পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ সাধু ও চলিত ভাষা 8?ソ শৃঙ্খল। চলিতভাষার স্বচ্ছন্দ বিস্তারের কারণ, শৃঙ্খলের একাস্ত অভাব। একের শুঙ্খলার ভার এবং অন্তের বিশৃঙ্খল উভয়ের মিলনের অন্তরায় হয়ে আছে। যদি লৈখিকভাষাকে কালোপযোগী লঘু শৃঙ্খলায় নিরূপিত করতে পারা যায় তবে সাধু ও চলিতের প্রকারভেদ দূর হবে, একই লৈখিকভাযায় দর্শন বিজ্ঞান পুরাণ ইতিহাস অবধি লঘুতম সাহিত্য পয্যস্ত স্বচ্ছদে রচিত হতে পারবে, বিষয়ের গুরুত্ব বা লঘুত্ব অনুসারে ভাষার ভঙ্গীর অদল-বদল হবে মাত্র। লৈপিক ও মৌখিক ভাষার ভঙ্গীগত ভেদ অনিবাধ্য, কারণ, লেখবার সময় লোকে যতটা সাবধান হয়, কথাবাৰ্ত্তায় ততটা হতে পারে না। কিন্তু দুষ্ট ভাষার প্রকারগত ভেদ অস্বাভাবিক। কোনও এক অঞ্চলের মৌখিকভাষার প্রকার আশ্রয় করেই লৈথিকভাষা গড়তে হবে। এ বিষয়ে ভাগীরথ-মৌখিকভাষারই যোগ্যতা বেশী, কারণ, এ ভাষার পীঠস্থান কলকাতা সকল সাহিত্যিকের মিলনক্ষেত্র, রাজধানীও বটে। কিন্তু যদি ভাগীরথ-মৌখিকভাষার উচ্চারণের উপর অতিমাত্র পক্ষপাত করা হয় তবে উদ্যম পণ্ড হবে । শতচেষ্ট৷ সত্ত্বেও বানান ও উচ্চারণের সঙ্গতি সৰ্ব্বত্র বজায় রাপা সম্ভবপর ময় । মতে, ছিলো, কীল, করো’ ইত্যাদি কয়েকটি রূপ না-হয় উচ্চারণস্বচক (?) করা গেল, কিন্তু আরও শত-শত শব্দের গতি কি হবে ? বিভিন্ন টাইপের ভারে আমাদের ছাপাখান নিপীড়িত, তার উপর যদি ও-কারের বাহুল্য আর নূতন নুতন চিহ্ন আসে তবে লেখার ও ছাপার শ্রম বাড়বে মাত্র। ‘কাল’ অর্থে কল্য বা সময় বা কৃষ্ণ, ‘করে’ অর্থে does কি having done, তার নির্ধারণ পাঠকের সহজবুদ্ধির উপর ছেড়ে দেওয়াই ভাল, অর্থবোধ থেকেই উচ্চারণ আসবে অবশু, নিতান্ত আবশুক স্থলে বিশেষ ব্যবস্থা করা যেতে পারে। উচ্চারণের উপর বেশী ঝোক দেওয়া অনাবশ্বক। কলকাতার লোক যদি পড়ে রমণীর মোন আর বরিশাল-বাসী যদি পড়ে ‘রোমেণীর মঅন, তাতে সৰ্ব্বনাশ হবে না, পাঠকের অর্থবোধ হলেই যথেষ্ট । লৈখিকভাষাকে স্থানবিশেষের উচ্চারণের অনুলেখ করা অসম্ভব । লৈথিক বা সাহিত্যের ভাষার প্রকার সংযত নিরূপিত ও সহজে অধিগম্য হওয়া আবশ্বক, নতুবা তা সৰ্ব্বজনীন হয় না, শিক্ষারও বাধা হয়। স্বতরাং একটু রক্ষা ও রুত্রিমত অর্থাৎ সকল মৌখিক ভাষা হতে অল্পাধিক প্রভেদ-— অনিবাধ্য। মোট কথা, চলিতভাষাই একমাত্র লৈপিকভাল হবার যোগ্য, যদি তাতে নিয়মের বন্ধন পড়ে এবং সাধুভাষার সঙ্গে রফ করা হয়। বহু লেখক যে আধুনিক চলিতভাষাকে দর থেকে নমস্কার করেন তার কারণ কেবল অনভ্যাসের কুণ্ঠ নয়, তার এ ভাষার নমুনা দেখে পথহার হয়ে যান। বিভিন্ন লেপকের মর্জি অতুসারে একষ্ট শব্দের বানান বদলায়, একই রূপের বিভক্তি বদলায়, কন্তু বা অকারণে ক্রিয়াপদ বিশেষ্য সৰ্ব্বনামের আগে এসে বসে, বাংলা শব্দাবলীর অদ্ভূত সমাস কানে পীড় দেয়, ইংরেজী ইড়িয়মের সঙ্গয় মাতৃভাষ! চেনা যায় না । সাধুভাযার প্রাচীন গণ্ডি ছেড়ে চলিতভাযায় এলেক্ট অনেক লেখক একটু অস্থির হয়ে পড়েন। এই অস্থিরতা মুক্তিজনিত, এতে উদবেগের কারণ নেই। বাঙালী কুলবধ আবাসের গণ্ডিতে আড়ষ্ট হয়ে থাকে, প্রবাসে এলেক্ট কিঞ্চিং হুটোপাটি করে। নুতনের ভিত্তি দৃঢ় হলেষ্ট স্বচ্ছন্দতার সঙ্গে সংযম আসবে। এমন লৈখিকভাষ চাই যাতে প্রচলিত সাধুভাষ আর মার্জিতজনের মৌগিকভামা উভয়েরই সদগুণ বজায় থাকে। সংস্কৃত সমাসবদ্ধ পদের দ্বার। সে বাক্যসংকোচ লাভ হয় ত৷ আমর চাই, আবার মৌখিকভাযার যে বাগ ভঙ্গী তার সহজ প্রকাশ-শক্তিও হারাতে চাঙ্গ না । চলিতভাষার লেপকর। একটু অবহিত হলেষ্ট সৰ্ব্বগ্রাঙ্গ সৰ্ব্বপ্রকাশক লৈখিকভাষ৷ প্রতিষ্ঠালাভ করবে। বল বাহুল্য, গল্পাদি লঘুসাহিত্যে পাত্রপাত্রীর যুপে সব ভাসারই স্থান আছে, মায় তোংলামি পৰ্য্যস্ত। এগন আমার প্রস্তাব সংক্ষেপে নিবেদন করি।-- ( ১ ) প্রচলিত সাধুভাষার কাঠামো অর্থাৎ অস্থয়-পদ্ধতি ব| syntax বজায় থাকুক। ইংরেজী ভঙ্গীর বেশী অল্পকরণ সাধারণে বরদাস্ত করবে না । (২) ক্রিয়াপদ ও সৰ্ব্বনামের সাধুরূপের বদলে চলিতরূপ গৃহীত হোক । বানান দেখছে, দেপলাম, দেখান হবে কি ‘দেখচে, দেখলুম, দেখানো হবে, তার মীমাংস সহজেই হতে পারবে । i (৩) অন্যান্য অ-সংস্কৃত ও সংস্কৃতঞ্জ শব্যের চলিতরূপ গৃহীত হোক। যদি অনভ্যাসের জন্য বাধা হয়, তবে