পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b-e o بی بی بی حجتماعی দেখিতে অনেক ভাল লাগে। চুল বব করা ও লিপষ্টিক লাগানোটাও ছাড়িয়া দিলে ইছাদের স্বদেশী বেশ আরও মুই হয় বলিয়া আমাদের বিশ্বাস । বোম্বাই শহর সমুদ্রকে অশ্বথুরের মত বেষ্টন করিয়া আছে। তাই সন্ধ্যায় মালাবার পাহাড়ের আলো জলের ওপারে কোলাব হইতে দ্বীপার্থিতার আলোর মালার মত প্রত্যহই দৃষ্টিকে মুগ্ধ করে, আবার মালাবার পাহাড় হইতেও এ দিকের আলো তেমনি নয়ন তৃপ্তিকর । মালাবার পাহাড় যদিও বেশী উচ্চ নয়, তবু ইহার পথ ঘাট দাঞ্জিলিঙের মত লাগে । ইহার মাথার উপর জলের বৃহৎ পুষ্করিণী ঢাকিয়া একটি মস্ত বাগান আছে। সন্ধ্যায় সেখানে অল্প আলোয় ঘাসের উপর মেয়ের একল, দুজনে অথবা পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে বেশ ঘুরিয়া বেড়ায়, গল্প করে। তাহাদের কোনো ভাবন কি ভয় অাছে মনে হয় না। পাহাড়ের উপর ও নীচে অনেক জায়গা সমুদ্রের ধারে বসিবার আসন আছে। কোলাবার সমূত্রের ধারে ছোট ছোট ছেলেরা খুব ভিড় করিয়া বেড়াইতে আসে। এদেশে ছোট বড় ধনী দরিদ্র সকলেই বাঙালীর চেয়ে ঘরের বাহিরে ঘুরিতে বেশী জানে । আমাদের বন্ধু এক পাশা দম্পতির আতিথ্যে এখানকার একটা বড় ক্লাব ঘুরিয়া আসিলাম। ওয়েলিংডন ক্লাবের প্রকাগু মাঠ বাগান বাড়ি । শহর হইতে কয়েক মাইল সুন্দর তরুবীথির ভিতর দিয়া যাইতে হয় । সেই সযধুরক্ষিত বাগান ও ময়দানে দেশী ও বিলাতী বহু নরনারীর মেলা। বাংলাদেশে সাহেব মেম ও এত দেশী স্ত্রী পুরুষ এক ক্লাবের সভ্য কোথাও আছে বলিয়া জানি না। প্রায় কোনোথানেই ত বাঙালীর স্থান নাই। পাশীরা ধনী কোটিপতি, লক্ষপতি বলিয় তাহাদের সঙ্গে এক ক্লাবে যাইতে পাশ্চাত্য স্ত্রীপুরুষদের আপত্তি নাই, বরং তাহাদের বাদ দিতেই ভয় আছে। বাঙালীদের টাকা নাই সুতরাং শ্বেতাঙ্গের তাহাদের পাশে বসা চলে না । বোম্বাই শহরে একটা বাজার আছে ; মুলেথিক শ্রীমতী লীলাবর্তী মুন্সী প্রভৃতি মহিলাদের উদ্যোগে তাহ আগ+ গোড়াই স্বদেশী করিয়া ফেলা হইয়াছে শুনিলাম। বাজারটির সবটাই ঘুরিয়া দেখিলাম, কোথাও একটি প্রবাসী—চৈত্র, ১৩৩৮ [ ৩১শ ভাগ, ২য় খণ্ড বিলাতী জিনিষ নাই। বাজারে কাপড়ের দোকানই সবচেয়ে বেশী। এখানকার মিলে অনেক রকম শাড়ী হয়, কত রঙের, কত পাড়ের, কত নক্সার যে ছড়াছড়ি বলা যায় না। ভূরে, চৌখুপী, জরিদার সব রকম কাপড়ই মিলে তৈয়ারী হয়। বাংলা দেশে ইহার দশ-ভাগের এক ভাগও নাই। বাঙালী মেয়ের সাদ। কাপড় বেশী পরে, এবং মিলের কাপড় আটপৌরে ভিন্ন ব্যবহার করে না বলিয়া হয়ত এত রকম কাপড় এ দেশে দেখা যায় না। বাঙালীর মেয়ে কোথাও যাইতে ২le॥৩২ টাকা দামের তাতের কাপড় পরিলেও ৫-৬ টাকা দিয়৷ মিলের কাপড় পরে না। আবার অন্ত দিকে বোম্বাই মুলুকের মেয়েরা যতই দরিদ্র মুটে মজুর হউক রঙীন ও স্বধৃত কাপড় ছাড়া পড়ে না। স্বতরাং মিলকে সে কাপড় যোগাইতেই হয়। অবশ্য বাঙালী মেয়ের মত ১২১০ সিকার কাপড় সেখানে কেহ পরে বলিয়া আমার মনে হয় না। পদার দেশে পোষাকে পয়সা খরচ করিবার বিশেষ প্রয়োজন আমরা অনুভব করি না। ঘরের ভিতর ছেড়া ময়লা কুলী যে কোনো কাপড় একটা পরিলেই হইল। • দোকানগুলিতে মেয়েদের ভিড় খুব, কিন্তু কোথাও চেয়ার নাই। সৰ্ব্বত্রই মেয়েরা দোকানীর পাশেই ছোট গদির উপর ফরাসে বসিয়া কাপড় বাছিতেছে ও কিনিতেছে, অধিকাংশেরই পরিধানে মিলের শাড়ী । শাড়ীগুলি সবই প্রায় সরোজিনী নাইডু কিম্বা কমলা দেবী মার্ক, কিছু কস্তুরী বাঈ মার্ক । গুজরাটি মেয়দের মধ্যে সাদার উপর আঁচলতোলা ও ফুল তোলা শান্তিপুরে শাড়ীর বেশ চলন আছে। এই কাপড় অনেক দোকানেই আছে । ঢাকাই শাড়ী এখানে সৌর্থীন বলিয়া চলিত । ছাপানো গরদের শাড়ী সমস্তই মুর্শিদাবাদ বহরমপুর ইত্যাদি বাংলা দেশের কাপড়ে হয়। রেশমটা বাংলা দেশের কিন্তু ছাপানো ও রঙানো বোম্বাই শহরে । এমন কি বাংলা দেশের ব্যবহারের কাপড়ও বেশী ভালগুলি বোম্বাই হইতে করিয়া আনা । শ্রীরামপুরের ছাপ বোম্বাইয়ের মত সুন্দর এখনও হয় নাই । বাজারে বয়স্কদের খেলনা অর্থাৎ স্থগন্ধি তেল, স্থগন্ধি ক্ৰীম, রঙ বেরঙের কাপড়, চামড়ার জিনিষ, ইত্যাদির