পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8eš. কতকগুলি বন্দীর প্রায়োপবেশন উপলক্ষ্যে আলবার্ট হলে প্রথম যে সভা হয়, তাঙ্গতে গবন্মেন্টকে কিছু অনুরোধ করা হয়। সেই সভায় আমি বলিয়াছিলাম, “অরণ্যে-রোদন” দুই প্রকার। বৃক্ষপূর্ণ জনমানবশূন্য অরণ্যে রোদন একবিধ অরণ্যে-রোদন, এবং রাষ্ট্ৰীয়শক্তিহীনলোকারণ্যে রোদন অন্যবিধ অরণ্যে-রোদন ; কারণ উভয়ই নিষ্ফল । গবন্মের্ণটকে আমাদের অনুরোধ অরণ্যে-রোদন, কিন্তু স্বভাবের দোষে বা মনের কষ্টে বা কাহারও হিতার্থে তাহ আমরা করিয়া থাকি।” বোধ করি, ভারতীয় সব সম্পাদকই কখনন-কখন ইহা করিয়া থাকেন। মৃতরাং তস্কপ কাজের জন্য রবীন্দ্রনাথ প্রভৃতির স্বভাবে বিশেষ কোন অসাধারণত্ব আরোপ করা যায় না । অনুরোধের ফল যাঙ্গাই হউক, গবন্মে ণ্টকে যে অনুরোধ করা হইয়াছে, তাহ আমাদের বিবেচনায় ঠিকৃ, এবং স্বদেশের কল্যাণকামনায় তাহ করা অঙ্কুচিত হয় নাই । টেলিগ্রামটিকে লিবার্যাল ম্যানিফেষ্টে ( মতজ্ঞাপক পত্র } বা মূভ ( চাল) বলা হইয়াছে। তাহা হইতে পারে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এবং আরও কোন কোন স্বাক্ষরকারী লিবার্যাল বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের লোক নহেন । আর একটি মন্তব্য এই, যে, গবন্মের্ণ কংগ্রেসের প্রচেষ্টা স্থগিত রাখিবার ঘোষণায় সাড়া দিতে ধেরূপ অবজ্ঞার সহিত অস্বীকার করিয়াছেন এবং অন্যান্য প্রকারেও জনমতে উপেক্ষ প্রদর্শন করিয়াছেন, তাহাতে গবশ্নের্ণটকে আবার কোন অনুরোধ-উপরোধ করা অপমানকর । এইরূপ মনোভাব অসঙ্গত বা অস্বাভাবিক নহে । পরাধীনত সাতিশয় অপমানকর । এই অপমানকর অবস্থা হইতে উদ্ধারলাভ করিবার জন্ত কেহ অস্ত্র ধারণ করে, কেহু-ব নিরুপদ্রব অহিংস প্রতিরোধের পস্থা অবলম্বন করে । এরূপ কোন উপায়ই যাহার, যে-কোন কারণেই হউক, অবলম্বন করে নাই অথচ যাহারা পদলেহন করিতেও রাজী নয়, তাহাদের পক্ষে গবন্মেন্টের কৰ্ত্তব্য পুনঃ পুনঃ নির্দেশ করিয়া দেওয়াটা অঙ্কুচিত মনে করি না। কারণ ইহাতে গবন্মেণ্টের এবং ভারতীয় লোকদের উভয়েরই কল্যাণের সম্ভাবনা ৷ দুনীতির কাজ, নীচাশয়তার কাজ করা সৰ্ব্বদা অনুচিত । কিন্তু অপমানকর পরাধীন অবস্থা হইতে মুক্তিলাভের জন্ত সশস্ত্র বা নিরস্ত্র SO80 বিদ্রোহ ছাড়া আর কোন অপমানহীন পন্থাই নাই, মনে করি না। অবশ্য ইহা ইতিহাস-সমর্থিত সত্য, যে, পরাধীন দ্বারা স্বাধিকার অর্জনের চেষ্টা অপেক্ষ অধিকতর সম্মানকর ৪ ফুৰ্ত্তিজনক কোন পন্থা নাই । কিন্তু যদি কোন কারণে তাহা ব্যর্থ হয় বা সেইরূপ পথ অবলম্বন করা ন-চলে, তাহ হইলে নিশ্চেষ্ট ভাবে পরাধীনত মানিয়া লগুয়, অভিমান করিয়া ঘরে বসিয়া থাকা, কিংবা আত্মহত্যা করা ছাড়া অন্য কৰ্ত্তব্যও থাকিতে পারে । ( ২৬ শে জ্যৈষ্ঠ । ) এরূপও লিখিত হইয়াছে যে, গবন্মেণ্ট বরাবর তাহাদের দমননীতি ও তদ্বিপ অন্যান্য নীতি এবং কাৰ্য্যপ্রণালী অভ্রান্ত, এবং তাহ। ক্রমশঃ অধিক হইতে অধিকতর ভারতীয়দের সমর্থন পাইতেছে বলিয়। দাবি করেন, এবং ইহাও দাবি করেন. যে, অধিকাংশ ভারতীয় কংগ্রেসের উপর বিরক্ত এবং কংগ্রেসের সহিত গবন্মে প্টের সংগ্রামে গবন্মেণ্টের পোষকত করে : কিন্তু স্বাক্ষরকারীর প্রধান মন্ত্ৰী ৪ ভারত-সচিবকে যে টেলিগ্রাম পাঠাইয়াছেন, তাহাতে এই সরকারী দাবির সত্যত কাৰ্য্যতঃ অস্বীকৃত হইয়াছে, এবং ইহাই প্রমাণিত হুইয়াছে, যে প্রভাবশালী ও জ্ঞানালোকপ্রাপ্ত বক্স ব্যক্তির মত গবন্মেণ্টের সমর্থক নহে । আমরাও মনে করি, টেলিগ্রামটি হইতে পরোক্ষভাবে এইরূপ অনুমান কর যুক্তিসঙ্গত । কিন্তু স্বাক্ষরকারীদের টেলিগ্রামের উল্লিখিতরূপ প্রশংসার সঙ্গে সঙ্গে ইহাও বলা হইয়াছে, যে, আবেদন-নিবেদনঅনুরোধে গবন্মেন্টের কার্য্যপ্রণালীর সংশোধন ও ব্যবহারের উন্নতি হুইবে না ; তার চেয়ে বেশী ফলপ্রদ কিছু চাই- . তাহা স্বশাসক ব্রিটিশ ডোমীনিয়নগুলি বহু পূৰ্ব্বে প্রমাণ করিয়া দিয়াছে ; অবস্থার উন্নতির জন্য জনগণ এখন আর কর্তৃপক্ষের মুখাপেক্ষ করে না, তাহারা তাহাদের নেতৃবর্গ ও বিশ্বাসভাজন মুখপাত্রদের উপর নির্ভর করে, এবং তাহাদের নিকট হইতে কাজ চায়, কথা নহে । কথাগুলিতে শোঁধ্যের ভঙ্গী আছে, এবং এই ইঙ্গিতও আছে যে, স্বাক্ষরকারীর নেতা নহেন ও জনগণের বিশ্বাসভাজন মুখপাত্র নহেন । আমাদের মন্তব্য এই যে, কথাগুলির মধ্যে যতটুকু সত্য আছে, তাহ সম্ভবতঃ স্বাক্ষরকারীরা অনবগত নহেন ; মহাত্মা গান্ধীর চেয়ে বড় নেতা কেহ