পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] আদর্শ অনুসারে বক্তৃতা ও কাজ করিয়াছিলেন। স্বরাজ্য দলের কার্য্যে ও বক্তৃতায় রাজনৈতিক কৌশল ছিল, এবং কখন কখন দপও প্রকাশ পাইয়াছিল। কংগ্রেস্সম্পৰ্কীয় কাৰ্য্যনিৰ্বাহক কমিটিগুলির সভ্যদিগকে মাসে ২০০০ গজ স্থত কাটিতে হইবে, র্যাঙ্গর তাহা না করবেন, তাহারা ঐ কবিণে স্বতঃই সভ্যপদ হারাইবেন, মহাত্মা গান্ধীর একটি প্রস্তাব প্রথমতঃ এইরূপ ছিল । ইহা কংগেসের ভিত্তিভূত নিয়মাবলীর অতুযায়ী কিম্ব তাহার বিরোধী হইয়াছিল, তাঙ্গার আলোচনা করিব না। দুই দিকেই অনেক বলিবার ' আছে । আমরা কেবল উক্ত কমিটিগুলির সভ্যত্বের এই যোগ্যতা সম্বন্ধে কিছু বলিতে চাই । কংগ্রেস কতকগুলি কাজকে জাতিগঠন-মূলক ও অবশ্যকৰ্ত্তব্য বলিয়া স্থির করিয়া রাখিয়াছেন; সেই কাৰ্য্যপদ্ধতি অনুস্থত হইলে প্রয়োজনমত নিরুপদ্রব আইন অমান্য নীতির অনুসরণ করিতে পারা যাইবে, কংগ্রেসের ইহাও মত। চরকায় স্থত কাটা ঐ কাজগুলির মধ্যে একটি । কিন্তু বরাবর দেখা যাইতেছে, যে, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির, মহাত্মা গান্ধী ও অন্য অল্পসংখ্যক লোক বাদে, অপরকে স্থত। কাটিবার উপদেশ দেন, কিন্তু নিজের কাটেন না । কথায় ও কাজে এরূপ অসঙ্গতি দীর্ঘ কাল একটা উপহাসের বিষয় হইয়া আছে। স্বতরাং এই দিক্ দিয়৷ মহাত্মা গান্ধীর প্রস্তাব খুবই ন্যায্য ও স্বসঙ্গত হুইয়াছিল । কংগ্রেসের গঠনমূলক কাৰ্য্যপদ্ধতির পরিবর্তন না হইলে ও স্থত কাটা তাহার মধ্য হইতে বাদ না যাইলে কিম্বা তাহা ইচ্ছাধীন করা না হইলে, আমাদের বিবেচনায় কমিটির সভ্যদের হয় স্থত কাটা উচিত, নতুবা সভ্যত্ব ত্যাগ করা উচিত। স্বরাজ্য দলের নেতারা মহাত্মা গান্ধীর প্রস্তাবের প্রতিবাদ নিখিলভারতীয় কংগ্রেসূ কমিটিতে ‘ করিয়াছিলেন ; তাহ তথায় না করিয়া তাহাদের উচিত ছিল, কংগ্রেসের কোন অধিবেশনে সূতা কাটাকে কাৰ্য্যপদ্ধতি হইতে বাদ দিবার বা অবশ্যকৰ্ত্তব্যের পরিবর্তে ইচ্ছাধীন করিবার চেষ্টা করা। স্বত কাটা কংগ্রেসের কার্য্যপদ্ধতির অঙ্গীভূত বলিয়া যাহা বলা উচিত, তাহা বলিলাম। উক্ত কাৰ্য্যপদ্ধতিতে বিবিধ প্রসঙ্গ—আহমেদাবাদে দুই দল Qやかご উহ ন থাকিলে অবশ্ব বিবেচনা করা চলিত, যে, স্থতা না কাটিলে ও ভারতবর্যের রাজনীতি-ক্ষেত্রে কম্মিষ্ঠ হওয়া ধায় কি না, এবং প্রধান কৰ্ম্মীদের শ্রেণীভুক্ত থাকা যায় কি না । এই প্রকারে সাধারণ ভাবে বিধস্তুটির আলোচনা করিলে দেখা যায়, ধে, চরকায় স্থত। না প।fটলেগু দেশহিতকর রাজনৈতিক ও অন্যবিধ অনেক কাজ করা যায়। কিন্তু কংগ্রেসের বওঁমান জাতিগঠনমূলক কাৰ্য্যপদ্ধতি অপরিবর্ধিত ভাবে কায়েম থাকিতে, তিনি স্থত। কাটেন ন। এমন কেহ কংগ্রেসের প্রধান কৰ্ম্মীদের শ্রেণী ভূক্ত থাকিতে পারেন না । মহাত্মা গান্ধীর প্রস্তাবটি কংগ্রেসের মূলনিয়মাবলীর বিরোধী বলিয়। তর্ক করিয়৷ স্বরাজ্যদল কমিটি-গৃহ হইতে চলিয়৷ আসেন । তাহার পর আলোচনামস্তর প্রস্তাবটি অধিকাংশের মতে গৃহীত হয়। মহাত্মা গান্ধী কিন্তু বলেন, ধে, স্বারাজিাকেরা উপস্থিত থাকিলে মূল-প্রস্তাবটি অবিকল গৃহীত হইত না । সেইজন্য তিনি, সুত না কাটিলেই কমিটির সভ্যত্ব স্বতঃ লোপ পাইবে, প্রস্তাবের এই শাস্তির অংশটি নূতন একটি প্রস্তাব পেশ করিয়া বাদ দেন । ইহা তাহার যোগ্য কাজ হইয়াছে। সুত৷ কাটার সহিত স্বরাজ-লাভের সম্পর্ক অনেকে বুঝিতে পারেন না ; সাক্ষাৎ সম্পর্ক ত পারেনই না। এই বিযয়টির বিস্তারিত আলোচনা এখানে করিবার স্থান ও সময় নাই । কেবল এইমাত্র বলিতে পারি, যে, স্বরাজ একটি বিদেশীর দেয় জিনিষ নহে ; বিদেশীরা কতকগুলি আইন ও নিয়ম করিয়া আমাদিগকে কতকগুলি অধিকার ও ক্ষমতা দিবে এবং তাহ হইলেই আমাদের স্বরাজ লাভ হইবে, আমরা এরূপ মনে করি না। স্বরাজের ভিত্তি জাতীয় ঐক্য, স্বাবলম্বন, শ্রমশীলতা প্রভৃতি । ধনী-নিধন, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, যুব-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, সকলেই যদি কিছু কষ্ট ও শ্রম স্বীকার করিয়া কিছু সময় দিয়া, একই এমন কোন কাজ করেন যাহা জাতির পক্ষে আবশ্যক, তাহা হইলে তাহা ঐক্যবিধায়ক অন্যতম উপায় হইতে পারে। চরকায় স্থত কাটা এইরূপ একটি কাজ । ধনী ও “শিক্ষিত”দের মনে সহজেই ইহার