পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88b করিতে একজন দর্শক বলিল, "এ কি আশীৰ্ব্বাদ করিলেন ? ঐ দেখুন উহাব স্বামীব শব আসিতেছে । ৪ ত সহমরণে চলিয়াছে, আপনার আশীৰ্ব্বাদ আর কেমন করিয়া সফল হইবে ?” তুলসীদাস এই কথা শুনিয়। চিন্তিত হইলেন । শবের সহিত শ্মশানে গিয়া সকলকে বলিলেন, “তোমরা একটু অপেক্ষা কর, আমি না আসিলে উহাব ঔদ্ধদৈহিক ক্রিয়া করিও না।” এই বলিয়া তিনি স্নান করিতে গেলেন। স্বানের পর ধানে বসিলেন । র্তাহার ধ্যান আর ভাণ্ডে না । এদিকে যাহার শবদাহ করিতে আসিয়াছিল তাহার চিতা সাজাইয়া বসিয়া বিরক্ত হইতে লাগিল । কিন্তু মহাপুরুষের কথাও ঠেলিতে পারিল না। এক প্রহর পরে দেখিল, কাপড়-ঢাকা শব নড়িতেছে। কাপড় তুলিয়া দেখিল নিশ্বাস পড়িতেছে । এমন সময়ে গোস্বামী আসিয়া বধূকে বলিলেন, "মা, ভগবান আমার কথা রাখিয়ছেন, তোর স্বামীকে বাড়ী লইয়। ধা।” ক্রমে একথা নগরময় প্রচারিত হইলে গোস্বামীর কাছে এত লোক আসিতে লাগিল, যে, তিনি বাধ্য হইয়া কিছুকালের জন্য কাশী ত্যাগ করিলেন । তুলসীর জীবনী-লেখকের বলেন, মুসলমান বাদশ; এই সংবাদ পাইয়া তুলসীদাসকে ডাকিয়া অলৌকিক ক্ষমতার পরিচয় দিতে বলেন । তিনি বলিলেন, “আমার কোনো ক্ষমতা নাই। আমি রাম নাম ভিন্ন আর কিছুই জানি না।” বাদশা তুলসীকে কারাগারে পাঠাইলেন। রাত্রে মহাবীর বানরসৈন্য আনিয়া রাজধানী তোলপাড় করিলেন । পরদিন বাদশ ক্ষমা চাহিয়া ছাড়িয়া দিলেন। এঘটনা প্রায় সকল মহাপুরুষ ও তাহার ইষ্টদেবতা ন্ধে বর্ণিত হইয়াছে ; যথা—ভারতচন্দ্র ভবানন্দ 3. কারাগারে রাখিয়া কালীদেবীর সৈন্যদ্বারা দিল্লী তোলপাড় করিয়াছেন। ক্রবৃন্দাবন-বাসী প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ভক্তমালের গ্রন্থকার নাভাজী তুলসীদাসের বন্ধু ও ভক্ত ছিলেন। ভক্তমালে র্তাহার স্তুতি করিয়াছেন মাত্র । তাহাতে ঐতিহাসিক কিছুই নাই। তুলসীদাসের আরও কতকগুলি অলৌকিক ক্ষমতার প্রবাসী—শ্রাবণ, YOO) [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড গল্প আছে। কিন্তু গল্পগুলি সত্য বলিয়া বোধ হয় না । একবার, তাহার কোন ধনবান ভক্ত পুজার বাসন সোনারূপার করিয়া দেন । অসিঘাটের আশ্রমে সেগুলি ছিল । এপ চোর কযেকদিন সেগুলি চুরি করিতে আসিয়া দুইটি ধতুৰ্ব্বাণধারী বালককে রক্ষকরূপে দ্বারে দেখিয়া ফিরিয়া যায়। পংে গোসাঞি জানিতে পারিয়া, ঠাকুরের রক্ষণ করিতে কষ্ট গুইতেছে বলিয়া, বাসনগুলি দান করিয়া দেন। এরূপ গল্প অন্য মহাপুরুষ সম্বন্ধেও আছে। প্ৰহলাদ ঘাটে গোস্বামীর বন্ধু পণ্ডিত গঙ্গারাম যোশী মুজাপুরের কাছে কোন গহুরবার ক্ষত্রিয় রাজার জ্যোতিষী ছিলেন । একবার রাজকুমাব মৃগয়া করিতে গিয়াছিলেন। সেবকের আসিয়া বলিল, রাজকুমারকে বাধে খাইয়া ফেলিয়াছে । রাজা গঙ্গারামকে ডাকিয়া বলিলেন, “কাল সকালে গণনা করিয়া জানাইবে কুমারের কি হইয়াছে। ঠিক বলিতে পারিলে পুরস্কৃত হইবে, মিথ্যা বলিলে শূলে উঠিতে হইবে।” শূলের নাম শুনিয়া যোশীজি জ্যোতিষ ভুলিয়া গেলেন। তিনি বাড়ী আসিয়া তুলসীদাসকে সব কথা বলিলেন । তুলসীদাস কাগজ-কলম চাহিলেন। কালি না থাকায় খদির দিয়া রামশলাকা চক্র আঁকিয়া প্রশ্ন বিচার করিয়া বলিলেন, “তোমার রাজাকে বলিয়া আইস রাজকুমার জীবিত আছেন, আগামী কল্য আসিবেন ।” যোশী তাহাই করিলেন । পরদিবস কুমার বাড়ী ফিরিলেন। তিনি একটি অনুচরসহ কয়েকটি বাধের মুখে পড়িয়াছিলেন। উভয়ের ঘোড়া ও অনুচরকে বাঘে খাইয়া ফেলে। দূর হইতে অন্ত অম্লচরেরা দেখিয়া ভ্রমবশতঃ রাজকুমারের মৃত্যু-সংবাদ দিয়াছিল। রাজা যোশীকে এক লক্ষ টাকা পুরস্কার দিলেন। যোশী এই টাকা তুলসীদাসকে লইতে অনুরোধ করেন,কিন্তু তিনি স্বীকার করিলেন না । অনেক অনুরোধে দুই আনা অর্থাৎ ১২৫০০ টাকা লইতে স্বীকার করিলেন । এই অর্থ দিয়া তিনি বারটি মহাবীর-মন্দির স্থাপন করিলেন । এগুলি এখনও আছে। গঙ্গারামের উত্তরাধিকারীর কাছে ঐ খদিরে লেখা কাগজখানি এখনও আছে । তুলসীদাস কমবেশী ৯১ বৎসর বয়সে ১৬৮০ সম্বতে শ্রাবণ শুরু-সপ্তমীর দিন (২৩ জুলাই, ১৬২৩ : ) খুদেহ