পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(t:సెఇ মানুষের সমস্ত শক্তিকে এমনিভাবেই অস্বীকার করিল, যে, শ্রোতামাত্রেই উপলব্ধি করিলেন, উদ্যোগ ও পৌরুষ যেন শুধুই নিৰ্ব্বদ্ধিতা-প্রস্থত। বৃদ্ধ হুটবিহারী চাটুষ্যে হকাটা টানিতে টানিতে ফণী চৌধুরীদের বাটার দিকে আসিতেছিলেন, কালো মোজার উপর সাদা-মোজ-আবৃত পা দু’টি যে ‘চাটজোড়াটির মধ্যে ভ্রমণ করিতেছিল, তাহার প্রকৃত বর্ণ বিশেষ পর্য্যবেক্ষণের পর জানিতে পারা যাইত । গাত্রে তুলার একটি কুৰ্ত্তি ও তদুপরি মস্তক আবৃত করিয়া বালপোষ। রামজীবনকে হন হন করিয়া আসিতে দেখিয়া চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন করিলেন, “এত সকাল সকাল এদিকে কোথায় চলেছ হে ?”

  • অজ্ঞে, গয়লাবাড়ী যাব একবার " “চায়ের নেশ করেছ বুঝি ? এই ত বাপু, স্বদেশী স্বদেশী করে বেড়াও, কেন ও বিলিতী নেশা বলদিকি ! খদর পৰ্বলেই স্বদেশী হয় না। আমরা ওসব দেখে শুনে চুপ হয়ে আছি ।”

“আজ্ঞে না, চা ত আমি পাই নে। গয়লাবাড়ী যাচ্ছি, সাতু গয়লাকে ডেকে গরুটা দুইয়ে নেবো ।” "এত সকালে দুধ কে খাবে ? তোমার বুড়ো পিসী, ন তুমি ? বাড়ীতে ত দু’জন লোক মোটে।” বলিয়া রামজীবনের মিথ্যা জবাবদিহিট তিনি যে নিতান্তই কিয় কেলিয়াছেন ও এই প্রশ্নে তাহার মত এমএ পাশ ছোকরাকে যে "একেবারে বোকা বানাইয়া ছাড়িয়া নিছেন এইভাবে একটু হাসিয়া তিনি ইকাটায় একটা arন দিলেন ও চলিয়া যাইবার উপক্রম করিলেন । nমজীবন মৃদুস্বরে কহিল, “আমি কি মিথ্যা কথা बन्जाभ ? कि आफ्री !” বলিয়া সেও অগ্রসর হইতে উপক্রম করিল। কথাটায় তাহার স্বতঃসিদ্ধ ধারণার প্রতিবাদ করার খৃঃত প্রকাশ পাইল অনুভব করিয়া চট্টোপাধ্যায় ফিরিয়া দাড়াইয়া রুক্ষকণ্ঠে কহিলেন, “দেখ, ছোটমুখে বড়কথা ভাল নয়। লেখাপড়া শিখে একটা হস্তিমূখ হয়েছ কিনা! তোমার বাপের থেকে বয়সে বড় আমি,তা खांन ?” প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড • হতভম্ব হইয়া রামজীবন কহিল, "কেন, আমি ত আপনাকে কিছু বলিনি” ! “আবার কি বলবে? ধরে জুতো মারবে ? আমি আশ্চৰ্য্য লোক হ’য়ে গেলাম ?” রামজীবন কহিল, “জ্যেঠামশায় আপনি শুনতে ভূল করেছেন ; তা হ’লেও আপনি রাগ করবেন না, ক্ষমা করুন ।” অপেক্ষাকৃত নরম হইয়৷ চট্টোপাধ্যায় কহিলেন, “আহ, ক্ষমা তোমায় কেন করব না ! কথাটা হচ্ছে একটু বিনয়ী হবে, যতই লেখা পড়া শেখ আমাদের যে অভিজ্ঞতা, এ পেতে হ’লে এই বয়স হওয়া চাই, বুঝলে— তবে বুঝে সমূঝে’ কথা কইতে শিখবে । তোমাকে মিথু্যক কি আমি বলিছি বলদিকি ? হ্যা, তা এত সকালে দুধ কি হবে ?” “আজ্ঞে, নিস্তার-মাসীদের বাড়ীর জন্তে । জানেন ত ছেলেট এযাত্রা বোধ হয় রক্ষা পেলে, কিন্তু মেয়েটাকে আবার ধরেছে । ডাক্তার দুধটা খেতে বলেছে বেশী করে । তা ভগবানের কুপায় ওদের গরুটা দুধ পৰ্য্যাপ্তই দেয়। সকালবেলা রোগীদুটির পথ্যের জন্যই দুধ দরকার।" “মেয়েট, সেই বিধবা মেয়েটা বুঝি।” “আজ্ঞে হঁj| P? * “তার পথ দুধ ! তা ভাল। কি রোগটা তার ?” "স্ত্রীরোগ-গোছের ।” ‘বিধবা-মামুষের আবার স্ত্রীরোগ ! তার মানে ?” “আজ্ঞে, বিধবা হ’লেও স্ত্রীলোক ত বটে। ম্যালেরিয়ায় ভূগে’ ভুগে কাহিল শরীরের উপর ভায়ের অস্বথের সময় অত্যাচার হয়েছে, ঠাণ্ড লেগেছে । হেমারেঞ্জ হ’য়ে রক্তহীন হ’য়ে পড়েছে ।” “দেখ রামজীবন, বিধবা মানুষের ঠাণ্ড-লাগা-টাগ কিছু নয়। অমুখ হয়েছে বলে অত বিবির মত যত্ব করা, ডাক্তার-দেখানো, দুধ-খাওয়ানো, তার উপকার করা নয়, মহা অপকার করা । বিধবা, রোদে আগুনে জলে ভাজ-ভাজা হবে, সে ত বিবি নয় । ওসব কাজ ঠিক নয়। আগুনের ফুলকির মত মেয়ে, ও কোনওরকমে মরে গেলেই ওর মায়ের জঞ্জাল যায়, তা জান? তার থেকে