পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©Ꮤ%Ꮼ না ; অল্পস:থ্যক লোক ছাড়া, আগে র্যাহারা আইনব্যবসা ছাড়িয়াছিলেন তাছারা আবার তাহাতে প্রবৃত্ত হইয়াছেন । অবশিষ্ট লোকদের ইচ্ছা হইলে তাহারাও চক্ষুলজ পরিত্যাগ করিয়া ভি নরবচিরের দ্বন্দ্ব লোপ কৰিতে পারেন । আহমেদাবাদে গোপীনাথ সাঙ্গ-সম্পৰ্কীয় প্রস্তাবটির উল্লেখ পূৰ্ব্বে করিয়াছি । মহাত্মা গান্ধা এবিষয়ে কোন বক্তৃত করেন নাই, এবং কোন পক্ষে ভোটও দেন নাই ; তিনি, অন্য কেহ কোন পক্ষে ভোট দিবেন, তৎসম্বন্ধে কোন প্রভাবপ্রয়োগে যথাসম্ভব বিরত ছিলেন। শ্রযুক্ত চিত্তরঞ্জন দাশ মহাত্মার প্রস্তাবের সংশোধক-স্বরূপ সিরাজগঞ্জের প্রস্তাবটা উপস্থিত করেন, এবং বক্তৃতাও করেন। মানুষের মনের ভাবকে গবর্ণ মেণ্টের ও ংলোইণ্ডিয়ানদের বিরুদ্ধে চালিত করিয়া স্বকাৰ্য্য-সাধন একটা সাধারণ কৌশল। চিত্তরঞ্জন-বাৰু এই কৌশল প্রয়োগ করেন ; বলেন, এই উপলক্ষ্যে ১৮১৮ সালের ৩নং রেগুলেশ্বান প্রয়োগের ভয় দেখান হইয়াছে, অতএব সেই কারণেই, সেই ধমকের জবাবস্বরূপ, সভ্যদের সিরাজগঞ্জের প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেওয়া উচিত । ইহাতে গবর্ণমেণ্টের প্রতি বিরুদ্ধ ভাবের সুযোগ গ্রহণ ছাড়া, পরোক্ষভাবে নিজে কমিটির সভ্যদের সমর্থন . লাভ করিয়া নিঃশঙ্ক হইবার ইচ্ছা ও চেষ্টাও হয়ত ছিল। ইহাকে দয়ার উদ্রেকের চেষ্ট বলা যায় কি না, ভাবিবার বিষয় । তাহার পর চিত্তরঞ্জন-বাবু বলেন, যে, এবিষয়ে অনিষ্টকর আন্দোলন প্রবর্তিত হওয়ায় বঙ্গের হৃদয় বিক্ষুব্ধ হইয়াছে ; অতএব, সভ্যগণের বঙ্গের মনোভাবের সহিত যদি কোন সহানুভূতি থাকে, তাহা হইলে তাহাদের সকলের একমত হইয়া সংশোধক প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়া উচিত। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের এরূপভাবে কথা বলিবার একটা অভ্যাস আছে, যেন তাহার দেশের সমস্ত বা অধিকাংশ লোকের হৃদয়ের ও বিবেঞ্চের রক্ষী । আমরা বঙ্গের যে-সব কাগজ দেখিয়াছি, তাহার অধিকাংশ সিরাজগর প্রস্তাবের প্রতিকূল সমালোচনা করিয়াছে। হইতে পারে, যে, তাহারা বাংলাদেশের মনের ভাব জানে প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ,১ম খণ্ড না, বা জানিয়াও তাহ প্রকাশ করিবার সাহস তাহীদের নাই ; কেবল স্বারাজ্যিকদেরই সেই জ্ঞান ও সাহস আছে ; কিন্তু আমরা অন্য কাহারও প্রতিনিধিত্বের দাবী না করিলেও নিজের মন জানিবার অধিকার রাখি । সুতরাং বলিতেছি, অন্ততঃ একজন বাঙালী চায় নাই, যে, কেহ বাংলার মুখ চাহিয়া সিরাজগঞ্জ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় । যাহা হউক, চিত্তরঞ্জন-বাবু পূর্বোক্তরূপ ওকালতি করিবার পর ৭৮ জন মূল প্রস্তাবের ও ৭০ জন সংশোধনের পক্ষে ভোট দেয় । ইহা হইতে বুঝা যায়, যে, কংগ্রেসের অনেক মাতব্বর ব্যক্তির অহিংসায় বিশ্বাস ওষ্ঠ-গভীর। একজন মহারাষ্ট্রীয় সভ্য ত মহাত্মাজীকে বিদ্রুপ করিয়া বলেন, যে, অহিংসাবিষয়ে মহাত্মার চরমপস্থিত দেশের লোক গ্রহণ করিতে অসমর্থ, তিনি র্তাহার অসম্ভব সাত্ত্বিকতা জোর করিয়া দেশের লোককে গিলাইতে চেষ্টা করিতেছেন । মহাত্মা তাহার ইয়ং ইণ্ডিয়াতে আহমেদাবাদের অধিবেশন সম্বন্ধে যে-প্রবন্ধ লিখিয়াছেন, তাহাতে দেখা যায়, যে, সিরাজগঞ্জ প্রস্তাবের পক্ষে ৭০ জন মত দেওয়ার পর সভাস্থলে শোচনীয় লঘুচিত্ততার প্রাদুর্ভাব হয়, এবং তাহাতে র্তাহার হৃদয়ে শেল বিদ্ধ হয় । বস্তুতঃ যিনি একটি আদর্শের জন্য প্রাণপণ ও সৰ্ব্বস্বপণ করিয়া সৰ্ব্বত্যাগী হইয়াছেন এবং কঠোর তপস্যা করিতেছেন, সেই আদশটি সাক্ষাৎ, বা পরোক্ষভাবে তাহার তথাকথিত দলের লোকদের পরিহাস-উপহাসের বিষয় হইলে তাহার মৰ্ম্মবেদন কল্পনা করিবার সামর্থ্যও সাধনাসাপেক্ষ । বস্তুত:, র্যাহারা অহিংসায় বিশ্বাস করেন না, তাহাদের সিরাজগঞ্জের মত এমন কোন প্রস্তাবে মত, দেওয়া উচিত নয়, হিংসা-পরিহার ও অহিংস নীতির অনুসরণ জ্ঞাপন যাহার অংশ। পুরাপুরি হিংসা, বাহুবল ও অস্ত্রবলের সমর্থক কোন প্রস্তাব উপস্থিত করিয়া তাহার পক্ষে ভোট দেওয়া, কিম্বা চুপ করিয়া থাকা তাহাদের উচিত। নতুবা কপটতা হয়, ভিতরে বাহিরে মিল থাকে না ।