পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] · ইহা অপেক্ষ কলঙ্ক আর নাই। যুবকের এই কলঙ্ক মোচন করুন। নতুবা বাঙালীজাতি ধরাপৃষ্ঠ হইতে লুপ্ত হউক। যুবকের পবিত্রচেতা হউন, সাহসী হউন, বিপক্টের সাহায্য ও উদ্ধারের জন্য অঙ্গচালনায় অভ্যস্ত হউন। লাঠিখেলীয় ও যুযুৎস্থতে অভ্যস্ত হউন। উভয়ের সম্মিলনে যে আত্মরক্ষা ও আর্ন্তরক্ষার প্রণালী উদ্ভাবিত হইয়াছে, তাহা শিক্ষা করুন । পুলিশ চুরি ডাকাতি নারীহরণ আদি সধ বিপদ হইতে মানুষকে বাচাইতে পারিতেছে না, পারিবার কথাও নয়। নারীর উপর অত্যাচারে প্রধানতঃ নিম্নশ্রেণীর তথাকথিত মুসলমানেরা জড়িত থাকায়, সমুদয় মুসলমান সম্প্রদায়ের অখ্যাতি ও কলঙ্ক হইতেছে। আমলাগাছীর শ্ৰীমতী বরদামুন্দরীকে হরণ করিয়া কয়েক জন তথাকথিত মুসলমান শাস্তি পাওয়ার পর, ঐ অঞ্চলের হিন্দুমুসলমান এক সম্মিলিত বৃহৎ সভায় এইপ্রকার পাশবিক দুষ্কার্য্যের নিন্দ করিয়াছেন, দুবৃত্তদের শাস্তিতে আহলাদ প্রকাশ করিয়াছেন, এবং পুলিশের যে যে কৰ্ম্মচারী এই মোকদমা উপলক্ষে অবৈধ আচরণ করিয়াছে, তদন্তের পর তাহা সত্য বলিয়া প্রমাণ হইলে গবৰ্ণমেণ্ট কে তাহাদিগকে শাস্তি দিতে বলিয়াছেন । মুসলমান-সম্প্রদায়ের নেতৃবর্গ নিজসমাজতৃক্ত সকল লোকের সুশিক্ষার বন্দোবস্ত করুন ; এবং নারীইরণ বিষয়ে তাহাদের ধৰ্ম্মের উপদেশ কি, তাহা প্রকাশ করুন। নারীর সহিত ব্যবহার সম্বন্ধে অসংযমে পৃথিবীতে সমগ্র মুসলমান-সমাজের অধোগতি হইয়াছে। যে তুরষ্কের নবু আহ্বাখান হইয়াছে, যে মিশরের পুনরুত্থান হুইয়াছে, সেই উভয় দেশের মুসলমান মহিলারা বহুবিবাহের বিরুদ্ধে সমর ঘোষণা করিয়াছেন। ইহা হইতে এদেশের মুসলমানেরা বুঝিতে পারিবেন, যে, স্ত্রীজাতির সহিত পুরুষের সম্পর্কের আদর্শ তুরষ্কে ও মিশরে উন্নত হওয়ায় তবে তাহারা উন্নত হইয়াছে ; এবং সেই উন্নতি রাখিবার ও বাড়াইবার জন্য তাহারা বহুবিবাহ বন্ধ করিতে চাহিতেছে। আলীগড়ে মুসলমান মহিলাদের যে সভা হইয়াছিল, তাহাতে র্তাধারাও বহুবিবাহের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করিয়াছিলেন। পুরুষদের অনেক স্ত্রীকে বিবাহ করাভেই যখন মুসলমান মহিলাদের আপত্তি, তখন বিবিধ প্রসঙ্গ—স্বাধীনতা রক্ষার যোগ্যতা ᎼᏩᎼ পুরুষদের নারীর সহিত অবৈধ গৰ্হিত সম্বন্ধেব মে তাহারা বিরোধী হইবেন, তাহাতে সনেই নাই। ইহা তইতে আশা হয়, যে, মুসলমান-সম্প্রদাক্ষ কলঙ্কনিমুক্ত হইতে পরিবেন। বাংলা দেশের তরুণ সম্প্রদায় নব যুগের ডাক শুনিয়া চলেন, এই ইচ্ছা প্রকাশ করিয়াছি । বঙ্গের অধিকাংশ যুবক মুসলমান ; তাহার। যেন বধির হইয়। না থাকেন। নারীর সম্মান রক্ষায় তাহার অগ্রণী হউন । স্বাধীনতা-রক্ষার যোগ্যতা স্বাধীনতা লাভ করিতে হইলে যেরূপ যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, তাহ রক্ষা করিতে হইলেও সেইরূপ যোগ্যতা আবশ্বক হয়। আমরা স্বাধীনতা পাইবার যোগ্য কি না, সেবিষয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক হইয়াছে ; আমরা ও অনেক লিখিয়াছি। স্বাধীনতা যদি কেহ লাভ করিতে পারে, তাহা হইলে তাহার যোগ্যতার কথা আর কেহ তুলে না । কিন্তু স্বাধীনভা পাইলে আমরা ভাহা রক্ষা করিতে পারিব কি না, তাহ আমাদের ভাবিবার বিষয় । ইংরেজরা ত ধমক দিয়া বলেন, “আমরা চলিয় গেলে আর কেহ আসিয়া তোমাদের দেশ দখল করিবে ; তোমাদের আত্মরক্ষার শক্তি নাই ।” অথচ আমাদের আত্মরক্ষার শক্তি অর্জন ও শিক্ষা লাভের পথ ইংরেজরাই আগ্লাইয়া রহিয়াছেন। ইংরেজের প্রভুত্ব থাকিতে ভারতীয় লোকেরা যে কথন ভারতীয় সৈন্যদলের কর্তা ও নেতা হইবেন, তাহার কোন সম্ভাবনা দেখা যাইতেছে না । ইংরেজপ্রভুত্বের অবসানে ভারতীয় সেনাদলের পরিচালকগণ ভারতীয় হইতে পারেন । কিন্তু ইংরেজপ্রভুত্বের অবসানের সঙ্গে সঙ্গেই যদি অন্য কোন বিদেশীর প্রভূত্ব স্থাপিত হয়, তাহা হইলে কি হইবে, বলা যায় না। ভবিষ্যতের গর্ভে কি নিহিত আছে, জানি না। কিন্তু দেশের স্বাধীনতা রক্ষার আর-একটা দিক আছে, তাহারও আলোচনা করা ভাল । কানাডা এবং আমেরিকার সম্মিলিত রাষ্ট্রমগুলের (ইউনাটেড ষ্টেটুসের ) মধ্যে কোন প্রকার পরিথু দুর্গ নাই। কানাডার এমন কোন সৈন্যবল নৌবল নাই, যে, আমেরিকার সহিত