পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নববর্ষের পলরের কাগজগুলে। যদি না থাকৃত তবে আজ নববর্য এল কি না বোঝাই যেত না । বছর ফুরাল কিন্তু ঘড়ি যে-ভাবে ঘণ্টা দিয়ে জানিয়ে যায় ঘরের সবাইকে দিন গেল রাত এল ব! রাস্ত পোহাল দিন হ’ল সেই-ভাবে কোথাও কোনখানে কোন সাড়া কি পড়ল দেশে নুতন বছরের আগমনীর স্তর প’রে ? নতুনের বঁাশি বাজল, না ধে-ভাবে গেল বছর চলেছিল সেই ভাবে এ-বছব চলল ? এ কি মুকের দেশ, এটা কি বিজন সহর যেখানে সাড়া শব্দ বলে’ কিছুই নেই ? ইষ্টার ডিস্ক ফটে” নববর্গে যে ছুটিটা বেরিয়ে এল সেটার পধর আপিসে আদালতে সৰ্ব্বত্র দৌড়ে গেল এবং সাড় ও তাড়া প’ড়ে গেল ছুটিতে আনন্দ করতে । নতুন পাতার পাতা উণ্টে’ গেল সেটা দেখে মিলে সবাই এক রাত্রি বাতি জালিয়ে, কিন্তু কালবৈশাথির বছরের সংবাদ দিলে সেটা শুধু গাছের পাতা গুলোই অঙ্গভব করলে । দেখি নতুন সবুজে সেজে বার হ’ল তারা, তারা-ফুলের মালা দুলিয়ে দিলে বনস্পতির গলায় । কোন দূর দেশ থেকে উংসবের খবর পেয়ে ছুটে এল কোকিল পাপিয়া, বন-ভবন মুখর হ’ল গানে গানে, উৎসবের আসরে দিন রাত চলল উৎসব ঋতুতে ঋতুতে দীপক মেঘমল্লার কত কি রাগরাগিণী বেজেই চলুল সারা বছর ধরে জলে স্থলে আকাশে, প্রতিপলে প্রতি মুহূৰ্ত্তে, সকালে সন্ধ্যায় দিনে রাতে, অfর মারুষের ধরে নববর্ষ ধে এসেছে তার পতাকাস্বরূপ দেপা দিলে কেবলমা এ দেয়ালে লটুকানো নতুন পঞ্জিকার একখানা পতি গেজেট-কর। ছুটির হিসেব নিয়ে। বড় হিসেবী মাহুষ উৎসবে,—সে তাই সময়টার অপব্যয় মেঘের পারে তারা যে নতুন আবদার করতে নারাজ হ’ল কবিদের হাতে উৎসবের রাশি পঞ্জিকাকারের হাতে উংসবের তালিকা প্রস্তুতের ভার দিয়ে তারা নিজের কাযে লেগে গেল—মিটিং, স্মৃতি-সভা, শ্রাদ্ধ, সভা, খদ্দর প্রচার দরিদ্র-নারায়ণের উপাসনা ইত্যাদি ইত্যাদি নানা দরকারী কায অক্লান্তভাবে করেই চল্ল গত বছরের মতো এ বছরও, এই হ’ল নতুন বছরের সঙ্গে আমাদের প্রায় ভাবতের যোগাযোগের সঠিক ইতিহাস । মান্তবের কাজের তাড়া ও সাড়। উংসবের স্বরকে চেপে মারলে, আর বিশ্ব-প্রকৃতির কাজের তাড়া উৎসবের বাশির সাড়ার সঙ্গে স্বর মিলিয়ে চলল সারা বছর। আমাদের টাউন-হলে,গায়ের মিউনিসিপাল আফিসে ছাত্রসমিতি পাবলিক লাইব্রেরী সাহিত্য-সভা,ধৰ্ম্ম-সভ প্রভৃতিতে স্বত কাজ তার চেয়ে অনেক বেশি, অনেক প্রয়োজনীয় কাজ চলেছে মাঠে-ঘাটে, বনে-জঙ্গলে, আকাশে-বাতাসে, জলে-স্থলে, এমন কি মরুভূমিটাতেও । কিন্তু সেই কাজের মাঝে সুর কোথাও ত বাদ যাচ্ছে না । আনন্দ মূচ্ছিত হচ্ছে না, সেখানে জন্মাচ্ছে সব আনন্দে মরছে সব আনন্দে আর মাহুষ আমরা সভায় দাড়িয়ে নিজের আনন্দে জাত বলে’ প্রচার করছি এবং ধরে এসে নিরানন্দের ফাসি ইচ্ছা করে’ গলায় দিয়ে আত্মহত্যা করছি—নুতন পুরাতন গত-আগত, অনাগত সব কালে । মাতুর্ষের এমন কাজে বাজ পড়ক-- এই প্রার্থনা নববর্ষে যদি করে’ বসি, তবে এমন কোনে। শক্তিমান দেবতা আছেন কি না যিনি এ-আব্দার পূর্ণ করতে পারেন ? কাজেই কাজ থেকে ছুটি নতুন বছর পুরোনে বছর কোন বছরেই নেই মানুষের, এটা নিশ্চয় নিশ্চয় । স্ত্রী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর