পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిఫిన్రి নিশ্বাস ফেলিয়া ফেলিয়, ‘কহিল আমার আমন মেয়ে, তার কীই বা আমি করলাম। চোখ কান বুজে একটা জানোয়ারের :াতে সঁপে দিলাম মেয়েকে। এমন ঝকমারি কাজ মানুষ করে ? পোষ্টাপিসে পৌছিতে তার দেরী হইয় গেল। পোষ্টমাষ্টার বলিলেন, ‘দিন কে দিন বড় ধে নবাব হয়ে উঠছ হে কৈলাস ? "আঙ্গে, মেয়েটার বড় অসুখ বাবু। পোষ্টমাষ্টার তার দুৰ্ব্বলতা জানিতেন, একটু নরম স্বরে বলিলেন, ‘মেয়ের তে তোমার অসুখ লেগেই আছে । কৈলাস উৎসাহিত হইয়া বলিল, “সাধে অশ্লথ লেগে থাকে বাবু ? মনের কষ্টে । জামাই যে মান্তয় নয়, ডেকে জিজ্ঞেস করে না। একদিন-দুদিনের জন্য যদি বা আসে তে মেরে গাল দিয়ে ভূত ছাড়িয়ে দিয়ে যায়। মেয়ে আমার খায় না দায় না, দিবারাত্তির কাদছে, অম্লখ হবে না ? দ্রুত পটু হস্তে সে চিঠির তাড়া গুছাইয়া নিতে লাগিল । গলা নামাইয়া বলিল, “আপনার জামাইটি ভাল। আমায় সেদিন ডেকে বললেন: কৈলেস, অমন খাসা শাড়ী নিয়ে যাচ্ছ কার জনো ? আমি বললাম, মেয়ে পরবে জামাইবাবু, গরীবের মেয়ে হলে কি হয় মেয়ের আমার সর্থটি আছে পরেআত্রায়। জামাইবাবু হেসে কাপড়ের দাম জিজ্ঞেস করলেন, তারপর আমার হাতে টাকা গুজে দিয়ে বললেন, "আমায় এক জোড়া এনে দিও তে কৈলাস। লুকিয়ে এনে r পোষ্টমাষ্টারের মুখের দিকে চাহিয়া চোখ মিটমিট করিয়া কৈলাস রহস্যটা তাকে বুঝাইয়া দিল, ‘দিদিমণির জন্যে আর কি, তাই লুকিয়ে আনতে বলা । তোমার মুখে দাগ কিসের কৈলাস ?” কৈলাসের বকুনি থামিয়া গেল । সে সংক্ষেপে জবাব দিল পড়ে গিয়েছিলাম।” পোষ্টমাষ্টার সিন্দুক খুলিয়া টাকা বাহির করিয়া দিলেন। আজ ইনসিওর নাই, মনিঅৰ্ডারও কম। সই করিয়া টাক লষ্টয়া কৈলাস বলিল, "আমায় গোট কুড়িক টাকা দিন । "এবার হবে না কৈলাস। বলিয়৷ পোষ্টমাষ্টার মাথা নাড়িলেন । কৈলাস কোমরের কাপডের ভিতর হইতে একটা টাকা Sово বাহির করিয়া পোষ্টমাষ্টারের সামনে টেবিলের উপর রাখিল । বলিল, আগাম স্থদ দিচ্ছি বাবু দিন। মাইনে থেকে পাচটাক ক'রে কাটবেন, চার মাসেই শোধ হয়ে যাবে। নতুন তো নয় ? কুদের জন্য নয় হে ! পোষ্টমাষ্টার টাকাটা দুই আঙ্গুলে তুলিয়া লইলেন, কিন্তু পকেটে ভরিলেন না, কি জান, সাহস হচ্ছে না। কোনদিন ইন্‌পেক্টর হুট করে এসে পড়বে, বলবে সিন্দুক খোলে। একেবারে ডুবে যাব তাহলে। তোমার কি বল, গায়ে তোমার আঁচড়টি লাগবে না, টানাটানি করবে আমাকে নিয়েই । মাথা নাড়িলেন একটা টাকার জন্য অতবড় ভয়ানক দায়িত্ব নিতে পারি ন৷ কৈলাস । একট। টাকা কি কম হ’ল বাৰু ? কৈলাস অনিচ্ছার সঙ্গে একটা সিকি বাহির করিয়া দিল । - টাক আর সিকিট পকেটে ভরিয়া পোষ্টমাষ্টার আবার সিন্দুক খুলিলেন। কুড়িটি টাকা বাহির করিয়া কৈলাসকে দিলেন । কথা আর তিনি বলিলেন না, নীরবে কাজ করিতে লাগিলেন। একটু লজ্জা বোধ হয়। যৎসামান্য। হাটে পৌছানো মাত্র কৈলাসকে ঘিরিয়া ভিড় জমিয়া গেল। তার মধ্যে এমন নরনারীর সংখ্যা অল্প নয়. একটি পোষ্টকার্ড পাওয়া যাদের জীবনে বিশেষ ঘটনা। তাদের আগ্রহ ও উত্তেজন কৈলাসকে চিরদিনই বিশেষভাবে বিচলিত করে । চিঠি বিলানো সকলের প্রতি তারই যেন অনুগ্রহ । ধনীর দারোয়ানের কাঙালী বিদায় করার মতই গৰ্ব্ব সে বোধ করে ! ছেলেবেল কালী মাঝে মাঝে তার সঙ্গে হাটে আসিত । কৈলাসের ইচ্ছা হয় কালীকে এখন একবার সঙ্গে লইয়া আসে, সে দেখিয়া যায় হাট-ভরা লোক কি ভাবে তার বাপের পথ চাহিয়া থাকে, তাকে কত খাতির করে । কত লোককে সে ইাসায়-কাদায়। অপর চিঠি পড়িয়া বলে, মুখবর এনেছ কৈলেসদ, যাওয়ার সময় ফুটিটুটি একটা কিছু তুলে নিয়ে যেও। বসন্ত চিঠি হাতে ধূলার উপর বসিয়া পড়ে। তার দেওয়া চিঠির খবরে হরিদাসী হাটের কলরব ছাপাইয়া আৰ্ত্তনাদ করিতে থাকে। এসব দেখিলে কালী কি রকম আশ্চৰ্য হইয়া যায়। . শেষ দুপুরে প্রাপ্য তরিতরকারী সংগ্ৰহ করিয়া গামছায়