পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] ডুকরি, হায়দরাবাদ, বোম্বাই Ե-օ Ջ অনেক আয়োজন আছে, কিন্তু শিশুদের খেলনার দিকে কাহারও নজর নাই। সেই চির পুরাতন কাশীর কাঠের ও পিতলের খেলনার দুই একটি দোকান মাত্র সার। ভারতবর্ষের যেখানেই স্বদেশী খেলনা খুজিবেন, হয়ত কাশীর ছাড়া আর কোথাকারও মিলিবে না। জয়পুরের খেলনা জয়পুরে ও কলিকাতায় কিছু দেখা যায়, কিন্তু সে সাজাইয়। রাখিবার মতই বেশী, খেলিবার মত তত নয়। বোম্বাইয়ে সাহেবী দোকানের পাড়ায় অনেক ধনী কন্ত ও ধনী গৃহিণী মিলিয়া “স্বদেশী" নামে একটি উচু দরের জিনিষের দোকান করিয়াছেন, সেখানে স্বদেশী চকোলেট, লজেঞ্জ, ও সীসার খোড়সওয়ার কিছু দেখিলাম। এই দোকানের তোয়ালে চাদর ইত্যাদি বিলাতী ফ্যাসনেবল জিনিষের মত স্বধৃপ্ত। দোকানের সব ব্যবস্থাই মুন্দর। আমাদের বাংলা দেশের মহিলপরিচালিত দোকানে এমন স্থব্যবস্থা নাই, কারণ এখানে অর্থ ও বিদ্যায় ধনী মেয়েরা এ সব কাজ করেন না। বোম্বাইকে প্রাসাদপুরী বলিয়া থাকে। ইহার বাড়িগুলি আকারে, উচ্চতায় এবং আলোকমালায় প্রাসাদতুল্য বটে, কিন্তু পাশ্চাত্য ধরণের বলিয়া, ভারতীয়ের চক্ষে প্রাসাদ মনে হয় না, যেন সবই আপিস আদালত। জয়পুরকে আমাদের চক্ষে প্রাসাদনগরীর মত নয়নমোহন লাগে । এখানে ইংরেজদের চেয়ে পার্ক ইত্যাদিতে দেশী মামুষের ভিড় বেশী । মেয়ের ত দলে দলে বেড়ায় । বোম্বাই স্কুল অব আর্টে দেখিবার মত কিছু থাকিবে মনে করিয়া গিয়াছিলাম। বাড়িটি প্রকাগু, আয়োজনের সমারোহ খুবই, ভাস্কৰ্য্য বিদ্যা শিপাইবার জন্য ইহার অনেক পয়সা খরচ করেন বোঝা গেল, শরীর গঠন শিখিবার যথেষ্ট ব্যবস্থা আছে। অনেক বড় গ্রীসীয় মূৰ্ত্তির ছাঁচ ঘরে ঘরে সাজানো, মানুষের শরীরের প্রতি অঙ্গকে নানা ভাবে ও নানা দিক দিয়া দেখাইবার ছাঁচ অসংখ্য । কিন্তু দেশী ছাত্রের যে-সব মূৰ্ত্তি গড়িয়াছে তাহাতে এদেশের মানুষ সবাই আতুরাশ্রমের রুগী বলিয়া মানুষের না ভ্রম হয়। যাহারা স্বম্ব দেখিতে তাহাদেরও আদর্শগুলিকে বোধ হয় কুন্ত্রতার জন্ত পয়সা দিয়া ভাড়া করিয়া জানা হইয়াছে। মুনীর মুখ দুই তিনটা অনেক খুজিয়া পাওয়া যায়। কুত্ৰ মুখগুলিতেও উল্লেখযোগ্য কোনো ভাবের কি কল্পনার প্রকাশ মনে পড়ে না। দেওয়ালের গায়ে যেসব বড় বড় ছবি আছে, তাহার দুইট মাত্র আমার ভাল - বোধিসত্ত্ব পদ্মপাণি লাগিল। মানুষের শরীরকে নান ভাবে ঘুরাইয়া দুমড়াইয়া উণ্টাইয়া পাণ্টাইম দেপাইতেই ছাত্ররা বেশী ব্যস্ত মনে হয়। ছবি ছবি হইল কি না, সে দিকে ৰাঙালী চিত্রীদের নজর অনেক বেশী । বোম্বাই মিউজিয়মটি কিন্তু চিত্রসম্পদে আশ্চর্গ্য ধনী । পাচ দিন মাত্র শহরে ছিলাম, কিন্তু তাহারই মধ্যে দুই দিন মিউজিয়ম দেখিতে গিয়াছি। একতলায় প্রবেশপথের হলে এখানেও কয়েকট গ্রীসীয় মুষ্ঠি, তবে কতকগুলি ভাল সেলাই ও বেনারসী কাপড়ও সেই ঘরেই দেখা যায়।