পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষ বৃহৎ কারাগার “আমি জেলেই থাকি বা জেলের বাহিবেই থাকি, তাহাতে কিছু আসে যায় না—জেলে যাইতে আমি ভয় করি না ; কারণ, আমাদের দেশ ভারতবর্ষ বৃহত্তর কারাগার মাত্র " এইরূপ কথা অসহযোগ আন্দোলনের আরম্ভ হইতে অনেকের মুখে অনেক বার শুনা গিয়াছে। ইহার মানে এই যে, যে-দেশে জাতীয় স্বাধীনতা ও আত্মকর্তৃত্ব নাই, যে দেশে গবর্ণমেণ্ট যখন ইচ্ছা ব্যক্তিগত স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করিতে পারেন, তাহা বৃহত্তর কারাগার মাত্র । এরূপ কথাকে শুধু স্বাধীনতালিপ্তর ভাবুকতা-প্রস্থত আক্ষেপ বলা যায় না। ইহা শুধু আলঙ্কারিক কথাও নহে। সোজা কথার সোজা মানে করিলেও, এইরূপ উক্তি যে সত্যের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত, তাহা বুঝিতে পারা যায় । জেলের কয়েদীরা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে জেলের প্রাচীরের বাহিরে যাইতে পারে না। ভারতীয়েরাও ছাড়পত্র ব্যতিরেকে স্থলপথে বা জলপথে ভারতসাম্রাজ্যের সীমা ছাড়াইয়া যাইতে পারে না। খিলাফত সম্বন্ধে ভারতীয় মুসলমানদের মত ও অভিলাষ তুরষ্কের কর্তৃপক্ষকে জানাইবার জন্য একটি প্রতিনিধির দল গঠিত হইয়াছিল। এইরূপ একদল প্রতিনিধি আঙ্গোরা যায়, সম্ভবতঃ ইহা ব্রিটিশ গবর্ণমেণ্ট পছন্দ করেন না ;–অন্ততঃ কোন কোন ব্যক্তির যাওয়া সম্বন্ধে যে র্তাহাদের আপত্তি আছে, ইহা নিশ্চিত । এইজন্য মৌলানা শোকত আলী ভারত গবৰ্ণমেণ্ট কে জানাইয়াছেন, যে, কয়েক জন প্রতিনিধির পরিবর্তে অন্য কয়েকজনকে Պo- ՖՎ2 লওয়া হইয়াছে, এবং এখন তিনি আশা করেন, ষে, অতঃপর ভারত গবর্ণমেণ্টের আপত্তি হইবে না ; এই যে অহমতি লইয়া তবে ভারতবর্ষের বাহিরে যাইতে পাওয়া, এই অবস্থাটি কয়েদীদের অবস্থার সমতুল্য। এইরূপ নিয়ম সমুদয় সভ্য স্বাধীন দেশে আছে কি না, জানি না। যদি না থাকে, তাহা হইলে কয়েদীর অবস্থাটা বিশেষ করিয়া ভারতীয়দেরই দুরবস্থা বলিতে হইবে। যদি থাকে, তাহা হইলে যে-যে দেশে আছে, তথাকার লোকেরা এই একটি বিষয়ে ভারতীয়দের মত বন্দীদশাপন্ন, সুতরাং ঠিক স্বাধীন নহে। অবহু কোন দেশের গবর্ণমেণ্ট, যদি নিশ্চিত জানেন, যে, তদেশীয় কোন ব্যক্তি বিদ্রোহ বা বিপ্লবের ষড়যন্ত্র করিতে বিদেশে যাইতেছে, কিংবা ফৌজদারী আইন অমুসাবে দগুনীয় কোন গৰ্হিত কাজ করিতে তথায় যাইতেছে, তাহা হইলে তাহাকে ধাইতে বাধা দেওয়ার অধিকার ঐ গবর্ণমেণ্টের থাকা উচিত মনে হয়। কিন্তু সাধারণভাবে এই নিয়মটি বিবৃত করিলেও, এবিষয়ে গবর্ণমেণ্ট কে অসীম ও অনির্দিষ্ট অধিকার দেওয়া যাইতে পারে না। কারণ, তাহা হইলে সামান্য কোন-কিছু সন্দেহ হইলেই রাজপুরুষের মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করিবে, ইহা নিশ্চিত। সম্প্রতি মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, এবং কাশীর বাৰু শিবপ্রসাদ গুপ্ত ও র্তাহার পত্নী ইউরোপে যাইবার জন্য যথাক্রমে বাঙ্গল গবৰ্ণমেন্ট ও আগ্ৰা-অযোধ্যা গবর্ণমেণ্টের নিকট ছাড়পত্রের জন্য দরখাস্ত করেন। উক্ত মৌলানা সাহেব ও বাবু সাহেব স্বাস্থ্যলাভের জন্ম বিদেশ যাইতেছেন বলিয়া প্রকাশ করেন। উভয় প্রাদেশিক (AL