকার মত ইন্দুর বাবা টলমল করিতে লাগিলেন, তার বংশ মৃগীরোগীর বংশ নয়, শুধু এই অস্বীকৃতির হালে কোন মতে সামলান গেল না। রক্ষা হইল তিন-শ টাকায়। বরের বাবা পাষণ্ড নন, মূৰ্ছার ব্যারাম আছে বলিয়াই পুত্রবধূকে তিনি ত্যাগ করিতে পরিবেন না, চিকিৎসা করিয়া বউকে তিনি জারাম করিবেন। মেয়ের চিকিৎসার খরচ মেয়ের বাবা যৎকিঞ্চিৎ আগাম দিবেন ইহা কিছুমাত্র অসঙ্গত নয়। তা নিশ্চয় নয়, কিন্তু সঙ্গতি ? মুখর জনতার মধ্যে নির্বাক হইয়া দাড়াইয়া থাকিয়া ইন্দুর বাবা ভাবিতে লাগিলেন যে, মেয়ের শুভবিবাহে শুভ যে কাহার হুইল তাহাই ভাবনার বিষয় । উত্তেজিত বেদনায় হৃদয় ভাঙিয়া যাওয়ার সময় চার মিনিট তাহাকে ক্লোরোফৰ্ম্ম করিয়া রাখার জন্ত ভাগ্যডাক্তারকে যে তিনশ’ টাকা ঘুষ দিতে হইয়াছে ইন্দু তাহ জানিতে পারল না। জানাইয়া যাহারা দিত মেয়েকে এক প্রকার কোলে করিয়া পাৰীতে তুলিয়া দেওয়া পৰ্যন্ত মা তাহাদের সংঘত রাখিয়াছিলেন। তাহার মর্শ্ববেদনার ব্যুহ ভেদ করিয়া আর কেহ ইন্মুর নাগাল পায় নাই। পান্ধীর মধ্যে হরেনের সান্নিধ্যে মূৰ্ছার জন্ত ইন্দু তাই .'কেবল তুঙ্গাতেই মরিয়া যাইতেছিল,—বাধ্য হইয়া একটু একটু চেনা বরের কোলে মাখ রাখিয়া শুইবার মধুর লজ্জা । পাৰ্জী তখন আটজন বেহারার কাধে রাইঘোষানীর মাঠ ঘেষিয়া চলিয়াছে। অন্ত পান্ধী চারখানা পিছাইয়া পড়িয়াছিল, হরেন পাষ্টীর দরজা খুলিয়া দিল। বলিল, “ঘামে সেদ্ধ হওয়ার চেয়ে এ গরম বাতাসও ভাল। কি दल 'ि - وسيسكس تعي ইন্দু কিছুই বলিল না, উঠিয়া বসিবার চেষ্টা করিল। বাধা দিয়া হরেন বলিল, “না না, উঠো না, ওয়ে থাক।” ইন্দু জড়াইয়া জড়াইয়া বলিল, “আপনার কষ্ট হচ্ছে।" একদিকে তরুলতাহীন প্রান্তর, অন্যদিকে গ্রাম ও ক্ষেত খামার, ইহারই মধ্য দিয়া অসময়ের ধাত্রী ছটি এমনি ভাবে সৰ্ব্বপ্রথম পরস্পরের স্থখস্থবিধার কথা ভাবিতে আরম্ভ করিল। পান্ধী বেহারাদের পায়ে পায়ে যে ধূলা উঠিল, রাইঘোষানীর মাঠের বাতাস তাহা কোনদিকে উড়াইয়া দিতে লাগিল তাহার চিহ্ন মাত্র রহিল না। খানিক পরে পাৰ্টী সাতগায়ে প্রবেশ করিল। হরেন জিজ্ঞাসা করিল এ গায়ের নাম জান, ইন্দু ? আসবার সময় শুনেছিলাম, ভুলে গেছি ? পান্ধীর কোণে জড়সড় ইন্দু জবাব দিল, সাতগ।’ গ্রামটিকে ভাল করিয়া দেখিবার জন্ত হরেন পান্ধীর বাহিরে মুখ বাড়াইল । দেখিল, একটা ময়রার দোকানের পলে পথের ধারে প্রকাও একটা বকুল গাছের তলে একটি কালো ছেলে দাড়াইয়া আছে। তাহার হাতে একখানা বই। বকুল গাছের ছায়ায় বসিয়া বই পড়িতে পড়িডে পান্ধীর শৰ শুনিয়া ছেলেটি কৌতুহলৰশে উঠিয়া দাড়াইয়াছে, হরেন এইরূপ অল্পমান করিল। - তারপর আরও কত গ্রাম, কত মাঠ পার হইয়া সন্ধ্যার একটু আগে পাৰী ষ্টীমার ঘাটে পৌঁছিল। ষ্টীমার তখন সবে আসিয়া নোঙর ফেলিয়াছে। নদীর অপর তীরে একটি চিতা প্রায় নিবিয়া আসিতেছিল । আঙল বাড়াইয়া দেখাইয়া হরেন বলিল, পথে চিতা দেখলে শুভ হয়। তোমায় আমার খুব মুনের मिन হবে, হবে না ? - যেন পথে চিত না দেখিলে তাষ্ট্রাদের মনের মিল হুইতে বাকী থাকিত ।