পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br8ミ ইহাতে বিস্তর লোকের, আর্থিক সৰ্ব্বনাশ ও নৈতিক অধোগতি হইয়াছে। এইজন্য ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভার একজন দেশী সভ্য এই জুয়াখেলার বিরুদ্ধে একটি আইনের পাণ্ডুলিপি তৈয়ার করিয়া তাহা সভায় উপস্থিত করিবার নিমিত্ত বড়লাটের অনুমতি চাহিয়াছিলেন। তিনি অনুমতি দেন নাই । তাহার কারণ নাকি এই, যে, ঘোড়দৌড়ে কোন ঘোড়া জিতিবে তাহা স্থির করিয়া তাহার উপর বাজি রাখা দক্ষত-সাপেক্ষ । যাহা দক্ষত সাপেক্ষ, তাঙ্গতে জিত আকস্মিক নহে, স্বতরাং তাহা জুয়াখেলা নহে, ইহা বলাই বোধ হয় বড়লাঁটের অভিপ্রায় । কিন্তু অন্য যত-রকমের জুয়াখেল আছে, তাহাতেও পাকা জুয়াড়ির দক্ষত দ্বারা জিতে । তাহাদের জয়লাভ কেন দণ্ডনীয় বিবেচিত হয় ? মেদিনীপুর বিধবাবিবাহ-সমিতি ১৯২৩ সালের এপ্রিল মাসে মেদিনীপুর বিধবাবিবাহ সমিতি স্থাপিত হয়। তখন হইতে এপর্য্যন্ত এই সমিতির শুভ চেষ্টায় বাইশট বিধবার বিবাহ হইয়াছে। এইরূপ সমিতি সকল জেলায় স্থাপিত হওয়া উচিত। মেদিনীপুর সমিতির সম্পাদক শ্ৰীযুক্ত ভাগবতচন্দ্র দাসের মত উদ্যোগী লোক সৰ্ব্বত্র থাকিলে সকল সমিতিই সিদ্ধিলাভ করিতে পারিবেন। • নূতন ভারতীয় মহিলা মাজিষ্ট্রেট, বৎসরাধিক কাল পূৰ্ব্বে মান্দ্রাজের সৈদাপেটে শ্ৰীমতী মার্গারেটু কাজিন্স, অবৈতনিক মাজিষ্টেটু নিযুক্ত হইয়াছিলেন। সম্প্রতি মান্দ্রাজের মদন পল্লেতে শ্ৰীমতী জয়লক্ষ্মী আম্মল বি-এ, অবৈতনিক মাজিষ্ট্রেটু নিযুক্ত হইয়াছেন। ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে ইহার পূৰ্ব্বে বোম্বাইয়ে লেডী জগমোহনদাস বরজীবনদাস, লেডী কাওয়াসজী জাহাঙ্গীর এবং দিলশাদ বেগম অবৈতনিক মাজিষ্ট্রেটু নিযুক্ত হইয়াছিলেন । দেশ-বিদেশের এইরূপ খবর আমরা অনেক দিয়া থাকি । তাহার উপর আমরা অনেক সময় কোন মন্তব্য প্রকাশ করি না। সাধরণতঃ তাহার একটা কারণ এই, প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড যে, যদিও আমরা বিশ্বাস করি, যে, জগতে পুরুষ ও নারীর দৈহিক গঠন, প্রকৃতি ও কাৰ্য্যক্ষেত্রের কিছু পার্থক্য আছে, তথাপি কোন-কোন বৃত্তি, ব্যবসায়, কার্ষ্য ইত্যাদি কেবলমাত্র পুরুষদের এবং কোনগুলিই বা কেবলমাত্র নারীদের উপযোগী, অধিকাংশ স্থলে তাহা আমরা জানি না । পুথিবীর বয়স নিতান্ত কম নয় ; কিন্তু তথাপি পুরুষ ও নারীর কার্য্যবিভাগ-সম্বন্ধে এখনও মানুষের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা জন্মে নাই। এই কারণে আমরা নারীগণকে নূতন কিছু করিতে দেখিলেই, স্বষ্টিলোপের আশঙ্কা করি না—যদিও আমাদের প্রকৃতিগত রক্ষণশীলতাবশতঃ সকলস্থলে উল্লসিতও হইতে পারি না । সম্ভবতঃ তাহা অামাদের দোষ । রাজ্যশাসন-সংক্রান্ত কাজ যখন যে-দেশে নারীরা করিয়াছেন, তাতারা তখনই তাহাতে অসামর্থ্য প্রদর্শন করিয়াছেন, ইহা ত বলা চলেই না ; বরং ইহাই সত্য, যে, অনেক রাজ্ঞী ও সম্রাজ্ঞী আপনাদিগকে দক্ষতম রাজা ও সম্রাটুদের সমশ্রেণীস্থ বলিয়া প্রমাণ করিয়াছেন । সুতরাং ঘরের বাহিরের কোনও কাজ নারীদের উপযোগী নহে, বা তাহাতে র্তাহীদের নারীত্বের ব্যত্যয় হইবে, ইহা মানিয়া লইতে পারা যায় না। বাহিরের কৰ্ম্মক্ষেত্র ত লক্ষ লক্ষ বৎসর পুরুষদের প্রায় একচেটিয়া ছিল । তাহাতে মানব-সমাজের মধ্য হইতে নানা গুরুতর দোষ-ত্রুটি অন্তহিত হয় নাই এবং শ্ৰী শুচিত ও স্বাস্থ্যের পূর্ণ বিকাশ হয় নাই। গৃহস্থালীর বাহিরের কার্য্যক্ষেত্রে নারী পুরুষের সহকারিণী হইলে মানব-জাতির উন্নতির পথ অধিকতর সুগম হইতে পারে কি না, তাহ পরীক্ষা করিলে ক্ষতি নাই। স্বষ্টিসৌধের ভিত্তি এত কাচা নয়, খে, এই পরীক্ষায় স্বষ্টি-লোপের আশঙ্কা ঘটিবে । নারীর আর্থিক স্বাধীনতা পুরুষদের বেলায় আমরা ইহা সবাই স্বীকার করি, যে, পরমুখাপেক্ষিতায় তাহাদের মনুষ্যত্ব খর্ব হয়, এবং স্বাবলম্বী হইতে পারিলে তাহাতে চারিত্রিক উৎকর্ষের অধিকতর সম্ভাবনা ঘটে। নারীদের বেলায় কিন্তু ইহা স্বীকার করিতে সকল দেশেই বিলম্ব ঘটিয়াছে ও ঘটিতেছে ।